ঢাকায় শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার ফেস্ট’ নামে ফুল মেলা -২০১৬

Flower Fair

কৃষি সংবাদ ডেস্ক: রাজধানী ঢাকার ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের (কেআইবি) শুরু হয়েছে দু দিন ব্যাপি ফুল মেলা। কৃষি খামার সড়কের পাশ দিয়ে যেতেই চোখে পড়বে গোলাপে সজ্জিত তোরণ। একটু সামনে বাড়ালে ফুলের সৌরভই আপনাকে টেনে নেবে কেআইবি’র নিচ তলার মিলনায়তনে। মিলনায়তনের দরজায়ও গোলাপের অভ্যর্থনা। এরপর তো ফুলের মাঝে হারিয়ে যাওয়া। জগতের সব ক্লান্তি নিমিষেই দূর করে আপনাকে নিয়ে যাবে এক স্বপ্নিল জগতে।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় ‘’ নামে দুই দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। প্রধান অতিথির ভাষণে মাননীয় কৃষি মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ উষ্ণমন্ডলীয় দেশের  অন্তর্ভূক্ত। এখানে ফুল চাষের এক বিরাট সম্ভাবনা আছে। ফুলে সুবাস সংযুক্ত করে ফুলের  চাহিদা বৃদ্ধিতে ও বাজারজাতকরণে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আমাদের গবেষকদের এগিয়ে আসতে হবে ।’ এর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমানসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে ’ফুল চাষের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির উপদেষ্টা ড. গয়ানাথ সরকার।

এক ছাদের নিচে হরেক রকম ফুলের সমাহার নিয়ে  পশরা সাজিয়েছেন ফুল বণিকরা।  মিলছে ফুল চাষ, বাজারজাতসহ নানা বিষয়ে পরামর্শ। নানা জাতের ফুলের দেখা পেয়ে দর্শনার্থীরাও মুগ্ধ হচ্ছেন। জানছেন নিজের পছন্দের ফুল সম্পর্কে নানা তথ্য।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ফুল চাষি ও বাজারজাতকারীরা স্টলগুলো সাজিয়েছেন নানা ফুল দিয়ে। গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা, রজনীগন্ধাসহ নানা ফুলের রাজ্যে প্রবেশ করে অনেকেই পছন্দের ফুলের সঙ্গে নিজেকে ছবিতে আটকে রাখছেন।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম  জানান, ৮০’র দশকের পরই দেশে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ শুরু হয়। এরপর শুধু ফুলের বিস্তৃতির গল্প। বর্তমানে ফুলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কর্মসংস্থান। প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ১৬ হাজার কৃষক সরাসরি ফুল চাষ করছেন। বর্তমানে দেশে টাকার হিসাবে ৮০০ কোটি টাকার ফুল উৎপাদিত হয়।

ফুল চাষের মাধ্যমে ভাগ্য বদলের গল্প শোFlower Festivalনা গেলো ফুল চাষিদের মুখে। নাটোর থেকে আসা ফুল চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, গত দশ বছর ধরে তিনি ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি ১০০ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করছেন।

এক সময়ে বেকার থাকা এই ফুল চাষি বলেন, ফুল চাষ আমার সংসারের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। নিজের পাশাপাশি প্রায় দশ জনের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি।

তবে সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় ক্ষোভ ও অভিযোগ জানালেন ফুল চাষিরা। তাদের দাবি, ফুল বিক্রি করতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই বিপদে পড়তে হয়। অনেক সময় ব্যবসায়ীরা ফুল কেনার কথা বলে আর কেনেন না।

আয়োজকরা জানান, মেলায় স্টলের সংখ্যা ২০টি। বুধবার (৩০ মার্চ) রাত ৮টায় পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে ফ্যাশন শো, গোলটেবিল বৈঠক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *