মোঃ রাসেল ইসলাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি ঃ ধানের অঞ্চল হিসেবে খ্যাত দিনাজপুর জেলা। অন্যান্য জেলার তুনলানায় এই জেলায় সবচেয়ে ধান উৎপাদন বেশী হয়। কিন্তু এবার এই জেলার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ধানের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় কৃষকেরা এবার ভুট্টার আবাদ করেছে। কয়েকটি উপজেলার কৃষককের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উৎপাদন খরচের তুলনায় ধানের বাজার মূল্য কম হওয়াতে ধান চাষ করে প্রতি বছরেই লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
গত বছরে বোর ধানে যে লোকসান হয়েছে সেই লোকসানের বোঝা এখনো টানতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের। অনান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক ফলন হওয়াতে ভুট্টা চাষ করতে দেখ গিয়েছে। জেলার ১৩টি উপজেলায় সবগুলো উপজেলায় ভুট্টার আবাদ দিগুণ পরিমাণে দেখা যাচ্ছে। এদিকে কিছুদিন ধরে প্রচন্ডরোদে কৃষি জমিতে মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। বৃষ্টি না হওয়াকে কৃষেকরা কিছুটা বিপাকে পড়েছে। প্রথমতঃ কৃষিপণ্যের দাম বেশি আবার ঠিকমত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় কৃষকেরা কৃষি জমিতে ঠিকমত সেচ দিতে পারছে না। জমিতে পড়ে থাকা (ভুট্টা, ধান, আখ, শাক্ সবজি) সহ ইত্যাদি ফসল পানির অভাবে পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে কৃষকেরা। দিনাজপুর বিরল উপজেলার বেশির ভাগ ইউনিয়নে ১৫০/১৬০ ফিট বোর্ডিং করেও পানি তুলতে পারছেন না কৃষকেরা। এই সব উপজেলার খুব কঠিনভাবে চাষাবাদ করতে হয়। তবুও বোরো ধানের চেয়ে ভুট্টা লাভ জনক হওয়ার কারণে ধানের আবাদ কমে যাচ্ছে।
সরজমিনে বিরল উপজেলার ৬ নং ভান্ডারা ইউনিয়নে মৌচুষা গ্রামের কৃষক মোঃ শামসুদ্দিন এ প্রতিনিধিকে জানান, তার ৩ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করছেন। তিনি বলেন কম পরিশ্রম ও অল্প খরচে ভুট্টা চাষে বেশী লাভ হওয়ায় এবার তিনি জমিতে ধান চাষ করেননি।
জেলার কৃষি উপ পরিচালকের কার্যালয় সূত্র হতে জানা গেছে, এবার ১৩টি উপজেলার ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৫৭২৫ হেক্টর ধরা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ৫০৪৬০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৯৮৪৩৪ মে. টন।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদ ড. সাইফুর রহমান তিনি বলেন, এ রকম যদি কৃষকেরা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ভুট্টা চাষে ঝুকে পড়ে তাহলে পরবর্তীতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হবে। তাই সরকারকে কৃষকের এই দুরবস্থা রোধ কল্পে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। যাতে করে কৃষকেরা ধান চাষে আগ্রহী হয়।