Site icon

শেরপুরের নকলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি ঃ ১০কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

মোঃ মোশারফ হোসেন, শেরপুর :

শেরপুরের নকলায় ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বোরো আবাদের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। গত কালের দুদফায় ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে উপজেলার নকলা, গনপদ্দী ও উরফা ইউনিয়নের সহস্রাধিক কৃষকের কমপক্ষে ২ হাজার ৫০০ একর জমির বোরো আবাদ শিলা বৃষ্টির কবলে পড়ে। তার মধ্যে ১ হাজার একর জমির ধান ও ১০০ একর জমির সবজি ক্ষেতের সব নষ্ট হয়ে যায়। ১৭ এপ্রিল সোমবার সরেজমিনে দেখাযায়, উরফা ইউনিয়নের কুড়েরকান্দা, হাসনখিলা, পিছলাকুড়ি ও নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা, ডাকাতিয়াকান্দা, শিববাড়ি, নামাপাড়া এবং গনপদ্দী ইউনিয়নের বারইকান্দি এলাকার ধান ও বিভিন্ন সবজি ক্ষেত শিলা বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। ওইসব ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষেতে গরু মহিষ চড়তে দেখা যায়। তাছাড়া নিচু এলাকার অনেক বোরো ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝড়ে উঁচু এলাকায় ধান গাছ পড়ে যাওয়ায় ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বোরো ধান ও সবজির ক্ষতি ছাড়া ৪/৫টি কাচা ঘর, ফলজ গাছ, কিছু কাষ্ঠল বাগান নষ্ট হয়েছে। গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে কয়েকটি এলাকা এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

ডাকাতিয়াকান্দার কৃষক আশরাফুল, ফজলু, বিল্লাল, রফিক, দুলাল, নছু, সুরহাব, আশরাব, ছামিদুল, কালু, জলিল; গড়ের গাঁও এলাকার বর্গা চাষী আজগর আলী, বাড়ইকান্দির লিটন সহ শত শত বর্গা চাষি ও লীজ নেওয়া ক্ষুদ্র কৃষকরা কাঁদতে কাঁদতে বলেন ‘আমরা অহনা কি করমু, আংগরে সব শেষ হইয়া গেছে। আমরা তো ঋন কইরা বোরো ক্ষেত লাগাইছিলাম। অহনা আমরা কি খামু, আর ঋন দিমু কি দিয়া?’ এবিষয়ে উরফা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল হক হীরা বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ অধিকাংশ কৃষক ঋন গ্রস্থ। সরকারি ভাবে তাদের সহযোগিতা না করলে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে। পাশাপাশি ঋনের বুঝা টেনে বসত ভিটা হারাতে হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, এ বছর উপজেলায় ৩৩ হাজার ৭৫০ একর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে শিলা বৃষ্টিতে ৪০০ একর জমির ধান সম্পূর্ণ ভাবে এবং ৬০০ একর জমির ধান আংশিক নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া ১০০ একর জমির সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়। এতে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন ধান যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা এবং সবজি বাবদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা ক্ষতি হয় কৃষকদের। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ ওই ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকাসহ বাউসা, পৌর এলাকার কামার পট্টি, ভূরদী ও বানেশ্বরদী এলাকায় ঝড়ে গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলছে। তারা জানান ১৭ এপ্রিল রবিবারের মধ্যে সকল লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া শেষ হবে।

 

 

Exit mobile version