প্রাণি মোটাতাজাকরণে গ্রোথ প্রোমটর ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে- বাকৃবি কর্মশালায় দাবী

প্রাণি মোটাতাজাকরণে গ্রোথ প্রোমটর

মো.আবদুল আউয়াল মিয়া, বাকৃবি প্রতিনিধিঃ

প্রাণি মোটাতাজাকরণে গ্রোথ প্রোমটর
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) রবিবার প্রাণিসম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনটি প্রকল্পের উদ্ভাবন করা হয়।  প্রাণিসম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধিতে খাবারে খাদ্যের গুণগত মান বাড়ানো, পশুখাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের উচ্চমান গুণগত পশুখাদ্যদ্রব্য উৎপন্ন করে অতিরিক্ত মূল্যসংযোজন করা এবং দ্রুত বর্ধনশীল, কমসময়ে মোটা হওয়া ও রোগ প্রতিরোধ সম্পন্ন দেশীয় ভেড়ার জাত উদ্ভাবন বিষয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০ টায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়ানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের উদ্যোগে ওই কর্মশালা আয়োজন করা হয়।

‘গবাদিপশু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে দেশে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার করা হয়। এন্টিবায়োটিক গ্রোথপ্রোমটরের ব্যবহার আশির দশকে শুরু করা হয়। এটি পশুর মাংস বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এগুলো পশুর দেহের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি মানুষের দেহের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। এইসব পশুর মাংস ও দুধ খেলে মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ কমে যায়। এমনকি মানুষের দেহে রোগও হতে পারে। এর ফলে হতে পারে হার্ট ডিজিস, ডায়াবেটিস ও অটিজমসহ বিভিন্ন ভয়াবহ রোগ। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে পশুখাদ্যে এসব ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ উন্নত বিশ্বে প্রায় তিন দশক ধরে গ্রোথপ্রোমেটরের ব্যবহারের পর এর ক্ষতির দিক অনুধাবন করে ২০০৬ এর ১ জানুয়ারি থেকে পশুখাদ্যে এর ব্যবহার বন্ধ করে। তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা গ্রোথপ্রোমেটরের বিকল্প পশুখাদ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গবেষণায় দেখা যায়, ঔষধি উদ্ভিদ বা প্রাকৃতিক ভেষজ হতে পারে বিকল্প পশুখাদ্য। যদিও ঔষধি উদ্ভিদের ব্যবহার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাসে খুব পুরনো। ঔষধি উদ্ভিদ এরই মধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গ্রিন গ্রোথপ্রোমেটর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের দেশেও বিভিন্ন ঔষধি উদ্ভিদ রয়েছে। যেমন সজিনা, পেঁয়াজ, গার্লিক ইত্যাদি। কর্মশালায় প্রফেসর ড.মোহাম্মদ আল মামুন এইসব কথা বলেন। এতে আরও দুটি প্রকল্পের উদ্ভাবন করা হয়। একটি প্রকল্প হচ্ছে পশুখাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের দ্রব্য উৎপন্ন করে অতিরিক্ত মূল্যসংযোজন করা, দ্রব্যর চাহিদার পাশাপাশি প্রচার বাড়ানো। কমদামে উচ্চমান গুণগত পশুখাদ্য বাজারজাত করা।

অপর প্রকল্পটি হচ্ছে দ্রুত বর্ধনশীল, কমসময়ে মোটা হওয়া ও রোগ প্রতিরোধ সম্পন্ন দেশীয় ভেড়ার জাত উদ্ভাবন করা।
প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহি উদ্দিন প্রকল্পের বিষয়ে মুক্ত আলোচনা করেন। এতে কৃষক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও ছাত্র অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক প্রফেসর ড. এম.এ.ম. ইয়াহিয়া খন্দকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. আলী আকরব, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপ- উপাচার্য প্রফেসর মো.জসিমউদ্দিন খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রোগাম পরিচালক ড. কাজী কমরউদ্দিন, ডি.এস.এলের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. খান শহিদুল হক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শতাধিক শিক্ষক, গবেষক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *