কৃষিসংবাদ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬-৩০ জুন ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষ ও ১৬-১৮ জুন জাতীয় ফল প্রদর্শনী উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“আগামী ১৬-৩০ জুন ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষ এবং ১৬-১৮ জুন জাতীয় ফল প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষের এবারের প্রতিপাদ্য ‘অর্থ পুষ্টি স্বাস্থ্য চান, দেশি ফল বেশি খান’ যথাযথ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, মেধার বিকাশ, অক্সিজেন ও মূল্যবান কাঠ সরবরাহ, দারিদ্র্য বিমোচন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ নৈসর্গিক শোভা বর্ধনে ফল ও ফলদ বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম।
বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু ফল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। অনায়াসেই আমাদের উর্বর মাটিতে নানারকম ফলের গাছ জন্মে। আমাদের রয়েছে ১৩০টির বেশি ঐতিহ্যবাহী ফল। এসকল দেশি ফলে ভিটামিন ও খনিজ লবনের পরিমাণ বিদেশি ফলের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়, যা থেকে আমরা সহজেই দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারি। দেশের উত্তরাঞ্চলের মত অন্যান্য অঞ্চলেও আম, লিচু ও অন্যান্য ফল চাষ করে আমরা অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি।
বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই মাঝে মাঝে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। সেজন্য আমাদের বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন অপ্রচলিত ফল আবাদের পাশাপাশি নারিকেল, তাল, খেজুর, কাঁঠাল এসবের আবাদ আরো বাড়াতে হবে। পরিবর্তিত জলবায়ুকে বিবেচনায় নিয়ে অঞ্চল উপযোগী স্বল্পমেয়াদি, অধিক ফলনশীল ও লাগসই দেশীয় ফলের জাত উদ্ভাবনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাই।
সারাবছর পর্যাপ্ত ফল উৎপাদন করার জন্য গ্রামাঞ্চলে বসতবাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার ধারে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় ও শহরাঞ্চলে বাসভবনের ছাদে যতটা সম্ভব ফলদ বৃক্ষরোপণ করা যেতে পারে। ঐতিহ্যবাহী দেশি ফল ডেউয়া, চালতা, কাউ, করমচা, জাম, গোলাপজাম, ক্ষুদেজাম, তেঁতুল, বরই, লটকন, বিলিম্বি, গাব ইত্যাদি যাতে হারিয়ে না যায় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার পাশাপাশি স্ট্রবেরি, রাম্বুটান, ড্রাগনফল, থাই জামরুল, এবাকাডো, মিষ্টি তেঁতুল ইত্যাদি নতুন ফলের আবাদ বৃদ্ধির জন্যও সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
আমি আশা করি, ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী আমাদের দেশি ফল চাষে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করবে।
আমি ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষ ২০১৬ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনীর সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয়বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”