বাগান তৈরীর কারিগর
মো. মোশারফ হোসেন, শেরপুর প্রতিনিধি:
বাগান তৈরীর কারিগর ঃশেরপুরের নকলা উপজেলার বিভিন্ন ময়লার ভাগাড় পরিষ্কার করার পরে, অন্তত একটি স্থানে ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের বাগান তৈরী করে সবার নজর কেড়েছে। শেরপুরে বিডি ক্লিন এর পরামর্শে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিশেষ অভিযান ও ফুল, ফলের বাগান তৈরির অংশ হিসেবে সদ্য গঠিত নকলা বিডি ক্লিনের সদস্যরা শুক্রবার রাতে এই কার্যক্রম করে। তারা ময়লার ভাগার পরিষ্কার করে ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের বাগান তৈরী করার জাদুকরে পরিণত হয়েছেন। বিডি ক্লিন এরিমধ্যে শেরপুরের বিভিন্ন স্থানের ময়লা পরিষ্কার করে, সেখানে বাগান তৈরী করে সর্বমহলের সুদৃষ্টি ও সুনাম কুড়িয়ে আসছেন।
এর আগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা সমন্বয়ক মো. আল আমিন রাজুর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে নকলা পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন বক্তব্য রাখেন। জেলা সহ সমন্বয়ক মেহেদী হাসান শামীম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শেরপুরের বিডি ক্লিনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন হাজারী, নকলা বিডি ক্লিনের অন্যতম শুভাকাঙ্খী শিক্ষক মো. মোশারফ হোসাইন, সাংবাদিক মোহাম্মদ হযরত আলী ও জাহাঙ্গীর হোসেন; জেলা টিমের উপ-সমন্বয়ক লজিস্টিক মো. রইস উদ্দিন হৃদয়, দশকাহনিয়া ইউনিটের মনিটর আমির হামজা, জেলা টিমের সদস্য আপন মিয়া, নকলা বিডি ক্লিনের সদস্য রাব্বিনূর রহমান জুয়েল, তাসনিমুল হাসান নির্ভীক ও মো. টুটুল মিয়া প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে উপস্থিতিদের সর্বসম্মতিক্রমে নকলা বিডি ক্লিনের সমন্বয়ক হিসেবে আব্দুল্লাহ আল আমিন, সহ-সমন্বয়ক আসাদুজ্জামান সৌরভ, উপ-সমন্বয়ক মিডিয়া রাজিব হাসান, উপ-সমন্বয়ক লজিস্টিক নাসির উদ্দিনকে এবং উপদেষ্টা হিসেবে মো. মোশারফ হোসেনকে নির্বাচিত করা হয়। এসময় জেলা লজিস্টিক মনিটর সজিব আহমেদ, পুলিশ লাইন ইউনিট মনিটর মো. আশরাফুল আলম, মৃগী ইউনিটের মনিটর জুয়েল রানা, জেলা লজিস্টি মডারেটর লাবিব হাসান স্বপন, বিভিন্ন দপ্তরে কর্মজীবী, নকলায় কর্মরত সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্বোসেবী সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার শেষ বিকেলে উপজেলা পরিষদের সামনে বিডি ক্লিন নকলা উপজেলা টিম ও শেরপুর বিডি ক্লিনের সদস্যসহ উপস্থিত সকলকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নকলা পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন বিডি ক্লিনের নির্ধারিত শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ বাক্য পাঠ শেষে সন্ধ্যায় নকলা-ঢাকা মহামড়কের পাশে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অফিসরে সামনে ভ্রাম্যমান ডাস্টবিন ও তার আশপাশ পরিষ্কার করে সেখানে বিভিন্ন ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের বাগান তৈরী করে দেওয়া হয়। তাছাড়া ঝুমুর সিনেমা হলচত্তরে দোকানের সামনে পড়ে থাকা ময়লা গুলো বিভিন্ন কর্মজীবী, সাংবাদিক, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্বোসেবী সংগঠনের সদস্যরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দিয়ে সবার নজর কেড়েছেন। এই কার্যক্রম চলে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। গবাদি পশুর হাত থেকে বাগানের গাছকে রক্ষা করতে সময় স্বল্পতার জন্য রাতে ভেড়া না দিতে পারলেও, সকালে বিডি ক্লিনের নবগঠিত নকলা উপজেলা টিম বাগানের চারপাশেষ ভেড়া দিয়েছেন।
আশার বিষয় হলো বাগানের যে স্থানে আগে যারা ময়লা ফেলেতেন, আজ শনিবার সকালে তাদেকেই ওই স্থানে তৈরী করা বাগানের গাছের গোড়ায় পানি দিতে দেখা গেছে। সব পেশা শ্রেণীর জনগন তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এতে সুষ্পষ্ট যে, ভালো কাজ শুরু করে দিলে, শেষ করার দায়িত্ব সবাই নিতে আগ্রহী। তাই আসুন আমরা ভালো কাজে মনোনিবেশ করি এবং অন্যদেরকে ভালো কাজে উৎসাহিত করি। তবেই আপনার আমার দেশ হবে বিশ্বের অন্যান্য উন্নত রাষ্ট্রের মত। আর আমরা হব সুন্দর সুশৃঙ্খল রাষ্ট্রের গর্বিত নাগরিক, এমনটাই বলছেন বিডি ক্লিনের সকল সদস্য ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা। তারা জানান, আমরা সবাই নিজের অবস্থান থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে ২০২১ সালের আগে পরিচ্ছন্ন দেশ ঘোষণা করা সম্ভব হবে। পরিচ্ছন্নতার এই বার্তা দেশব্যাপী পৌঁছে দিতে তাদের সাথে যুক্ত যেকেউ যুক্ত হতে পারেন বলে জানান বিডি ক্লিন কর্তৃপক্ষ। তাদের আহবান- “যে কোন বয়সের যেকেউ স্বেচ্ছায় আসুন বিডি ক্লিন এর গর্বিত সদস্য হোন। আমরা সবাই দেশের নাগরিক, তাই দেশটাকে পরিষ্কার রাখার দায়িত্বটাও আপনার, আমার, সবার। আমরাই পারব দেশকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে ও রাখতে।” এমনটাই আশা ব্যক্ত করেন তারা।