Site icon

সহজে কুরবানীর পশু ক্রয় ও আমাদের করণীয়

 

মুনিরুজ্জামান

কুরবানীর পশু কিনতে যে বিষয় গুলো সাধারাণত আমাদের  নজরে থাকে –

পশুটির গায়ের রং– আমরা সাধারণত লাল, খয়রি, কালো কিংবা লাল কালো মিশ্রিত প্রাণী বেশি পছন্দ করি, তাই অন্যান্য রং এর তুলোনাই এই রঙের পশুর দাম দেড়- দু হাজার টাকা বেশি হয়।

শারীরিক কাঠামোঃ শারীরিক কাঠামো হবে শক্ত সামর্থ, হাড়ে চোখে পড়ার মত মাংস থাকবে।

স্বাস্থ্যঃ আমরা অবশ্যি স্বাস্থবান পশুটি কিনব কিন্ত অতিরিক্ত স্বাস্থবান কেনা মটেও উচিত নয়। অতিরিক্ত ইউরিয়া বা ক্ষতিকর হরমনাল ঔষধ ব্যবহার করার ইতিহাস রয়েছে।

মাংসে পরিমাণ; আর নিজ নিজ সামর্থ প্রভৃতি। আর সব থেকে যে বিষয়টা গুরুত্ব দেয়া উচিত তা হচ্ছে পশুটির  সুস্থতা কেননা অসুস্থ পশু কুরবানীর জন্য বিবেচ্য নয়।

সুস্থ পশু বৈশিষ্টঃ

আমরা সাধারণত খামার বা পরিচতি পশু চাষী অথবা বাজার থেকে পশু কিনে থাকি। খামার বা পরিচিত পশুপালনকারীদের নিকট থেকে কিনলে সুবিধে হয়। বিশেষ করে যে সব খামারের খামারিরা আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পশু পালন করেন নিওয়মিত টিকা প্রদান করে থাকেন তাদের কাছথেকে নির্ভয়ে পশু কেনা যায়। ঝামেলা হয় হাটে গিয়ে কেনাতে। তবে নিম্নে উল্লেখিত বিষয় গুলো খেয়াল করলে সহজে সব ঝামেলা সমাধান করতে পারব ইনশাআল্লাহ্‌।

প্রস্তুতি- হাটে যাবার সময় পশু সম্বন্ধে ভালো ধারণা রাখে এরকম কাওকে সাথে নেয়া ভালো। আর পোকেটে দূরত্ব মাপার ফিতা নিয়ে নিন। যা গরুর ওজন জানতে সহায়তা করবে।

পশুর দাম ঠিক করাঃ পশুর হাটে সাধারণত কি পরিমাণ মাংস এই পশু থেকে পাওয়া যাবে তার উপর নির্ভর করে দাম ঠিক করা হয়।  কসাইরা সাধারণত পশু দেখে আন্দাজ করেই সঠিক অথবা খুব কাছাকাছি ওজনের মাংসের পরিমাণ বলতে পারে। এটা তাদের অভিজ্ঞতার ফসল।  কিন্তু আমরা যেহেতু বছরে একবার পশু কিনি  আর মাঝে মাঝে বিভিন্ন অনূষ্ঠান করে থাকি এজন্য আমরা আন্দাজ ঠিকভাবে করতে পারি না। তাই আমাদের বিজ্ঞানের সাহায্য নিতে হবে।

যেভাবে জীবন্ত পশুর ওজন নির্ণয় করা যায়ঃ

এ বাজারে যা নিতে হবে তা হলো শুধু একটা দূরত্ব বা কাপড় মাপার ফিতা আর সাথে  মোবাইলে ক্যালকুলেটরতো থাকছেই।

জীবন্ত পশুর ওজন=

দৈর্ঘ্য (ইঞ্চি) X বুকের বেড় (ইঞ্চি)2

————————————— = কেজি

৩০০ X ২.২

আর সম্পূর্ণ পশুর ওজন থেকে ৩৫-৪৫% বাদ দিলে মোট সম্ভাব্য মাংসের পরিমাণ পাওয়া যাবে এটি জাত অনুসারে পরিবর্তন হয়ে থাকে। আপনি নাড়িভুঁড়ি ইত্যাদির ওজন আন্দাজ করে বাদ দিয়ে মোট মাংসের পরিমাণ নির্ণয় করতে পারেন।

এবার বাজারের দামের সাথে মিল রেখে দর কষাকষি করে কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের পশুটি।

উল্লেখ্য যে কুরবানির জন্য গাভি গরু বা ছাগী যথাসম্ভব কেনা থেকে বিরত থাকায় ভালো,  এতে করে পরে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না । কেননা কিছু অসাধু মানুষ আছে যারা কুরবানির বাজারে জেনে না জেনে গর্ভবতী পশু বাজারে আনেন।

পশু পরিবহনঃ পশু কেনা হলে বাসায় ঠিক মত পশুটিকে আনা একটা বড় দায়িত্ব। হাট থেকে আপনার বাসা বা বাড়ি খুব দূরে হলে কুরবানির পশুটিকে ট্রাক বা পিকআপ এ নিয়ে আসুন। আর বাসা কাছে হলে ধীরে ধীরে হাঁটাতে হাঁটাতে নিয়ে আসুন। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাড়াহুড়ো করে বা দৌড় দিয়ে শারীরিক শক্তি ক্ষয় করার কোন প্রয়োজন নেই। কেননা কুরবানির পশুগুলো সাধারণত অনেক দূর দূরান্ত থেকে হাটে আসে, অনেক ক্লান্ত থাকে।

লেখক পরিচিতিঃশিক্ষার্থী ও সাংবাদিক

হাবিপ্রবি,দিনাজপুর Email- munir_vet@yahoo.com


কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম 

Exit mobile version