Site icon

সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসাবে গড়ে তোলা হবে — কৃষি সচিব

 সাইকে কৃষি সচিব

 

ড নিয়াজ পাশা, ঢাকা ।

কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন আব্দুল্লাহ বলেছেন, কৃষি শুধু আমাদের খাদ্য, পুষ্টিই সরবরাহ করে না ; কৃষি শিল্পের কাঁচা মাল যোগান দেয় এবং গ্রামীণ জনপদের সবচেয়ে বড় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও বটে । কৃষি সচিব গত ১৯ এপ্রিল, ২০১৬ সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টার (SAARC Agriculture Centre)ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (FAO) কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত দুই দিন ব্যাপী.Inception meeting on SAARC-FAO TCP “ Strengthening the capacity of SAARC in the development, coordination and monitoring of a regional food security and nutrition framework, strategies and programmes” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন ।

সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের কনফারেন্স হলে দুইদিন ব্যাপী এ পরামর্শ সভায় বিএআরসি’র (BARC) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড আবুল কালাম আযাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মাণিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সার্ক ও বিমস্টেক (SAARC & BIMSTEC) এর মহা পরিচালক এস এম আনিসুল হক; সার্কের পরিচালক এমজেএইচ জাবেদ, এবং Dr. Sumiter Singh Broca, Lead Technical Officer, FAO-RAP, Bangkok । অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের পরিচালক ড এস এম বখতিয়ার । সভায় সার্কভুক্ত দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, ভারত, পাকিস্থান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকার প্রতিনিধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, কৃষি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল্য়ের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং দেশের কৃষি গবেষনা প্রতিষ্ঠান সমূহের ৪০ জন বিজ্ঞানী ও নীতি নির্ধারক অংশ গ্রহণ করেন ।

কৃষি সচিব বলেন, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার ১.৭২ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে ১৭৬.২ মিলিয়ন মানুষ এখনো অপুষ্টিতে ভোগছে । এ অঞ্চলের কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টির বিষয়গুলো সমাধানে সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের উদ্যোগে স্থাপিত ধান, সব্জী, তেল বীজ ও ডাল ফসলের আঞ্চলিক উপযোগিতা (Adaptive trial network); উন্নত মহিষের জার্ম্পলাজম (Sharing of progeny tested semen of Nilli-Ravi Buffalo) প্রদান ; সমসাময়িক বিষয়ে পরামর্শ সভা করা (Regional consultations on emerging issues)  এবং বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজনের ভূয়শী প্রশংসা করেন ।

মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন আব্দুল্লাহ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা এবং সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের সময়ীপযোগী এবং টেকসই এই উদ্যোগ সার্ক অঞ্চলের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি; কৃষি ও পুষ্টি ভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক  (framework) তৈরী ; জাতীয় পর্যায়ে কর্ম পরিকল্পণা এবং কার্যক্রম সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে । সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত সার্ক কৃষি মন্ত্রীদের সভায় মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উত্তাপিত সার্ক বীজ ও খাদ্য ব্যাংক (Seed Bank & Food Bank)প্রতিষ্টা, সুলভ মূল্যে বীজ প্রাপ্তি, সুষ্টু পানি ব্যবস্থাপণা, জৈব কৃষি, বাজার ব্যবস্থাপনা এবং কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণের বিষয়টি সচিব উল্লেখ করেন । এই সভা প্রকল্প প্রণয়ণ, বাস্তবায়ন এবং মূল্যায়ন দক্ষ মানব সম্পদ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন ।

মানণীয় সচিব ১২ দফা ‘ঢাকা ঘোষণা’র কথা উল্লেখ করে বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে কৃষির প্রতি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে । সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের দক্ষতা, সক্ষ্মতা, অভিজ্ঞতা অর্জনে এবং Centre of Excellence in agriculture research and development হিসাবে গড়ে তুলতে সর্বোত সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকারের ব্যক্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান ।

অনুষ্ঠানে সম্মাণিত অতিথি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (সার্ক ও বিমস্টেক) মহা পরিচালক এস এম আনিসুল হক বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের খাদ্য উতপাদনের দিকেও নজর দিতে হবে । হাতে হাত রেখে সম্মিলিতভাবে আমাদের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে । অংশ গ্রহণকারী গণ তাঁদের সর্বোচ্চ মেধা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পণা প্রণয়নে আত্ন-নিয়োগ করবেন বলেও তিনি আশাবাদী । এস এম আনিসুল হক বলেন, এই কর্মশালা, এই অঞ্চলের খাদ্য উতপাদনের প্রধান প্রধান বিষয় গুলো চিহ্নিত করে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে । এ বিষয়ে তিনি সকল প্রকার সহযোগিতারও আশ্বাস প্রদান করেন ।

সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের পরিচালক ড এস এম বখতিয়ার কর্মশালায় আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টার বিভিন্ন ফসল, পশু সম্পদ, মতস্য, প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়াদি নিয়ে কাজ করে । এই অঞ্চলের চাহিদার আলোকে সমস্যা এবং সম্ভাবণা ভিত্তিক কার্যক্রম যেমন পরামর্শ সভা, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শণ, বিভিন্ন মূল্যবান বিষয় ভিত্তিক প্রকাশণা এবং বিভিন্ন ফসলের আঞ্চলিক উপযোগিতা পরীক্ষণ করে থাকে । সার্ক এবং সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের পক্ষ্যে একা কৃষির মত চ্যালেঞ্জিং বিষয় মোকাবেলা কষ্টকর । এ ক্ষেত্রে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা এগিয়ে আসায় তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান । এই কর্মশালাটি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং ধ্যান ধারণার মিলন স্থান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন । #

Exit mobile version