আজওয়া খেজুরের উপকারিতা
মোহাম্মদ এনামুল হক
আজওয়া খেজুরের উপকারিতা ঃ খেজুর বিশ্বব্যাপী পরিচিত একটি ফল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তথা মরুভূমিতে খেজুরের ফলন বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে সৌদি আরব ও ইরাকের খেজুর বিশ্ববিখ্যাত। বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। যেমন- আজওয়া, আমবার, বরণী, সুগায়ি, মরিয়ম, শাকাবী, জাবী ইত্যাদি। এসব খেজুরের স্বাদ, আকৃতি ও বর্ণে রয়েছে ভিন্নতা।
পুষ্টির দিক থেকেও খেজুরে রয়েছে সবধরনের প্রয়োজনীয় খাদ্যোপাদান। পুষ্টিবিদদের মতে, খেজুরে রয়েছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালরি, সোডিয়াম, আয়রণসহ আরো অনেক খাদ্যোপাদান। খেজুরে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা।
খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে দামী ও সর্বোত্তম খেজুর হলো আজওয়া খেজুর। মদীনায় এ খেজুরের ফলন হয় বেশি। আজওয়া খেজুর কালো ও মাঝারি আকৃতির হয়ে থাকে। ভালোমানের ১ কেজি আজওয়া খেজুরের দাম ২০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আজওয়া খেজুরের উপকারিতাঃ
আজওয়া খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন- যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন বিষ ও যাদু তার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। -বুখারী
হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, নিশ্চয়ই আলিয়ার (মদীনার গ্রাম) আজওয়া খেজুর রোগ নিরাময়কারী এবং প্রাতঃকালীন প্রতিষেধক। -মুসলিম।
আজওয়া খেজুর সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সঃ) আরো বলেন, আজওয়া জান্নাতের ফল, এর মধ্যে বিষের নিরাময় রয়েছে। -তিরমিজি
হযরত সায়ীদ (রাঃ) বলেন, একদা আমি মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে দেখতে এলেন এবং আমার বুকের উপর তাঁর হাত রাখলেন। তাঁর পবিত্র হাতের শীতলতা আমার হৃদয় পর্যন্ত পৌছে গিয়েছিলো। তিনি আমাকে বললেন তুমি হৃদয়ে কষ্ট অনুভব করছো। তুমি হারেস ইবনে কালদাহ এর কাছে যাও, সে একজন চিকিৎক, সে যেনো মদীনার সাতটি আজওয়া খেজুর নিয়ে বীজসহ চূর্ণ করে তোমার মুখে ঢেলে দেয়। -আবুদাউদ
উপরোল্লিখিত হাদীস থেকে আমরা আজওয়া খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারি।
তবে আজওয়া খেজুর ব্যতিত অন্যান্য খেজুরেও উপকারিতা রয়েছে বলে বিজ্ঞ আলেম ও পুষ্টিবিদগণ জানিয়েছেন। মাহে রমজানে খেজুর দিয়ে ইফতার করার জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তি খেজুর পাবে সে যেন তা দিয়ে ইফতার করে। আর যদি না পায়, তাহলে পানি দিয়ে ইফতার করবে কেননা তা অধিক পরিষ্কারক ও পবিত্র। -আবু দাউদ ও তিরমিজি
সারাদিন রোজা থাকার ফলে আমাদের শরীরের যে খাদ্য ঘাটতি দেখা যায় খেজুর দ্বারা তা অতিসহজে পূরণ হয়ে যায়। এই জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) খেজুর ও পানির কথা বলেছেন। এবারের আসন্ন রমজানে আমরা যেনো খেজুর দিয়ে ইফতার করতে পারি আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন এবং করোনা ও অন্যান্য রোগ থেকে আমাদের হেফাজত করুন।
লেখকঃ কবি,সাহিত্যিক ও প্রাবান্ধিক