Site icon

ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র ( UMS): গরু মোটাতাজা করার জন্য একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এবং লাভজনক প্রযুক্তি

ইউরিয়া মোলাসেস

 

শাহ এমরানঃ স্বপ্ন ডেইরী এন্ড ফিসারিজ

#ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র ( UMS): গরু মোটাতাজা করার জন্য একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এবং লাভজনক পদ্ধতি। সামনে কোরবানী আসছে। সবাই গরুকে মোটাতাজা করার কাজে ব্যস্ত। আমরা কিছু খামারী ভাইরা আছি যারা গরুকে কোনপ্রকার ক্ষতিকর উপাদান না দিয়ে পুরোপুরি অর্গানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছি। আমার দেখামতে যারা খামারী নিজেরা ৬-১২ মাস ধরে গরু মোটাতাজা করছে, এদের মধ্যে কেউই গরুকে ক্ষতিকর হরমোন বা উপাদান দিয়ে মোটাতাজা করেনা।

তাহলে কারা গরুকে ক্ষতিকর হরমোন দিচ্ছে অল্প সময়ে মোটাতাজা করার জন্য? এরা হচ্ছে বেশীরভাগই পাইকারী ব্যাপারী বা বিক্রেতারা। যারা গ্রামে ঘুরে ঘুরে আমাদের সরাসরি খামার থেকে গরু কিনে আনে কোরবানীর অল্পদিন আগে। এরপর নানান রকম ক্ষতিকর হরমোন দিয়ে অল্প দিনেই মোটাতাজা করে কোরবানীর হাটে নিয়ে আসছে। তাই, কোরবানীর আগে সরাসরি খামার থেকে গরু কেনা সব থেকে উত্তম। গরুকে ইউরিয়া ছাড়াও ভালভাবে মোটাতাজা করা যায়। আমি করছি অল্প করে এ বছর, ফলাফল বেশ ভালো। তবে অনেক ভাইরা আছেন যারা ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র করে খাওয়াতে চায় বা খাওয়াচ্ছেন। এটি খুব লাভজনক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিটি আবিষ্কার করে বিএল আর আই ১৯৯২ সনে। একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় খড়- ইউরিয়া- চিটাগুড় (৮২:৩:১৫) দিলে অল্প বেশ ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এটি বিএল আর আই কতৃক গ্রহনযোগ্য।

বানানোর পদ্ধতিঃ কি করে বানাবেন UMS বা ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র: শুকনো খড়কে ছোট ছোট করে কেটে মেঝেতে বিছিয়ে দিন। এরপর ইউরিয়া এবং মোলাসেস বা চিটাগুড় একসাথে মিশ্রিত পানি খড়ের উপর ছিটিয়ে দিন, সাথে সাথে খড়কে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দিতে হবে যেন দ্রবন শুষে নেয়। এভাবে স্তরে স্তরে খড় সাজাতে হবে এবং সমপরিমান ইউরিয়া মোলাসেস মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে এই খড় কোনভাবেই ৩ দিনের বেশী রাখা যাবেনা এবং প্রথেমেই বেশী পরিমান UMS দিলে গরুর অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ১২ মাস বয়সের উপরের গরুকে এই UMS দিতে হবে। বিভিন্ন উপাদানের আনুপাতিক হার: ১) খড়: ১০ কেজি, পানি: ৫-৭ লিটার, চিটাগুড় ২.১০ -২.৪০ কেজি, ইউরিয়া ০.৩০ কেজি। ২) খড় ৫০ কেজি, পানি ২৫-৩৫ লিটার, চিটাগুড় ১০.৫০-১২ কেজি, ইউরিয়া ১.৫০ কেজি।

#সাবধানতা: এই নির্দিষ্ট মাত্রায় খড়- ইউরিয়া- চিটাগুড় (৮২:৩:১৫) পরিমান যদি কম বেশী হয় তাহলে কোনভাবেই কাক্ষিত ফল পাওয়া যাবেনা এবং ঝুকিপুর্ন অনেক। তাই খুব জেনে বুঝে ভেবে চিন্তে ধীরে ধীরে কাজ করতে হবে। এই অনুপাত সঠিকভাবে ব্যবহার করা খুবই গুরুত্তপুর্ন। বিএল আর আই এর এক গবেষনায় দেখা গেছে, ৩০০ কিলো ওজনের বাড়ন্ত ষাড়কে যত পরিমান খেতে পারে ইউএমএস পাশাপাশি দৈহিক ওজনের ০.০৮-১.০ ভাগ দানাদার খাবার দিয়ে দৈনিক ৭০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি পায়। একই ভাবে দুধের গাভীর ক্ষেত্রেও দৈনিক ১.৫০ কেজি দানাদার খাবার আগের থেকে কম দিয়েও ১.০০ লিটার দুধ বেশী পাওয়া গেছে। এই প্রযুক্তিটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এবং লাভজনক।

আরো খবর পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম https://web.facebook.com/krishisongbad/

Exit mobile version