# বকুল হাসান খাঁন #
বৃষ্টি নির্ভর উফশী আউশ ধানের বীজ বপন : বৃষ্টি নির্ভর উফশী আউশ ধানের বীজ বপনের এখন উপযুক্ত সময়। তাই জমি ৩/৪ চাষ দিয়ে এবং আলু ও গম কাটার পর জমি চাষ দিয়ে তাতে উফশী আউশ ধানের বীজ বপন করা যাবে। বীজ ছিটিয়ে, সারিতে এবং ডিবলিং পদ্ধতিতে বপন করা যেতে পারে। ডিবলিং পদ্ধতিতে বীজ বপনে বিঘা প্রতি ৫/৬ কেজি, সারিতে ৭/৮ কেজি এবং ছিটিয়ে বপন করলে ১০/১২ কেজি বীজের প্রয়োজন হবে। বিএডিসি বীজ বিক্রয় কেন্দ্র, বীজ ডিলার এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের চাষী পর্যায়ে বীজ উৎপাদন প্রকল্পের নির্বাচিত চাষীর কাছ থেকে অথবা ধান গবেষণা কেন্দ্র থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি কেজি বীজের সরকারি নির্ধারিত মূল্য ১৫/১৬ টাকা। বিআর-২০, বিআর-২১, বিআর-২৪ এবং ব্রি-ধান-২৭ (হাওর এবং নিচু এলাকার জন্য উপযোগী) এর বীজ বপন করে স্থানীয় জাত বা দেশী জাতের হাসি কলমি থেকে প্রায় ২/৩ গুণ বেশি ফলন পেতে পারেন। বীজ বপনের আগে অবশ্যই সুষম রাসায়নিক সার বা মিশ্র সার (এনপিকেএস) ব্যবহার করুন।
২। গম বীজ সংগ্রহ ও বীজ সংরক্ষণ : জমি থেকে গম কর্তন বা বীজ সংগ্রহের এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই আর দেরি না করে জমি থেকে বীজের জন্য আলাদাভাবে জমির মধ্যখান থেকে অথবা যে অংশের গম সমানভাবে হয়েছে জাতের মিশ্রণ নেই এবং ভালভাবে পেকেছে ওই অংশের গম কর্তন করে আলাদাভাবে মাড়াই ও ঝাড়াই করে ৩/৪ দিন রোদে ভালভাবে শুকিয়ে নিন। বীজ শুকানোর পর দাঁতের নিচে রেখে চাপ দিলে কট করে আওয়াজ হলে বুঝতে হবে বীজ ভালভাবে শুকিয়েছে। বীজের জন্য গম রাখতে হলে গমের আর্দ্রতা ১২% ভাগের বেশি হওয়া উচিত নয়। এর বেশি আর্দ্রতা থাকলে গমে পোকায় আক্রমণসহ বীজ তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। স্থানীয় উপজেলা/জেলা কৃষি অফিসে এবং বিএডিসির বীজ উৎপাদন খামার, বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র অথবা বীজ বিক্রয় কেন্দ্রে বীজের আর্দ্রতা মাপক যন্ত্রের সাহায্যে বিনা খরচে অথবা নাম মাত্র খরচে কিছু নমুনা নিয়ে এসে পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন।
৩। বোরো ধানের জমিতে শেষ কিস্তি ইউরিয়া প্রয়োগ : বোরো ধানের চারা লাগানোর ৫০ দিন পর বা কাইচ থোড় দেখা গেলে জমিতে শেষ কিস্তি ইউরিয়া বিঘা প্রতি ৮/১০ কেজি হারে ছিটিয়ে দিতে পারেন। সপ্তাহে ২/৩ দিন জমি পরীক্ষা করে দেখুন। মাজরা পোকার আক্রমণ লক্ষ্য করা গেলে জমিতে বিঘাপ্রতি ৮/১০টি বাঁশের কঞ্চি বা গাছের ডাল পুঁতে দিলে শালিক, ময়না, দোয়েল, শ্যামা পাখি বসে পোকা খেয়ে দমনে সহায়তা করবে। প্রয়োজনে বিঘা প্রতি ১-১.৫ কেজি হারে ফুরাডান বা বাসুডিন জাতীয় দানাদার কীটনাশক ছিটিয়ে দিতে পারেন।