Site icon

কৃষিবিদ মোঃ আবুল হাশিম টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তার পদক পেলেন

Md.Abul Hashim

কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মেদ,টাঙ্গাইল থেকেঃ

কৃষিবিদ মোঃ আবুল হাশিম

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যে সকল ব্যক্তিবর্গের নিরলস প্রচেষ্টায় এদেশের কৃষিতে উন্নয়ন হচ্ছে তারই এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব কৃষিবিদ মোঃ আবুল হাশিম। তিনি বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, টাঙ্গাইলে উপ পরিচালক হিসাবে কর্মরত আছেন। বিগত ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি টাঙ্গাইলে যোগদানের পরে এখানকার কৃষি ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ন করেন। যার স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৫ সালের কাজের জন্য ২০১৬ সালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসাবে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তার পদক প্রদান করা হয়। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ২০১৬ এর পুরষ্কার বিতরনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে কৃষিবিদ মোঃ আবুল হাশিম কে এ সম্মাননা প্রদান করেন সংসদ সদস্য মোঃ ছানোয়ার হোসেন।

ডিজিটালাইজড লাগসই ও টেকসই আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্য অর্জনকারী হিসাবে তাকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। তার দিকনির্দেশনায় টাংগাইলে কৃষিতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে এসকল সাফল্যের মধ্যে তার উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো হলো-

(০১) ফসল বিন্যাসের আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা বহুলাংশে বৃদ্ধি। তিনি এখানে ফসল বিন্যাসের পরিবর্তন আনয়ন করে তিন ফসলী জমিকে চার ফসলীতে রুপান্তর করে কৃষি জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন (বিন্যাস=সড়িষা-বোরো-পাট-রোপা আমন)। (০২) গত ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে অত্র জেলায় তার সুদক্ষ পরিচালনায় “জাতীয় ইদুর নিধন অভিযান-২০১৫” সফলভাবে সম্পাদিত হওয়ায় তিনি ইদুর নিধন অভিযানে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম পুরষ্কার প্রাপ্ত হন। (০৩) তারই অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে এবার অত্র জেলারই দেলদুয়ার উপজেলার সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনিন্দ্র নাথ সিংহ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা “বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরষ্কার ১৪২০” প্রাপ্ত হন। (০৪) অত্র জেলার মধুপুর উপজেলায় একই জমিতে বছরে ছয়টি ফসল উৎপাদন প্রযু্িক্ত সম্প্রসারণ তার একটি অসাধারন কৃতিত্ব। (০৫) অত্র জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় উৎপাদিত উন্নত মানের লেবু মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। (০৬) অত্র জেলার মধুপুর-সখিপুরে বিষমুক্ত আনারস ও সব্জি উৎপাদনে কৃষকদের মাঝে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) পদ্ধতির সম্প্রসারণ করেছেন (০৭) ভোজ্য তেলের ঘাটতি পুরনের লক্ষ্যে তিনি অত্র উপলোয় প্রায় ৭০% জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা সম্প্রসারণ করেন। (০৮) সরিষার গড় ফলন বৃদ্ধি তথা অধিক মধু সংগ্রহের নিমিত্তে মৌ- খামার স্থাপন সম্প্রসারণ তার যুগান্তকারী পদক্ষেপ। উল্লেখ্য যে, তার প্রচেষ্টায় অত্র জেলার ১২ টি উপজেলায় মোট ৬০ জন মৌ –খামারীর দ্ধারা ৭,৯১০ টি মৌ-বাক্স স্থাপনের মাধ্যমে মোট ৮৯০০৮ কেজি মধু আহরন করা সম্ভব হয়েছে।যার মূল্য প্রায় ০২ কোটি ০২ লক্ষ ৩০ হাজার পাচশত টাকা মাত্র (০৯) বোরো জমিতে শতভাগ পার্চিং,শতভাগ সারিতে রোপনসহ লোগো পদ্ধতি অনুসরণ, ইউরিয়া সারের সাশ্রয় ও স্বাস্থ্যসম্মত অধিক উৎপাদনের লক্ষ্যে গুটি ইউরিয়ার ব্যবহার সম্প্রসারণ হয়েছে। (১০) মানব স্বাস্থ্য সংরক্ষনার্থে তার দিকনির্দেশনায় বিষমুক্ত সব্জি ও ফল উৎপাদনের লক্ষ্যে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার সফলভাবে সম্প্রসারণ হয়েছে। (১১) ভিটামিন সি এর অভাব পুরনের লক্ষ্যে পাহাড়ি এলাকায় সাইট্রাস জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করে চাষি প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী স্থাপন হয়েছে। (১২) ফসলের রোগ বালাইয়ের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে চাষিদের দোড় গোড়ায় “প্লান্ট ডক্টর ক্লিনিক”” সফলভাবে স্থাপন ও বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
(১৩) ঈড়হঃধপঃ ঋধৎসরহম এর মাধ্যমে মধুপুরে ৪০ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন করে আধুনিক বিশ্বে বেগুন রপ্তানি শুরু করা হয়েছে।
সর্বোপরি আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ডিজিটাল পদ্ধতিতে সফলভাবে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার প্রদত্ত মিনি টেপের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলার সকল কৃষি অফিসারদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সকল উপ-সহকারি কৃষি অফিসারদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখেন। কৃষকগণ সারাদিন মাঠে কর্মব্যস্ত থাকেন তাই রাতে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বড় পর্দায় চিত্ত বিনোদনসহ আধুনিক কৃষি প্রযু্িক্ত প্রদর্শন করা হয়। তারই উদ্যোগে টাঙ্গাইলের সকল কৃষি অফিসারদের ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগের দ্বারা প্রধানমন্ত্রীর “ভিশন ২০২১” সফল বাস্তবায়নের নিমিত্তে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় টাঙ্গাইলের কৃষি উন্নয়ন অত্যন্ত সফলতার সাথে এগিয়ে চলছে।

 

Exit mobile version