ড. এম. মনজুরুল আলম মন্ডল
গাজরের সব নানান
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ গাজরে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন যথা ভিটামিন-এ (৮৩৫ মাইক্রো গ্রাম/১০০ গ্রাম), বিটা-ক্যারোটিন ((৮২৮৫ মাইক্রো গ্রাম/১০০ গ্রাম), ভিটামিন-সি (৬ মাইক্রো গ্রাম/১০০ গ্রাম), ভিটামিন-বি (১৯ মাইক্রো গ্রাম/১০০ গ্রাম), ভিটামিন-কে (১৩ মাইক্রো গ্রাম/১০০ গ্রাম); মিনারেল যথা কালসিয়াম (৩৩ মি.গ্রাম/১০০ গ্রাম),মাগনেশিয়াম (১২ মি.গ্রাম/১০০ গ্রাম), ফসফরাস (৩৫ মি.গ্রাম/১০০ গ্রাম), পটাশিয়াম (৩২০ মি.গ্রাম/১০০ গ্রাম), সোডিয়াম (৬৯ মি.গ্রাম/১০০ গ্রাম); উপকারী ফ্যাটি এসিড যথা ওমেগা-৩ (২.৬ মি.গ্রাম/১০০ গ্রাম) এবং ওমেগা-৬ (১৩৭ মি.গ্রাম/১০০ গ্রাম), অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং ক্ষেত্র বিশেষ দারুণ ওষধের ভূমিকা পালন করে। অপর দিকে গাজরে কোন ক্ষতিকর ফ্যাটি এসিড নেই। গাজরে প্রচুর ভিটামিন-এ ও বিটা-ক্যারোটিন থাকায় এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। গাজরে প্রচুর ফাইবার থাকায় দেহের ওজন বৃদ্ধি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হবার সম্ভাবনা কম। গাজর খেলে ক্রনিক ডিজিস (দীর্ঘস্থায়ী রোগ) হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। গাজরে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ থাকায় তা খেলে ৩২% পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে। গাজর খেলে স্মরন শক্তি বৃদ্ধি করে এবং উপকারী কলেস্টেরল এর পরিমাণ বাড়ায় ও ক্ষতিকর কলেস্টেরল এর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। গাজরে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় গাজর খেলে ব্রেস্ট, কোলন, ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুকি কমে। গাজরে প্রদাহ বিরোধী উপাদান থাকায় সর্দি-কাশি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। গাজর শুধু শরীরের জন্য ভালো তাই নয়, এটি অ্যান্টি-এজিং হিসাবে কাজ করে। এতে যে বিটা ক্যারোটিন আছে তা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত কোষগুলোকে পরিপূর্ণতা দেয়। এখন আপনিই ভেবে দেখুন, কেন বেশী করে গাজর খাবেন। বাংলাদেশের বাজারে নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত (ছয় মাস) প্রচুর গাজর পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তা। তদুপরি, গাজর চাষে কোন বালাই নাশক প্রয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে না বিধায় বাজারে প্রাপ্ত গাজর শতভাগ নিরাপদ। সুতরাং এই ছয় মাস বেশী করে গাজর খান এবং শরীর, স্বাস্থ্য ও মন ভাল রাখুন। তবে হ্যাঁ, যাদের ইউরিক এসিডের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গাজর খাবেন।
কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম