‘গোলাঘর’এখন শুধুই স্মৃতি

এক সময়ের গোলাঘর

এক সময়ের গোলাঘর

মো. মনিরুজ্জামান ফারুক ,ভাঙ্গুড়া (পাবনা) :

এক সময়ের গোলাঘর : গোলা ভরা ধান আর পুকুর ভরা মাছ- এটি গ্রাম বাংলায় প্রচলিত একটি প্রবাদ বাক্য। পুকুর ভরা মাছ থাকলেও এখন নেই কেবল গোলাভরা ধান। কালের বিবর্তনে প্রায়ই বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কৃষকদের ধান রাখার সেই ‘গোলাঘর’। আগের দিনে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ক্ষেতের ধান গোলাঘরে মজুদ রাখতেন । বসত বাড়ির আঙ্গিনায় মাটি, বাঁশ আর টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হতো ধান রাখার এ ঘর। ধানের গোলা বসানো হতো বেশ উঁচুতে। যেন তাতে বর্ষার পানি প্রবেশ না করে। গোলায় প্রবেশের জন্য রাখা হতো একটি দরজা । দরজায় বাইরে থেকে তালা মেরে রাখা হতো চোরের হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য। এটি দেখতে অনেকটা পিরামিডের মতো।


জানা গেছে, একটি গোলাঘর তৈরি করতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ লাগতো। প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুম আরম্ভ হলে কৃষাণিরা গোলাঘর লেপে (মাটির আস্তর) প্রস্তুত করে রাখতো । আগের দিনে গোলাঘর দেখে অনুমান করা যেতো এলাকায় কে কত বড় জোতদার। গোলা ঘরের বদলে মানুষ এখন চট ও প্লাস্টিকের বস্তায় ধান ভরে ঘরে মজুদ রাখছেন। কথা হয় পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার কয়েকজন কৃষকের সাথে যার বাপ-দাদারা গোলাঘরে ধান রাখতেন। তারা জানান, আগের দিনে ধান রাখার জন্য গোলাঘর ব্যবহার করা হতো। গোলাঘরে ধান রাখায় ইঁদুর ও পোকামাকড়ের উৎপাত থেকে ফসল রক্ষা পেতো। একটি বড় গোলা ঘরে সাধারণত ২/৩শ’ মণ পর্যন্ত ধান রাখা যেতো। উপজেলার কয়েকটি বসত বাড়ির আঙ্গিনায় এখনো দেখা মেলে গোলাঘরের। তবে এতে এখন আর তাতে ধান রাখা হয় না। গ্রাম-বাংলার এ ঐতিহ্যটুকু শুধুই স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন তারা।

Advisory Editor

Advisory Editor of http://www.krishisongbad.com/

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *