ঘূর্ণিঝড় তিতলি ঃ সুন্দরবন উপকূলে সতর্কতা সংকেত

ঘূর্ণিঝড় তিতলি

ঘূর্ণিঝড় তিতলি

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট অফিস :

ঘূর্ণিঝড় তিতলি সুন্দরবন উপকূলে সতর্কতা সংকেত মংলা বন্দরে জাহাজের পন্য-খালাস ব্যাহত ।এছাড়া সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বুধবার দুপুরে জরুরী প্রস্তুতি সভা করেছে উপজেলা প্রশাসনও।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় তিতলি মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এটি বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের দক্ষিণ উড়িষ্যা ও উত্তর অন্দ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। কিন্তু এর প্রভাব পড়তে পারে মোংলা, খুলনা, বাগেরহাটসহ উপকূলীয় এলাকা জুড়ে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় তিতলি প্রভাবে মোংলা বন্দরসহ উপকূলীয় নদ-নদী উত্তাল হয়ে পড়ায় সকল ধরণের নৌযান চলাচলে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ সন্নিহিত বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আকার ধারণ করে ‘তিতলি’ নামে উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশের মংলাওখুলনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে।এতে ব্যাহত হচ্ছে মংলা বন্দরে থাকা দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের পন্য-খালাস বোঝাই কাজ। এজন্য দেশের প্রধান তিন সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার সৈকত এলাকায় এক নম্বর দূরবর্তী ৪ নং স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এর প্রভাবে বুধবার সকাল থেকে মোংলাসহ আশপাশ উপকূলীয় এলাকায় আকাশ মেঘলা রয়েছে। কোন ধরণের ঝড়ো হাওয়া না থাকলেও মাঝে মধ্যে সামান্য গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।।আজ বুধবার আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে। সুন্দরবন উপকূলে সতর্কাবস্থায় থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মোঃ আমিরুল আজাদ বলেন, আজ বুধবার এর পর ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বলা যাবে। সর্বশেষ রাত ৯টার দিকে খুলনা তথা মংলা বন্দর থেকে ৮৮০ কিলোমিটার ও পায়রা বন্দর থেকে ৮৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে বাড়ছে। ভারতের অন্ধপ্রদেশের দিকে ঝড়টি আঘাত হানতে পারে; তবে সুন্দরবন ও এর উপকূলবর্তী এলাকাতে প্রভাব পড়তে পারে। এজন্য উপকূলবাসীকে সতর্কাবস্থায় থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে বেতারের মাধ্যমে। মংলা বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপ ও আজ বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এটি ভারতের ওড়িষ্যা ও উত্তর অন্ধ প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রসঙ্গত, ইউএন ইকনোমিক এ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন এশিয়া এ্যান্ড প্যাসিফিক (ইএসসিএপি) প্যানেল নির্ধারিত হিসেবে এই নিম্নচাপটি যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তবে তার নাম হবে ‘টিটলি’। এটি পাকিস্তানের প্রস্তাবিত নাম। ঝড় যেখানেই উৎপন্ন হোক না কেন ইএসসিএপি’র পূর্বনির্ধারিত নামগুলো পর্যায়ক্রমে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে মংলা সমুদ্র বন্দরসহ সুন্দরবন উপকূলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে মংলা বন্দরে থাকা দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের পন্য-খালাস বোঝাই কাজ।

মংলা বন্দরের হারবার বিভাগ জানায়, দেশের প্রধান মংলা বন্দরসহ তিনটি সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকায় ৪ নং সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আর উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত মাছ ধরার ফিশিং ট্রলার ও নৌকা সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
মংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার এম নুরুল হুদা জানায়, চ্যানেলের হারবাড়িয়া, বর্হিনোঙ্গর ও জোটিতে সার-ক্লিংকার ও মেশিনারিজ মালামালসহ ২০টি বানিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এ সকল জাহাজে নিয়মিত খালাস কাজ চলছে ধীর গতিতে।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ গোলাম মোস্তফা জানান, বর্তমানে পশুর চ্যানেল, হাড়বাড়িয়া এবং বহির্নোঙ্গরে জাহাজগুলোর মধ্যে ৬টি সার, একটি এলপিজি গ্যাস, একটি ক্লিংকার, ৩টি কয়লা, একটি জিপসাম, দু’টি ড্রেজার, একটি স্লোগসহ দেশি-বিদেশি ২০টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে এ বন্দরে । এর মধ্যে গতকাল একটি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করছে এবং আরো দু’টি বাণিজ্যিক জাহাজ বন্দরে ভিরছে বলে হারবার কন্টোল থেকে জানানো হয়েছে।
মংলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি অলিউর রহমান ও মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ লোকমান হোসেন জানান, বঙ্গোপসাগর উত্তাল হওয়ার কারনে জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। আশ্রয় নিয়েছে বনের বিভিন্ন খালে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *