আধুনিক কৃষি উৎপাদনে জৈব পদ্ধতিতে বালাই দমনে ছাইয়ের ব্যবহার

জৈব পদ্ধতিতে বালাই দমনে ছাইয়ের ব্যবহার

# বকুল হাসান খান #

জৈব পদ্ধতিতে বালাই দমনে ছাইয়ের ব্যবহার

গাছের যে কোনো পোড়ানো অংশ যা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা বা গুঁড়ার মতো তাই-ই হলো ছাই। গাছের ছাল, কাঠ, কাঠের গুঁড়া, শুকনো বা তাজা পাতা, গাছের কাষ্ঠল অবশিষ্টাংশ, তুষ, ফল বা সবজির খোসা/ছাল, ফার্ন জাতীয় গাছ, শুকনো আগাছা, শুকনো কচুরিপানা ইত্যাদি পুড়িয়ে ছাই পাওয়া যায়। ছাই মাটির আর্দ্রতা রক্ষা, মাটির অম্লতা কমানো এবং সাধারণ কিছু পোকা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা যায়। ছাই-মরিচ গুঁড়া ছাই ভালোভাবে ছাঁকনি দিয়ে চেলে বড় বড় অংশগুলো সরিয়ে ফেলতে হয়। ভালোভাবে শুকানো মরিচ যতদূর সম্ভব সূক্ষ্ম করে গুঁড়া করতে হয়। দুই কেজি ছাইয়ের সঙ্গে ৫০ গ্রাম মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে গাছে ব্যবহার করতে হয়। মূলত ভুট্টার কান্ডের মাজরা নিয়ন্ত্রণে এ পরিমাণ মিশ্রণ এক একরে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ভুট্টার মোচার ছাই ভুট্টার দানা ছড়িয়ে নেয়ার পর যে অংশ থাকে সেটিসহ উপরের খোসা পুড়িয়ে যে ছাই পাওয়া যায় তা শিমের চারার গোড়ায় দেয়া হয়। এক কাপ পরিমাণ ছাই দিয়ে পাঁচটি চারা গাছের গোড়ার চারদিকে ছড়িয়ে বেষ্টনী তৈরি করে দিয়ে পিঁপড়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ধানের তুষের ছাই বা ইউক্যালিপটাস গাছের কাঠের ছাই সবজি চারার গোড়ার চারদিকে ছিটিয়ে অথবা সবজি ক্ষেতের চারদিকে ৮-১০ সেমি গভীর নালা তৈরি করে নালায় ধানের তুষের চাই বা ইউক্যালিপটাস গাছের কাঠের ছাই পুরু করে বিছিয়ে দিলে পিঁপড়া, কাটুই পোকা, শামুক, ঝিনুক, উইপোকা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

গাছের ছাই গাছের গোড়ার চারদিক ঘিরে পুরু করে ছাইয়ের স্তর দিলে কাটুই পোকা মথ গাছের কান্ডের গোড়ার কাছাকাছি বা গোড়ায় ডিম পাড়তে পারে না। কাঠের ছাই + চুন চার লিটার পানির সঙ্গে আধাকাপ ছাই ও আধাকাপ চুন মিশিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হয়। এরপর ছেঁকে নিতে হয়। এই মিশ্রণ প্রথমে অল্প জায়গায় স্বল্পসংখ্যক আক্রান্ত গাছের ওপর স্প্রে করে ফলাফল দেখতে হয়। তারপর সম্পূর্ণ ক্ষেতে ব্যবহার করা হয়। কুমড়া জাতীয় সবজির বিটল পোকা ও ম্যাগোট নিয়ন্ত্রণে এ মিশ্রণের ব্যবহার বেশ কাজে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *