টার্কী পালন করে আপনিও আয় করতে পারেন লক্ষ লক্ষ টাকা

টার্কী পালন করে আপনিও আয় করতে পারেন

 

টার্কী পালন করে আপনিও আয় করতে পারেন

টার্কী পালন করে আপনিও আয় করতে পারেন । #টার্কী টাকা আনে। ৩ মাসে বিনিয়োগ ডাবল। ৬ মাসে ঘরে বসে লক্ষ টাকার ব্যবসা। কিভাবে সম্ভব? বিস্তারিত জানতে মনযোগ সহকারে এই লেখাটি পড়ুন।

টার্কী কি?

বাংলাদেশে দ্রুত বিকাশমান টার্কী খামার। টার্কি মূলত মেসোআমেরিকান (মেক্সিকো এবং কেন্দ্রীয় অমেরিকা) অঞ্চলের বন্য প্রজাতির এক ধরনের পাখি। আমেরিকাতে ইউরোপীয় কলোনী স্থাপনের পূর্বে এই পাখিকে মেসোআমেরিকায় সর্বপ্রথম গৃহপালিত পাখি হিসেবে পালন শুরু করা হয়। এই বন্য পাখির বহু প্রজাতি মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার বনাঞ্চলে এখনো দেখ যায়। এটি এভিস শ্রেণীর অর্ন্তভুক্ত ফ্যাসিএনিডি (Phasianidae) পরিবারভূক্ত মিলিএগ্রিস গণের “গ্যালাপাভো ” প্রজাতির গৃহপালিত পাখি। টার্কি পাখির বাচ্চা দেখতে মুরগীর বাচ্চার মত হলেও পরিপূর্ণ বয়সে বদলে যায় আকৃতি ও চেহারা। টার্কি বাণিজ্যিক মাংস উৎপাদনের জন্য খুবই উপযুক্ত। এরা দেখতে খুব সুন্দর হয়। তবে এরা বাণিজ্যিকভাবে ডিম উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত নয়। তারা দ্রুত বড় হয়ে যায় এবং ব্রয়লার মুরগির মত খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে উঠে। পুরুষ টার্কিকে ডাকা হয় ”টম” নামে এবং স্ত্রী টার্কিকে ডাকা হয় ”হেন” নামে।

পশ্চিমা দেশগুলোতে টার্কি অধিক জনপ্রিয়। সবচেয়ে বেশি টাার্কি পালন করা হয় মার্কিন যুক্তরাস্ট্র, কানাডা , জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ড, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশে। বর্তমানে পৃথিবীতে আমেরিকা (USA) সর্বোচ্চ টার্কি উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিবেচিত। বছরে প্রায় ২৫ লক্ষ টন টার্কি মাংস শুধুমাত্র আমেরিকায় উৎপন্ন হয়। সমগ্র ইউরোপে প্রায় ১৭.৫ লক্ষ টন টার্কি মাংস উৎপাদিত হয়। এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্য প্রাচ্যের মানুষ বছরে প্রায় ৪.৫ লক্ষ টন টার্কি মাংস ভক্ষণ করে থাকেন। বিখ্যাত টিভি সিরিজ মিস্টার বিন এর নায়ক রোয়ান এটকিনসনকে টার্কির মাংস নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ার দৃশ্য খুব বেশি দিন আগের কথা নয় যা হতে বুঝা যায় উন্নত বিশ্বে বিভিন্ন অনুষ্টান ও উপলক্ষতে টার্কির মাংস ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

টার্কি পালনের সুবিধাসমূহ:
১) টার্কি বাণিজ্যিকভাবে মাংস, ডিম ও পোষা প্রাণী হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
২) টার্কি পালনে বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই।
৩) টার্কি বাণিজ্যিকভাবে মাংস উৎপাদনকারী একটি প্রজাতি তবে ডিমের জন্য নয়।
৪) টার্কি ব্রয়লার মুরগি ও শুকরের চেয়ে দ্রুত বাড়ে।
৫) টার্কি পালনে খাদ্য খরচ কম কারণ এরা দানাদার খাদ্যের চেয়ে ঘাস, লতা-পাতা জাতীয় খাদ্য বেশি খায়।
৬) টার্কি যেহেতু দেখতে খুব সুন্দর তাই এরা বাড়ির সৌর্ন্দয বর্ধনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
৭) টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ অন্য প্রজাতির পোল্ট্রির চেয়ে বেশি এবং চর্বির আধিক্য কিছুটা কম।
৮) টার্কির মাংসে অধিক পরিমাণ আয়রন, জিংক, পটাসিয়াম, ফসফরাস থাকে। এ উপাদানগুলো মানব শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী এবং নিয়মিত এ মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায়।
৯) টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড ও ট্রিপটোফ্যান অধিক পরিমাণে থাকে বিধায় এদের মাংস শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্বিতে সহায়তা করে।
১০) টার্কির মাংসে ভিটামিন ই অধিক পরিমাণে থাকে যা এন্টিঅক্সিডেন্ট ও রোগ প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে।
১১) অন্যান্য পাখীর তুলনায় এর রোগ বালাই কম এবং কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে রোগ বালাইয়ের ঝুকিঁ কম।

টার্কির জাত: টার্কিকে সুনির্দিষ্ট জাত অনুযায়ী ভাগ করা যায় না তবে এদের ৭টি আর্দশ ভ্যারাইটি আছে যা মাংস উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত যেমন ১. বেল্টসভিলি ২. ব্রোঞ্জ ৩.বরবন রেড ৪. ন্যারাগেনসেট ৫. ব্লাক ৬. শ্লেট ৭. হোয়াইট হল্যান্ড। এদের মধ্যে ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট টার্কি ভারতসহ আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত ভাল একটি জাত।
টার্কির স্থিতি মাপসমূহ:
ডিম দেওয়া শুরুর বয়স ঃ ৩০ সপ্তাহ
পুরুষ ও স্ত্রীর অনুপাত ঃ১:৫
গড় ডিমের ওজন ঃ ৬৫ গ্রাম
বছরে ডিম উৎপাদন ঃ ৮০-১০০
ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবার সময় ঃ ২৮ দিন
এক দিনের বাচ্চার ওজন ঃ ৫০ গ্রাম
২০ সপ্তাহে গড় ওজন টম (পুরুষ পাখি) ঃ ৭-৮ কেজি
২০ সপ্তাহে গড় ওজন হেন (স্ত্রী পাখি) ঃ ৪-৫ কেজি
ডিম দেওয়ার সময়সীমা ঃ ২৪ সপ্তাহ
বাজারজাত করার উপযুক্ত বয়স টম ঃ ১৪-১৫ সপ্তাহ
বাজারজাত করার উপযুক্ত বয়স হেন ঃ ১৭-১৮ সপ্তাহ
বাজারজাত করার উপযুক্ত ওজন টম ঃ ৭.৫ কেজি
বাজারজাত করার উপযুক্ত ওজন হেন ঃ ৫.৫ কেজি

আমার ফার্মের ঠিকানাঃ
গ্রামঃ সাহাবাজ, ডাকঃ বামনডাঙ্গা
উপজেলাঃ সুন্দরগঞ্জ, জেলাঃ গাইবান্ধা।
মোবাইলঃ ০১৭১৮৫৪২০০৬,
ইমেইলঃ shazedul09@gmail.com

চলবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *