হাবিপ্রবি প্রতিনিধি :
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর-এর প্রফেসর ড. আব্দুল আহাদ-এর নতুন আবিস্কার: জীবাশ্ম ডারউইনের থিওরী সমর্থন করে না, বা নম্নি শ্রেণীর জীব থেকে মানুষের হয়নি ও ডাইনোসর থেকে পাখি উৎপত্তি হয়নি, পৃথিবীর বয়স ভুল; তার প্রবন্ধটি আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্রকাশিত ‘American Journal of Life Science Research’(Published by Luisiana State University, charge free) Vol.3, no.7,pp.56-76 2015 সংখ্যা হয়েছে।
এটা এমন একটি জার্নাল যার তথ্য যে কোন বিজ্ঞানী নির্ভরযোগ্যভাবে গ্রহন করতে পারে।এই প্রবন্ধটি প্রকাশের পর আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকাসহ এশিয়া মহাদেশের প্রায় ৫০টি জার্নাল তার কাছে গবেষনা প্রবন্ধ চেয়েছেন।
ডারউইনের থিওরী ”ডারউইন-ওয়ালেস” থিওরী নামেও পরিচিত। কারণ ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চারলেস ডারউইন ও আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস যৌথভাবে ১৮৫৯ সালে থিওরী দিয়েছিলেন যে, মানুষ সহ পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী একটি এককোষী জীব হতে উৎপত্তি লাভ করেছে।
ড. আব্দুল আহাদ ২১ পৃষ্ঠার প্রবন্ধে আমেরিকান বিজ্ঞানীর ৮৫টি জার্নাল ও বইয়ের সর্বাধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন ধরনের তথ্য দ্বারা প্রমাণ করেছেন:- (র) জীবাশ্ম বা ফসিল হলো ডারউইনের থিউরীর পক্ষে চাক্ষুষ ও সরাসরি প্রমাণ। ড. আব্দুল আহাদ প্রমাণ (২০টি ছবিসহ) প্রমাণ করেছেন, উদ্ভিদের ও প্রাণীর জীবাশ্ম/ফসিল বর্তমানে পৃথিবীতে অবস্থিত উদ্ভিদের প্রাণীর সাথে হুবহু মিল রয়েছে, অর্থাৎ বিবর্তন হয়নি। এই পর্যন্ত আদি মানুষের প্রায় ২৫টি জীবাশ্ম পাওয়া গেছে বলে বিজ্ঞানীরা দাবী করেন।
ড. আব্দুল আহাদ দেখিয়েছেন এই জীবাশ্মগুলো হাতের হাড়ের অংশ, পায়ের হাড়ের অংশ, মাথার খুলির অংশ, পায়ের হাড়ের অংশ প্রভতি; যা পাথরে রুপান্তরিত হয়েছে। এ হাড়গুলো অধিকাংশ বানর জাতীয় প্রানীর হাড় ও কিছু আধুনিক মানুষের হাড়; কোন হাড়-ই আদি মানুষের জীবাশ্ম নয়। (রর) আধুনিক বিজ্ঞানীরা যুক্তি দেখিয়েছেন শিম্পাঞ্জির ও মানুষের মধ্যে রাসায়ুনিকভাবে ৯৯% মিল আছে অর্থাৎ মানুষ ও শিম্পাঞ্জি একই জীব হতে উৎপত্তি লাভ করেছে।
ড. আব্দুল আহাদ যুক্তি দেখিয়েছেন এই ১% কম বা বেশি আদৌ কোনো পার্থক্য নাই এবং পরিসংখ্যান বিজ্ঞানীদের মতে কোনো গ্রহণযোগ্য নয়, ফলে মানুষ মানুষই, শিম্পাঞ্জি শিম্পাঞ্জিই। এছাড়াও তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন আধুনিক বিজ্ঞানীদের মতে ‘দুধির রসায়ন’ নির্দেশ করে যে, ‘গাধা’ মানুষের নিকটতম উৎপত্তিগত আত্মীয়। আবার ‘কোলেষ্টরোল রসায়ন’ নির্দেশ করে ‘গাটার সাপ’ মানুষের নিকটতম আত্মীয়। আর ‘টিয়ার এনজাইম রসায়ন’ নির্দেশ করে মুরগী (চিকেন) মানুষের নিকটতম উৎপত্তিগত আত্মীয়। সুতরাং কোনটি সত্য ? শিম্পাঞ্জি বা উপরোক্ত জীবগুলো মানুষের নিকটতম উৎপত্তিগত আত্মীয় ।
বিবর্তন বিজ্ঞানীরা যুক্তি দিয়েছেন, মানুষ ৪/৫ মিলিয়ন বছর আগে টুপায়া (Tupaia) জাতীয় পিপড়া, খেকো কাঁঠবিড়ালী জাতীয় প্রাণী হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অর্থাৎ টুপায়া মানুষের আদি পিতা (হযরত আদম বা হাওয়া নয়)।
বিজ্ঞানী ড. আব্দুল আহাদ তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন এই টুপায়া প্রাণী বর্তমানে মালায়া দ্বীপে পাওয়া যাচ্ছে। তবে তারা কেন এখনো ঐ অবস্থায় আছে, মানুষ/বানর বা অন্য কোনো জীবে পরিণত হয়নি কেন? বিজ্ঞানী ড. আব্দুল আহাদ আরও যুক্তি দেখিয়েছেন আধুনিক বংশগতবিদ্যা অনুসারে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে ১০০-২০০ হাজার বছর আগে; অর্থৎ ৪/৫ মিলিয়ন বছর আগে মানুষ ‘টুপায়া’ প্রানী হতে উৎপত্তি লাভ করেনি।
আশচর্যের বিষয় ডারউইনের থিওরীর যৌথবিজ্ঞানী আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস বানর/ নিম্ন শ্রেণীর জীব থেকে মানুষ উৎপত্তি -এর বিরোধিতা করে যুক্তি দেখিয়েছেন─ ‘মানুষের সূক্ষ বিচক্ষণতা, বুদ্ধি, বিবেচনা, বিবেক, দক্ষতা প্রতৃতির কারণে মানুষ বানর কিংবা নিম্ন শ্রেণির জীব হতে উৎপত্তি লাভ করেছে, আমি তা বিশ্বাস করি না, মানি না। এই উক্তিতে ডারউইন খুব মর্মাহত হন। আরও উল্লেখ্য যে, ওয়ালেস ১৮৯৬ সালে তিনি ‘ডারউইন─ওয়ালেস’ থিওরী হতে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নেন এবং ”ডারউইন-ওয়ালেস” থিওরি পরিবর্তে ডারউইনের থিওরী’ বলে নিজেই প্রচার চালান এবং বই-ও লেখেন।
ডারইউন তার মানুষের উৎপত্তি (Decent of Man) পুস্তকে ভূমিকায় স্বীকার করেছেন যে, মানুষের উৎপত্তি বিজ্ঞান দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না, এবং ভবিষ্যতেও করা যাবে না; তবে তিনি বিশ্বাস করেন মানুষ বানর বা নিমান শ্রেণির জীব হইতে উৎপত্তি লাভ করেছে। কারণ বিজ্ঞানী ল্যামার্ক তাই-ই বিশ্বাস করতেন। ড. আব্দুল আহাদ যুক্তি দেখিয়েছেন, ল্যামার্কের থিওরী ভুল, আধুনিক বিবর্তন বিজ্ঞানীরা ল্যামার্কের থিওরী আদৌ বিশ্বাস করে না এবং ২০১১ সালে অন্য একটি প্রবন্ধে, (International Journal of Bio-Resource and Stress Management,Vol.2, no.(3),pp.353-358) ল্যামার্কের থিওরী ভুল প্রমান করেছেন─ তাও উক্ত প্রবন্ধে করেছেন।
বিভিন্ন ধরনের তথ্য দ্বারা তিনি আরও প্রমাণ (ছবিসহ) করেছেন ডাইনোসর থেকে পাখি হয়নি, পৃথিবীর বয়স ভুল, বিবর্তন অবিরত প্রক্রিয়া নয়, বিলুপ্ত জীব হতে নতুন কোন জীব উৎপত্তি লাভ করে না।