আবুল বাশার মিরাজঃ
ঢেঁড়শের সংস্কৃত নাম রোমশ। আয়ুর্বেদ মতে এ ফলটির রসশক্তি ও বীর্যশক্তি উভয়ই কার্যকর। রসগত স্বভাবে এটি ভেদক অর্থাৎ কোষ্ঠ পরিষ্কারক, পিত্তবিকার নাশক, রুচিবর্ধক তবে আয়ুবর্ধকও বটে; রুক্ষ, মূত্রবর্ধক ও অশ্মরী দূরীকারক অর্থাৎ শরীরে জমা পাথর গলিয়ে বের করে দেয়। এটিকে ডিনডিশও বলা হয়; ইংরেজিতে বলা হয় ওকরা বা লেডিস ফিঙ্গার।এ সবজিটি ডায়াবেটিসে বিশেষ উপকারী, পেসারের অসুখ সারায়, পুষ্টি গুণে ভরপুর। এটি মেধা বাড়ায়; তবে বাতবর্ধকও। ঢেঁড়শ বিভিন্ন অসুখের চিকিৎসায় ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নিচে এর ব্যবহার বিধি দেয়া হলোঃ
মূত্রের উগ্র গন্ধ : কাঁচা ঢেঁড়শ বীজ বাদ দিয়ে ২৫-৩০ গ্রাম নিতে হবে। তারপর ১ লিটার পানিতে সিদ্ধ করে আন্দাজ ২৫০-৩০০ মিলিলিটার থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা করে পানিটা সারা দিনে দুই-তিনবারে পান করতে হবে। এভাবে কয়েক দিন খেলে দেখা যাবে উগ্র গন্ধটা কমে গেছে।
মূত্রের স্বল্পতা : যারা পানি কম পান করে না, অথচ পান করার পরিমাণ মতো মূত্র হয় না, তারা বীজ বাদ দিয়ে কাঁচা ঢেঁড়শ ৪-৫ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে দেড়-দুই কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে চট্চটে সে পিচ্ছিল পানি পান করলে মূত্রের পরিমাণে বেড়ে যাবে।
খুসখুসে কাশি : বীজ বাদ দিয়ে কাঁচা ঢেঁড়শ কুচিকুচি করে কেটে কড়া রোদে শুকিয়ে সেগুলো গুঁড়ো করে ৫-৭ গ্রাম পরিমাণে নিয়ে চিনির কড়া রসে মেড়ে মোমবাতির মতো পাকিয়ে রাখতে হবে। গলা খুসখুস করলেই একটু চুষে খেলে এ কাশি চলে যাবে। যেকোনো বয়সের লোক এটি খেতে পারে এবং সাথে সাথে উপকার পাওয়া যায়।
অপুষ্টি : রোজ সকালে কয়েকটি নরম ঢেঁড়শ খেলে অপুষ্টি দূর হয়।
আমাশয় : গাছের মূল পিষে চিনি মিশিয়ে খেলে আমাশয় সারে।
মূত্রদোষ : ধাতুক্ষরণে মূত্রনালী টিপলে একটি তরল পিচ্ছিল পাতলা আঠা বের হয়। এ ত্রুটি প্রোটেস্ট গ্ল্যান্ডের ক্ষরণও হতে পারে। এ রকম ক্ষরণ হলে ২৫-৩০ গ্রাম কাঁচা ঢেঁড়শ (৩-৪ টা মতো) বেটে ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে পাতলা কাপড়ে ছেঁকে কয়েক দিন খেতে হয়। এর ফলে দুই-তিন দিনের মাঝে অসুবিধাটা চলে যাবে। তবে হজম শক্তি ভালো না থাকলে কাঁচা বেটে না খেয়ে পানিতে সিদ্ধ করে ছেঁকে খাওয়া ভালো।
কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম