অফিসারদের আন্দোলনে বাকৃবিতে প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা : উপাচার্য অবরুদ্ধ

বাকৃবিতে প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা

 বাকৃবিতে প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা
বাকৃবি প্রতিনিধি

বাকৃবিতে প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা ঃ উপাচার্যের কার্যালয়ে হট্টগোলের ঘটনায় সাময়িক বহিস্কার ও শোকজ আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করার কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর। বৃহস্পতিবার বেলা ১০ টা থেকে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। বেলা ১১ টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিলও বের করেন তাঁরা। এদিকে আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হলেও প্রশাসনিক কোন কর্মকান্ড পরিচালিত হয়নি। সনদ উত্তোলনসহ বিভিন্ন জরুরী কাজে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার পূর্ব অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢুকে কর্মকর্তারা উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। বিভিন্ন অশালীন ভাষা গালিগালাজ করে এবং উপ-উপাচার্যের দিকে তেড়ে আসে। এই ঘটনায় জড়িত থাকায় প্রশাসন বুধবার দুই জনকে সাময়িকভাবে চাকুরি থেকে সাসপেন্ড করে এবং অপর ছয় জনকে শোকজ করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিনই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মচারী-কর্মকর্তারা। পরে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রশাসন ভবন, কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা, প্রকৌশল ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এই সময় তারা প্রশাসন ভবনের বিদ্যু সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেয়। একই দাবিতে বুধবার দুপুর থেকে ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা, প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ,হল প্রভোস্ট ও শিক্ষকদের বহনকারী ছোট ছোট যানবাহন বন্ধ করে দেয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এতে উপাচার্য তাঁর ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পরেন। বিকেল ৫ টা পর্যন্ত রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের একটি অংশ উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে অবস্থান করছিল।

এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বহিস্কারাদেশ প্রত্যহারের জন্য প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করতে স্থানীয় মন্ত্রীর কাছে তোড়জোর শুরু করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শোকজ নোটিশ প্রাপ্ত কয়েকজন মন্ত্রীর সাথে দেখা করে ফেইসবুকে ছবি পোস্ট করেছেন। এতে বহিস্কারাদেশ প্রাপ্তদেরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নেতাদের দেখা গেছে।

আন্দলনরত নেতারা বলেন, জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়ন ও পদোন্নয়নের দাবিতে গতবছরের জুন মাস থেকে আন্দোলন করে আসছে অফিসার পরিষদ। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়ায় তারা বিভিন্ন কার্যালয়ে তালা লাগায়। তারা আরো জানায়, পে স্কেল বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরী কমিশনের প্রতিবেদন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে। এই প্রতিবেদনে পে স্কেল বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করে মঞ্জুরী কমিশন। তবে প্রতিবেদনের কোন তথ্য আমরা জানি না। সেটা জানার জন্য আমাদের এই নিয়মতান্ত্রিক  আন্দোলন করছেন বলে জানান।

এই বিষয়ে অফিসার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ২জনকে সাময়িক বহিস্কার ও ৬ জনের শোকজ নিয়মবর্হিভূত। দ্রুত প্রত্যাহার করা না হলে আগামী রবিবার থেকে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ারি দেন তিনি। যদি সাময়িক বহিস্কার ও শোকজ প্রত্যাহার করে তাহলে ভবনের তালাগুলো খুলে দেওয়া হবে এবং দাবিসমূহ নিয়ে আলোচনা হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যার ফলে আমাকে সকাল থেকে বাস ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এখন বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

###

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *