দিনাজপুরে ধানের ফলন ভাল হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই

দিনাজপুরে ধানের ফলন

 

মোঃ রাসেল ইসলাম
দিনাজপুর প্রতিনিধি

খাদ্য শষ্যের ভান্ডার হিসেবেদিনাজপুরের ধান পরিচিত জেলা দিনাজপুর। ১৩টি উপজেলা নিয়ে ১৭৮৬ সালে দিনাজপুর জেলা গঠিত। আয়তন প্রায় ৩৪৩৭.৯৮ বর্গ কিলোমিটার। এই জেলার মোট জনসংখ্যা ২৬৪২৮৫০ জন। স্বাক্ষরতার হার প্রায় ৫২.৫% । বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম কৃষি সমৃদ্ধ দিনাজপুর জেলা। ইতিহাসের অনেক সাক্ষ্য বহন করে আছে এই জেলা। কাটারী ভোগ চাল; চিড়া, লিচু ও আম এর জন্য বিখ্যাত এটি। ধান এই জেলার প্রধান কৃষি পন্য হওয়ায় এখানে শিল্প কারখানা বলতে প্রায় ২০০০ এর মত চালকল আছে। যার মধ্যে ১২০ টি স্বয়ংক্রিয় এবং বাকী গুলো চাতাল নির্ভর হাসকিং মিল্ক। দেশের খাদ্য উৎপাদন হিসেবে দিনাজপুর জেলার ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অধিকাংশ মানুষের আয়ের প্রধাণ উৎস ধান উৎপাদন ও চাল ব্যবস্যা। দিনাজপুর সদর উপজেলার পুলহাট এলাকায় বেশির ভাগই মিল চাতাল অবস্থিত। যার দিনাজপুরের শিল্প নগরী হিসেবেও কেউ কেউ বলে থাকেন। তাছাড়া জেলার আশেপাশের উপজেলায় অটো রাইস মিল সহ ছোট বড় অনেক রাইস মিল গড়ে উঠেছে।

এবার মৈসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই উৎপাদন খরচ (সার, তেল,বিষ, মুজুরী) বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের তার নিজেস্ব পুজি হারিয়ে যেতে বসেছে। উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে তারা লাভবান হতে পারছেনা। একদিকে মিলারিরা লোকসানের আশংখ্যায় ধীর গতিতে ধান কিনছে। এই কারণে কৃষকের পড়েছে কিছুটা বিপাকে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষন অফিসার নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ১৩ টি উপজেলায় ২ লক্ষ্য ৫৩ হাজার ৯শ ৬৩ হেক্টোর জমিতে গত আমন ধানের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও ২ হাজার ৫৮৪ হেক্টোর অতিরিক্ত জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়।

এদিকে আমন ধান শেষ না হতেই বোর ধান রোপণ করার জন্য ব্যস্ত দিন কাটছে কৃষকের। বিভিন্ন উপজেলায় সরেজমিনে গেলে দেখা যায় জমি চাষ থেকে শুরু করে বীজ রোপন পর্যন্ত সারাদিন কাটাচ্ছেন ধান রোপন কারী শ্রমিকরা। সারাদিন কাজ করে ভাল আয় করছে তারা। এদিকে বোচাগঞ্চ উপজেলার ৫ নং ইউনিয়নের বনহোড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, আমন ধানের দাম নায্য মুল্য না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। এই কারণে বোরো ধান চাষে অনেকে অনীহা প্রকাশ করছে সাধারণ কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষন অফিসার নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, এবারের বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ টি উপজেলায় ১ লক্ষ্য ৭৩ হাজার ৬শ ৫১ হেক্টোর।

এদিকে ধানের দাম হওয়ায় বিকল্প হিসেবে অনেকে গম, আলু, ভুট্টা এবং আঁখ উৎপাদনের দিকে ঝুকছে। এই অবস্থা আরো বেশি চলতে থাকলে ধান উৎপাদনে শীর্ষে থাকা এই দিনাজপুরের অবস্থান অনেক নিচে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। এমত অবস্থায় সরকারের বিশেষ মহলকে এই দিকে দৃষ্টি রাখার পরামর্শও দেন তারা।

কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *