সংকটে দুগ্ধ খামারিরা
শাহ এমরান
সংকটে দুগ্ধ খামারিরা ঃ কয়েক দিন আগে বিবিসি থেকে ফোন এসেছিল আমাদের দুগ্ধ খামারিদের সমস্যা শোনার জন্য, তারা তুলে ধরবে। আমরা বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন চেস্টা করে যাচ্ছি সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরতে।
একটা কথা বারবার বলছি তা হলো, করোনা ভাইরাসের এই দূর্যোগ থেকে সরকার ও খামারিদের কিছু শিক্ষা নেবার আছে।
প্রতিটা উপজেলা ভিত্তিক খামারিরা একত্রিত না হলে, এসোসিয়েশন সমিতি আকারে নিজেদের দুধ সংরক্ষন প্ল্যান্ট , দুগ্ধ জাতীয় পন্য তৈরীর লোকাল বাজার ও ব্রান্ড তৈরী করতে না পারলে যেকোন দূর্যোগে আপনাদের লোকসান দিতে হবে। পৃথিবীর দুগ্ধ শিল্পে উন্নত দেশে প্রতিটা এসোসিয়েশন অনেক শক্তিশালী, আমাদেরও হতে হবে। কেউ চাইবেনা দেশের খামারিরা একত্রিত হোক। নানাভাবে আমাদের বিচ্ছিন্ন করার চেস্টা করবে। কেন করবে সেটা আপনারাও ভাল বোঝেন।
সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের প্রান্তিক পর্যায়ে সহযোগিতা করবে ভাবছেন! কোনদিন করবেনা, লুটপাট হবে, আপনি কিছু জানতেও পারবেন না। বর্তমানে যেভাবে চলছে প্রান্তিক পর্যায়ে কোন খামারি কোন সুযোগ সুবিধা পাবেনা। ছোট মাঝারী খামারিরা একত্রিত হয়ে নিজের পায়ে দাড়ানোর চেস্টা করুন। আমরা চেস্টা করছি আপনাদের জন্য।
খামারিদের দুধ সংরক্ষনের কোন যথাযথ ব্যবস্থা সরকারের নেই। দেশের ৩ টা প্রাইভেট গুড়া দুধ তৈরীর ফ্যাক্টরী আছে, কিন্ত তারা গুড়া দুধ খুব কম তৈরী করে। একটি মাত্র কোম্পানী করে, বাকী দুটো একেবারেই করেনা। কারন তাদের গুড়া দুধ তৈরীর মুল্য বেশী; বিদেশ থেকে আমদানী করা গুড়া দুধের মূল্য কম। এই সকল মিল্ক প্রসেসর কোম্পানীদের প্রনোদনা না দিলে বা খামারি এসোসিয়েশনের নিজস্ব গুড়া দুধ তৈরীর প্ল্যান্ট না থাকলে এই সেক্টর কোনদিন মাথাতুলে দাড়াতে পারবেনা। দেশীয় শিল্পকে সর্বোচ্চ সহযোহিতা করতে হবে সরকারকে। না হলে আজকের এই দিন আবার দেখতে হবে। বিগত ১০ বছরের শ্রম অচিরেই ধুলায় মিশে যাবার উপক্রম এখন।
আমাদের সকল সক্ষমতা আছে, কিন্তু কোথায় যেন আমরা আটকে যাচ্ছি। ফান্ডের সমস্যা একেবারেই নেই প্রানিসম্পদ সেক্টরে। কিন্তু খামারিদের জন্য যথাযথভাবে কাজ করা করা হয়না; প্রাইভেটকে উৎসাহ দেয়া হয়না। সব থেকে দুঃখের বিষয়টি হলো, সব কাজ নীতিনির্ধারকরা নিজেরাই করতে চায়।
এভাবে একটি দেশের গুরুত্বপূর্ন সেক্টর আগাতে পারেনা। শিক্ষা নিন, নিজেকে প্রস্তুত করুন। হয় আন্দোলনে যাবেন , না হয় ফার্ম বন্ধ করে দিবেন। যেকোন একটা বেছে নিতে হবে এই মহাদূর্যোগের পরে।
লেখকঃ মহাসচিব,বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন
[বিঃদ্রঃ লেখকের নিজস্ব মতামতের জন্য কৃষি সংবাদ কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না]