Site icon

বাংলাদেশে দেশী কৈ মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ ব্যবস্থাপনা

ড. এএইচএম কোহিনুর ও মো. মশিউর রহমান

দেশী কৈ মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষ ব্যবস্থাপনা 

কৈ মাছ বাংলাদেশের মানুষের কাছে আবহমানকাল ধরে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় মাছ হিসাবে পরিচিত। এ মাছটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং কম চর্বিযুক্ত। জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা যায় বিধায় এ মাছের বাজারমূল্য তুলনামূলকভাবে বেশি। অতীতে এ মাছটি খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, হাওর-বাঁওড় এবং প্লাবনভূমিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। কিন্তু দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের জন্য বাঁধ নির্মান, প্রাকৃতিক জলাশয়ে পলিমাটি পড়ে ক্রমশ ভরাট হয়ে গভীরতা কমে যাওয়া, শিল্পকারখানার বর্জ্য, পৌর ও কৃষিজ আবর্জনার জন্য পানির দূষণ, নির্বিচারে মাছ আহরণ আর সেই সাথে মাছের রোগবালাই বৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে এ মাছটির প্রাচুর্যতা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি নদী-নালা, খাল-বিল, প্লাবনভূমি ও মোহনায় প্রাকৃতিক বিচরণ ও প্রজনন ক্ষেত্র বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাছটি ইতোমধ্যে বিপন্ন প্রজাতির মাছ বলে চিহ্নিত হয়েছে। দেশীয় প্রজাতির অত্যন্ত মূল্যবান এ মাছটির বিলুপ্তি রোধকল্পে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা নিবিড় গবেষণার এর কৃত্রিম প্রজনন, পোনা উৎপাদন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সফলতা লাভ করেছে। ফলশ্রুতিতে কৈ মাছের পোনা প্রাপ্তি ও চাষ পদ্ধতি যেমন সুগম হয়েছে তেমনি এ মাছটিকে বিলুপ্তির হাত  থেকে রক্ষা করে এর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পথও উন্মোচিত হয়েছে।

কৈ মাছের বৈশিষ্ট্য

কৃত্রিম প্রজনন 
ব্রুড মাছের পরিচর্যাঃ প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সুস্থ্য-সবল ও রোগমুক্ত মাছ সংগ্রহ করে কৃত্রিম প্রজননের জন্য ব্রুড তৈরি করতে হবে।

ব্রুড তৈরির জন্য নিম্মবর্নিত উপায়ে পুকুর প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা করতে হয়ঃ

প্রজননক্ষম স্ত্রী ও পুরুষ মাছ সনাক্তকরণ প্রজনন ঋতুতে পরিপক্ক স্ত্রী ও পুরুষ মাছ নিম্মবর্নিত বৈশিষ্ট্যসমুহ পর্যবেক্ষণে সহজে সনাক্ত করা যায়ঃ

কৈ মাছের প্রজননকাল শুরু হয় এপ্রিল মাস হতে এবং অব্যহত থাকে জুন মাস পর্যন্ত।

এ মাছের কৃত্রিম প্রজননের ধাপসমূহ নিম্মরুপঃ

সতর্কতাঃ হরমোন প্রয়োগকৃত মাছ কোন অবস্থাতেই বাজারজাত করা ঠিক নয়।
কৈ মাছের নার্সারিক্স নার্সারি পুকুরের আয়তন ২০-৪০ শতাংশ এবং গভীরতা ০.৮০-১.০ মিটার হতে হবে

রেণু মজুদের পর নিম্মবর্নিত অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ করতে হবেঃ

সময় রেণুর ওজন খাদ্য প্রয়োগের নিয়ম

উল্লেখ্য, কৈ মাছের নার্সারি পুকুরে রাতের বেলায় প্রায়শঃ অক্সিজেনের অভাব পরিলক্ষিত করা যায়। অক্সিজেনের অভাবের কারণে পোনার ব্যাপক মৃত্যু হতে পারে। এ কারণে রেণু মজুদের ১ম দিন থেকে ০৫ দিন পর্যন্ত রাত্রে অক্সিজেন বৃদ্ধিকারক ক্যামিকেল দ্রব্য ব্যবহার করা আবশ্যক। পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুযায়ী রাতের বেলায় অক্সিজেন বৃদ্ধিকারক ক্যামিকেল ব্যবহার করতে হবে।

কৈ মাছের চাষ 
পুকুর প্রস্তুতি

 পোনা মজুদ ও ব্যবস্থাপনা

 

Exit mobile version