Site icon

নকলায় আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো পোকা ও বিএলবি রোগ ঃছুটির দিনেও মাঠে কৃষি কর্মকর্তারা

মোঃ মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর) :

শেরপুরের নকলায় আমন ক্ষেতে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের আক্রমন দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমন ও বিএলবি রোগের আক্রমন বেশি। ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনায় দিশেহারা হয়ে উঠছেন কৃষকরা। বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ভবিষ্যৎ চিন্তায় নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা ছুটির দিনেও এলাকা ঘুরে মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন, বিলি করছেন চলতি আমন মৌসুমে কৃষক ভাইদের করণীয় বিষয়ক লিফলেট-হ্যান্ড বিল।

১৩ অক্টোবর শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নকলার তত্বাবধানে দিনভর বানেশ্বরদী, গনপদ্দী ও উরফা ইউনিয়নের কৃষকদের হাতে আমন ধানে পাতা মোড়ানো পোকা দমনে, বাদামী ঘাস ফড়িং দমনে, ব্যাকটেরিয়ার কারণে পাতাপোড়া (বিএলবি) রোগ নিরাময়ে ও ব্যাকটেরিল লিফব্লাইট (পাতাপোড়া) রোগে করণীয় বিষয়ক লিফলেট বিলি করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। যদিও নকলায় কোথাও বাদামী ঘাস ফড়িং ও ব্যাকটেরিল লিফব্লাইট (পাতাপোড়া) রোগের আক্রমন হয়নি।

চরমধুয়া গ্রামের কৃষক মজিবরের দুই একর, হাফিজুর রহমানের এক একর, শমর আলী নন্দুর ৮০ শতাংশ, জামাল উদ্দিনের ২৫ শতাংশ জমির ধান ক্ষেতসহ ওই এলাকার প্রায় সব কৃষকের সম্পূর্ণ আবাদ বিএলবি রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রথমে ধান গাছের পাতার কিনারা দিয়ে ধুসর দাগ পড়ে যায়, পরে আস্তে আস্তে ধান গাছ মারা যাচ্ছে। তারা বলেন, আমাদের আমন আবাদ প্রথমে বন্যায় খেয়ে যায়। দ্বিতীয় বারে বলন গড়িয়েছি। এখন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সব মারা যাচ্ছে, এখন তারা ক্ষতির সম্ভাবনায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ হেক্টর জমির আবাদে পাতা মোড়ানো পোকার এবং ৪৫ থেকে ৫০ হেক্টর জমির আমন আবাদ ব্যাকটেরিয়ার কারণে পাতাপোড়া (বিএলবি) রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, যেসব জমি গাছের নিচে এবং ছায়া পড়ে সেসব জমিতে রোগ বালাইয়ের আক্রমন বেশি হলেও, আমন আবাদের তুলনায় উপজেলার খুব কম জমির আবাদ নষ্ট হয়েছে বা হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর জানান, পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমনের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রতি একরের জন্য ২০০ লিটার পানির সাথে ২০০ মিলি ফাইটার, ৯০ গ্রাম ভিরতেকো, ৪০০ মিলি ডারসবান ২০ ইসি বা মর্টান ৪৮ ইসি; ৫২০ গ্রাম সপটিন, ৪০০ এম এল গোলা ৪৮ ইসি মিশিয়ে আক্রান্ত জমিতে স্প্রে করলে সেরে যায় এবং ব্যাকটেরিয়ার কারণে পাতাপোড়া (বিএলবি) রোগ নিরাময়ে আক্রান্ত ক্ষেতে ইিউরিয়া সার প্রয়োগ না করে প্রতি একরে ১৫ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে ওই রোগের তীব্রতা কমে যাবে। তিনি আরো জানান, যে যতসামান্য আবাদ আক্রান্ত হয়েছে তাতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে কোন সমস্যা হবে না।

Exit mobile version