Site icon

নকলায় চলতি বোরো আবাদে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন বেশি

নকলায় চলতি বোরো

মোঃ মোশারফ হোসেন, নকলা থেকে :

 

শেরপুরের নকলায় যেদিকে দৃষ্টি যায়, শুধু সবুজের সমারোহ নজরে পড়ে। উপজেলার দিগন্তজুড়ে শুধু সবুজ বোরো ধানের মাঠ। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। নকলায় চলতি বোরো  আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন বেশি হওয়ার কারন- উপজেলা কৃষি অফিসের একান্ত প্রচেষ্ঠা এবং গত বছরের পর পর বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নকলা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় বোরো ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৩ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমি এবং ধান উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ৬২২ মেট্রিকটন। এতে হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন ধানের জন্য ৭ হাজার ২০৫ হেক্টর জমি হতে উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার ২৯৫ মেট্রিকটন এবং উফসী জাত বা স্থানীয় জাতের জন্য ৬ হাজার ২৬০ হেক্টর জমি হতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩২৭ মেট্রিকটন; কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষে অর্জন হাইব্রিড জাতের ৩৫ হেক্টর বেড়ে হয়েছে ৭ হাজার ২৪০ হেক্টর এবং উফসী জাতের কমপক্ষে ১০ হেক্টর বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ২৭০ হেক্টর জমি। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে উৎপাদন অনেক বাড়তে পারে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর জানান, এবছর এসআর-৮, তেজ গোল্ড, এসিআই-৬, জনকরাজ, রুপসী বাংলা, সোনার বাংলা, কৃষিবিদ, হীরা-১, ২, ৩, ৪ ও ৫; ব্যবিলন-১ ও ২; বালিয়া-১ ও ২; ইস্পাহানী-১ ও ২, ময়না, টিয়া, সম্পদ এবং উফসী জাতের ব্রি ধান-২৮, ২৯, ৫৮, ৬৯ ও ৭৪, নেরিকা মিউট্যান্ট এবং বিআর-২৬ জাতের ধান বেশি চাষ করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলায় ১২০ টি প্রদর্শনী প্লটেও বোরো ধান চাষ করা হয়েছে, তারমধ্যে বীজ উৎপাদনের জন্য করা হয়েছে ৯০ টি।

বানেশ্বরদী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই ব্লকের কৃষকরা গত বছরের বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ নাহলেও অতিবৃষ্টিতে বেশ লোকসানে আছেন তারা। তাই কৃষকরা ঘুরে দাঁড়াতে অনেক পতিত জমিতেও বোরো ধান রোপন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে অর্জন বেড়েছে। বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকসহ কৃষি কর্মকর্তারা। ছোট মোজার এলাকার কৃষক নজরুল, বড় মোজারের কৃষক আজিজুল, পোলাদেশীর সুরুজ মিয়া, ভূরদী কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছাইয়েদুল হক, সাধারণ সম্পাদক হেলাল, সদস্য ঈসমাইল, বেলালসহ কয়েকজন জানান, আগামীতে চাষ উপযোগী তাদের সব পতিত জমিতেই বোরো ধাদের আবাদ করবেন।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প৫সারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বোরো আবাদের উপযোগী সব জমিকে চাষের আওতায় আনতে জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে, কৃষি পণ্য উৎপাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আউশ আবাদ করতে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এবছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন বেশি হওয়ায় এমনটাই প্রমাণ করে।

কৃষি অফিসের সিটিজেন চার্টারের তথ্যানুযায়ী, উপজেলার ৩২ হাজার ৪৫ টি কৃষি পরিবার ৭৬ হাজার ৯০০ একর আবাদী জমিতে কৃষি কাজ করেন। তার মধ্যে এক ফসলী জমি ২ হাজার ৭৫০ একর, দুই ফসলী ২২ হাজার ৬০০ একর ও তিন ফসলী জমি ৯ হাজার ৬৫০ একর এবং নীট ফসলী জমি ৩৬ হাজার ২৫০ একর।

Exit mobile version