কৃষি কর্মকর্তা কোভিট-১৯
মো. মোশারফ হোসাইন, শেরপুর প্রতিনিধি:
কৃষি কর্মকর্তা কোভিট-১৯ ঃ শেরপুরের নকলায় প্রথম বারের মতো কৃষি বিভাগের কোন এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও) করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) এ আক্রান্ত হয়েছেন। কোভিট-১৯ এ আক্রান্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার নাম হলো আসাদুল হক বাবু। সে উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও) হিসেবে কর্মরত।
আসাদুল হক বাবু জানান, ১ জুলাই বুধবার হতে তার শরীরে ঠান্ডা জ্বর দেখা দেয়, পরে মাথা ব্যাথা ও সামান্য সময়ের জন্য শ্বাস কষ্ট দেখাদেয়। তাই কোভিট-১৯ এর সংক্রমণ ভেবে ময়মনসিংহ এস.কে হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন। ওই দিন রাতে এস.কে হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় যে, নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে কোভিট-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এরপর থেকে এস.কে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তিনি হোম আইশোলেসনে আছেন। তবে আজ ৪ জুলাই শনিবার তার শারীরিক অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে জ্বর ও হালকা মাথা ব্যথা ছাড়া তার গায়ে অন্যকোন উপসর্গ নেই বলে আসাদুল হক বাবু জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত তিনি ছাড়াও অতিরিক্ত কৃষি অফিসার (এইউও), উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা (এসএপিপিও), উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও) সহ বেশ কয়েকজন অফিসিয়াল কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। কৃষি বিভাগের প্রায় সকলকে কৃষকদের সাথে কাজ করতে হয়। তাই বাধ্য হয়েই তারা কোভিট-১৯ এর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে মাঠে ময়দানে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। নকলার কৃষি কর্মকর্তারা এতোদিন নি:শ্চিতে থাকলেও, আজ থেকে তারা অধিক ঝুঁকিতে আছেন বলে তিনি মনে করছেন। তবে নকলা কৃষি অফিসে কর্মরতদের মধ্যে কেউ আতঙ্কিত নয় বলে কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস সুষ্পষ্ট জানান।
শেরপুর খামার বাড়ির উপপরিচালক (ডিডি) ড. কৃষিবিদ মোহিত কুমার দে জানান, নকলায় প্রথম বারের মতো কৃষি বিভাগের কোন এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও) করোনা ভাইরাস এ আক্রান্ত হলেন। এতে অন্যান্য কৃষি কর্মকর্তারা আতঙ্কিত না হলেও, আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির চিন্তায় থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, কোভিট-১৯ আক্রান্ত হলে এতে দু:চিন্তা করার কোন কারন নেই। আইসোলেশন বিধি যথাযথ ভাবে মেনে চললে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেড়ে যায়। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুল হক বাবু দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে কাজে ফিরবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। আসাদুল হক বাবুর রোগ মুক্তির জন্য আসাদুল হক বাবু নিজে ও তার পরিবারের সদস্যগন, জেলা-উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য, ২ জুন (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত নকলা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় উপজেলা থেকে সংগৃহীত নমুনার মধ্যে ৪৭ জনের দেহে কোভিট-১৯ সনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে এক নারী তাঁর রিপোর্ট পাওয়ার আগেই মারা গেছেন এবং বাকিদের মধ্যে প্রায় সকলেই সম্পূর্ণসুস্থ হয়ে ফিরেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মজিবুর রহমান জানান, নকলায় করোনা সংক্রমণ রোগীর সংখ্যার তালিকাতে প্রতিদিন যোগ হচ্ছে। এর কারন হিসেবে তিনি জানান, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। তাই সকলকে মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।