ভালো আলু বীজের অভাবে আগ্রহ হারাচ্ছেন নকলার চাষিরা

potato seed

মোঃ মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর)থেকেpotato-seedঃশেরপুর জেলার নকলা হিমাগারের আলু বীজ চলে যাচ্ছে অন্য জেলায়। চাহিদা মতো ভালো আলু বীজ না পাওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা। উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবছর কমপক্ষে শত একর জমিতে আলু চাষ কমেছে বলে জানালেন কৃষকরা। নকলায় ২ হাজার মে.টন ধারন ক্ষমতা সমপন্ন হিমাগার স্থাপন হওয়ায় কৃষকরা মহা খুশি হয়েছিল। কিন্তু ওই হিমাগারের বীজ অন্য জেলায় চলে যাওয়ায় ভালো বীজের অভাবে নিন্ম মানের বীজ বপণ করতে হচ্ছে নকলার কৃষকদের। তাতে উৎপাদন কম হওয়ায় খুশিতে বাঢা দেখা দিয়েছে, আগ্রহ হারাচ্ছে আলু চাষিরা। কৃষি অফিসের তথ্য মতে উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৭৫০ একর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে বিএডিসি’র বীজ উৎপাদনের জন্য ৩শ’ একর এবং চাষি পর্যায়ে ২ হাজার ৪৫০ একর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বিএডিসি অফিসের মতে, বীজ উৎপাদনের চুক্তি ভিত্তিক চাষিদের জন্য একর প্রতি ১৭ মণ করে মোট ১৮৮ মে. টন বীজ বিভিন্ন হিমাগার থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। আর চাষি পর্যায়ে ২ হাজার ৪৫০ একর জমির জন্য আলু বীজের প্রয়োজন ১ হাজার ৫৪২ মে. টন। কিন্তু নকলা উপজেলার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ১৭ মে. টন। এতে চাষিরা বাধ্য হয়ে চাহিদার অতিরিক্ত ১ হাজার ৫২৫ মে. টন নিন্ম মানের আলু বীজ বপন করছেন। ফলে বরাবরের মতো এবারও উৎপাদণ কম হতে পারে বলে ধারণা করছেন কৃষকরা। নিন্ম মানের বীজ বপণ করায় অনেক সময় আলু ক্ষেতে বিভিন্ন রোগ বালাই আক্রমণ করায় তাদের লোকসান গুণতে হয়। তাই দিন দিন আলু চাষির সংখ্যা ও পরিমাণ কমতে পারে এই মত দিচ্ছেন পুরাতন আলু চাষিরা।

অন্যদিকে উপজেলায় ২২/২৩ জন বীজ ডিলার রয়েছেন। অলুবীজ বরাদ্দ মাত্র ১৭ মে.টন। হিসাব অনুযায়ি প্রতি ডিলার আলু বীজ পায় মাত্র ২০/২১ মণ করে। এতো অল্প বীজের জন্য তারা সময় নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় আলু এনেছে মাত্র ৪/৫ জন ডিলার। বিএডিসি’র চুক্তি ভিত্তিক চাষি ছাইদুল হক ও জুয়েল বলেন, তারা নিয়মিত বীজ পাচ্ছেন , তবে নিজ উপজেলা হিমাগার থেকে বীজ পাওয়াটা যেন ভাগ্যের ব্যাপার। কৃষক পর্যায়ের বিভিন্ন এলাকার আলু চাষি মকুল, হাসেম, বেলাল, কব্দুল, কমল সহ অনেক চাষিরা জানান, চাষি পর্যায়ে নকলার জন্য বরাদ্দ অতি নগণ্য হওয়ায় ভালো বীজের অভাবে উৎপাদন বাড়াতে পারছেন না। ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হেলাল বলেন, নকলা হিমাগারে ২ হাজার মে.টন আলু বীজ সংরক্ষণ করা যায়। আর নকলায় প্রয়োজন হয় ১ হাজার ৫৪২ মে.টন। নকলা হিমাগার হতে নকলার সব চাষিকে বীজ দিলেও অতিরিক্ত থাকে আরও ৪৫৮ মে.টন বীজ। যা অন্য উপজেলা- জেলাতে সরবরাহ করতে কোন বাধা নেই। এবিষয়ে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বীজ বরাদ্দ নগণ্যের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, উপজেলায় আলু বীজ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা উচিত। নকলা হিমাগারের উপ-সহকারি পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, কৃষকদের জন্য বীজ বরাদ্দ ও হিমাগার আঞ্চলিক অফিস থেকে নির্ধারন করে দেওয়া হয়। উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, নকলার চাষিদের জন্য নকলা হিমাগার থেকে আলু বীজ বরাদ্দ করলে পরিবহন খরচ কম হতো। এমন কথার সাথে একমত পোষণ করছেন সুধী জনরাও।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *