নেচে-গেয়ে হাবিপ্রবি ১৩ ব্যাচের “র‍্যাগ ডে” উদযাপন

নেচে-গেয়ে হাবিপ্রবি

নেচে-গেয়ে হাবিপ্রবি

আব্দুল মান্নান,হাবিপ্রবি।।  নেচে-গেয়ে হাবিপ্রবি ঃআনন্দ-উচ্ছ্বাস, রঙে-রূপে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে শিক্ষা সমাপনী উৎসব (র‌্যাগ ডে’র) আনন্দে মেতে উঠেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে শনিবার(২৩ নভেম্বর ২০১৯)  বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক আনন্দঘন পরিবেশে এই শিক্ষা সমাপনী উৎসব (র‌্যাগ ডে) উদযাপন করা হয়।

লাল নয়, কালো নয় শুধু ধবধবে সাদা টি-শার্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটানো বন্ধুদেরও লেখায় ভরে গেছে। কেউ একজন লিখেছে ‘ভালো থেকো বন্ধু’। আরেকজন লিখেছে ‘আর কেউ মনে না রাখুক, তুই রাখিস’। এভাবেই মনের অজানা কথাগুলো প্রিয় সহপাঠীদের সাদা টি-শার্ট লিখে দিয়েছে বন্ধুরা। বিদায় বেলা সেটা দেখে মনে না রাখার কি উপায় আছে? এই হচ্ছে ‘র‌্যাগ ডে’। এই বিশেষ দিবসটি পালন করে  বিনা সুতোয় গাঁথা বন্ধুত্বের অমলিন সম্পর্ককে স্মৃতি পাতায় রাখা প্রয়াস সহপাঠীদের।

ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন নিয়ে দৌড়াদৌড়ি এভাবেই পার হয় জীবনের সব থেকে সেরা দিনগুলো। কখন যে সময় চলে যায় কেউ টেরই পায় না। চার বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেজে উঠে বিদায়ের ঘণ্টা। শীতের সকাল রোদ্রের আনাগোনা আবার ঠাণ্ডা বাতাস শরীরে লাগছে। এমন সময় বিদায় নেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে ঘোড়ার গাড়ি চলে এসেছে। এখন বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু।

“র‌্যাগ ডে” উপলক্ষ্যে শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়ত কেন্দ্র(টিএসসি) এর সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)  ড. হাসানুর রহমান রাজু ও সহকারী পরিচালক মো মমিন সেখ এর উপস্থিতিতে কবুতর উড়িয়ে ‘র‍্যাগ ডে’এর শুভ উদ্বোধন ও কেক কেটে র‍্যাগ ডে’র আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয় । পরে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ ভবনের সামনে সারিবদ্ধভাবে ১৩ লিখা ও ফটোসেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের সমাপ্তি হয়।

 অনুষ্ঠানের শেষ ভাগে ছিল মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ,আতশবাজি,ফানুস উড়ানো ও গ্রান্ড ডিনার পার্টি। স্থানীয় ব্যান্ড শিল্পী ও ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি সারা ক্যাম্পাসকে মাতিয়ে রাখে।  এ সময় বিদায়ী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠেছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। পুরো ক্যাম্পাস জুড়েই ছিলো আনন্দ-উৎসবের আমেজ ।

১৩তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমাদের র‍্যাগ ডে’ এর নাম দিয়েছি অসমাপ্ত-১৩। প্রয়োজনের খাতিরে আমরা হয়তো বিভিন্ন জন বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছি কিংবা যাবো। কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলো যেন অসমাপ্তই থেকে যায়। আজকের এই র‍্যাগ ডে এর মাধ্যমে যেমন সবাই এক্ত্রিত হয়েছি সেটা একদিকে যেমন আনন্দের অন্যদিকে অনুষ্ঠানে শেষে সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো যেটা অনেক কষ্টের। সর্বোপরি,স্মৃতি বিজড়িত বন্ধুত্বের এই বন্ধন আরও অটুট থাকুক এটাই প্রত্যাশা।

ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. হাসানুর রহমান জানান, আজ তোমাদের শিক্ষাজীবন পূর্ণতা পেল। তোমরা দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করবে এ প্রত্যাশা করি। সকলের জন্য শুভ কামনা রইলো।

র‌্যাগ ডে’র মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস জীবনের পথচলার ইতি ঘটে অনেকটা আনুষ্ঠানিকভাবে। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নের পর কেউ উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনে আত্মনিবেশ করেন। আবার কেউ চাকরি জীবনে প্রবেশের মাধ্যমে হাল ধরেন নিজ পরিবারের। কর্মজীবনে প্রবেশের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হন তারা।

Advisory Editor

Advisory Editor of http://www.krishisongbad.com/

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *