বশিরুল ইসলাম
নেপালি শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শেকৃবি
কৃষিতে উচ্চশিক্ষার জন্য যখন বাংলাদেশকে বেছে নিলাম তখন জানতে পারি রাজধানীতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে শিক্ষা ও আবাসিক ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে সহজলভ্য আর তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। ঠিক এমনিভাবে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে ভেটেরিনারি অনুষদের নেপালি শিক্ষার্থী ওম সাগর। এখানে আসার পর তিনি অনুভব করলেন তার সিদ্ধান্ত ভুল ছিলনা।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত দিনগুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ কৃষি অনুষদের ডীন থাকার অবস্থা ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ৯ জন নেপালি শিক্ষার্থী ভর্তি মাধ্যমে বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করেন। ২০১৭ সালে উপাচার্য দায়িত্বগ্রহণের পর আরও উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ফলশ্রুতিতে কৃষিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। কূটনৈতিক জটিলতা নিরসন, ভর্তি প্রক্রিয়া সহজকরণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করায় তারা আগ্রহী হচ্ছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নেপালি ৩৬ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। তাদের মধ্যে ২০১৬ সালে স্নাতকে ৯ জন, ২০১৭ সালে ১০ জন এবং ২০১৮ সালে ১৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
কৃষি অনুষদে শিক্ষার্থী পিংকী কুমারী শাহ বলেন, প্রথমদিকে সবার সাথে যোগাযোগ করতে ও শিক্ষকদের ক্লাস লেকচার বুঝতে কষ্ট হত। পরে সবার ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় বাংলা এবং ইংরেজি ভাষা শিখে ফেলেছি। এখন আর ক্লাশ কিংবা চলাফেরা করতে কোনো সমস্যা হয় না। এরা সবাই সম্মিলিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও উপাচার্যে আন্তরিকতার প্রশংসা করেন।
কৃষি অনুষদে শিক্ষার্থী পূজা মন্ডল বলেন, কৃষি শিক্ষার ভালো মান থাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ তাদের। শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ তাদের মুগ্ধ করে। পাশাপাশি যে কোনো সমস্যায় তারা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেয়ে থাকে বলে তিনি জানান। বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি ব্যাপারে একাডেমিক শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার হরি কমল বলেন, মনোনয়ন প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) পেতে হয়। কোন শিক্ষার্থী এনওসি বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিলেই তার ভর্তি চূড়ান্ত করা হয়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো বাড়তি ফি আদায় করা হয় না। এত অল্প খরচে শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয় বলেই বিদেশিরা এখানে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ জানান, বিদেশী শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশের অতিথি এবং আমরা সেইভাবে তাদের সাথে আচরণ করি। তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আবাসিকতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্মানাধীন হল চালু হলে তাদের আরও ভালো ও উন্নত পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ আরও বলেন, বিদেশী শিক্ষার্থীদের যাতে করে কোনরকম সমস্যা না হয় এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খুবই আন্তরিক এবং তিনি নিজেই সবসময় তাদের খোঁজ খবর রাখেন।
বশিরুল ইসলাম
জনসংযোগ কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত)