পটুয়াখালিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরমুজের ক্ষেত পথে বসছে কৃষক

পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় এ বছরও উল্লেখযোগ্য হারে তরমুজ চাষ হয়েছে। খেত ছেয়ে আছে লতানো তরমুজগাছে। তবে ফল ধরার সময়ই গাছ ঢলে পড়ে মরে যাচ্ছে। এই অবস্থায় খেতেই নষ্ট হচ্ছে তরমুজ। রোগ প্রতিরোধ করতে না পেরে কৃষকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
damage watermelon field
জেলার কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটার মম্বিপাড়া গ্রামের কৃষক বীরেন চন্দ্র জানান, গত বছর তিনি এক একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। ব্যয় হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। তরমুজ বিক্রি করে পেয়েছিলেন ৭০ হাজার টাকা। এ বছরও তিনি এক একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। গাছের লতায় তরমুজ ধরার পরপরই ঢলে পড়ে মরে যাচ্ছে গাছ। এ বছর আসল টাকা ঘরে আসবে কি না, এ নিয়ে চিন্তিত তিনি।
এদিকে গলাচিপার আমখো গ্রামের ভাংড়া গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক আলম গাজী, রাজ্জাক হাওলাদার, সালাম হাওলাদারসহ এলাকার তরমুজচাষিরা তাঁদের খেত দেখিয়ে বলেন, কয়েক দিন আগেও মাঠ সবুজে ছেয়ে গিয়েছিল লতানো তরমুজগাছে। কিন্তু এখন খেতের মাঝে মাঝে ঢলে পড়ে গাছ মরে যাওয়ায় তা উপড়ে ফেলে দিতে হয়েছে। এখনো গাছ ঢলে পড়ে মরে যাচ্ছে। প্রতিবছরই তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন তাঁরা। তবে এ বছর রোগ প্রতিরোধ করতে না পারলে ব্যাপক লোকসানের মধ্যে পড়তে হবে চাষিদের।
এদিকে রাঙ্গাবালী উপজেলার আমলিবাড়িয়া গ্রামের কৃষক কবির পণ্ডিত বলেন, ‘কিছুদিন ধরে লক্ষ করছি, চারা ও তরমুজ মরে যাচ্ছে। গাছ বাঁচাতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়ব।’ ছোটবাইশদিয়া গ্রামের মহিউদ্দিন বলেন, ‘গত বছরের মতো এবারও আমি ১০ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। তবে তরমুজ বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একধরনের অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পটুয়াখালীর উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম মাতুব্বর বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ দেখা দেওয়ার খবর পেয়েই কৃষি কর্মকর্তাসহ মাঠকর্মীদের নিয়ে মাঠ পরিদর্শন করে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে কৃষকেরা উপকৃত হচ্ছেন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম জানান, মাটিতে রোগজীবাণু (ফানজাই উইলট অথবা ব্যাকটেরিয়া উইলট) থাকার কারণে তরমুজের খেতে এ রোগ দেখা দিতে পারে। প্রতি লিটার পানিতে তিন গ্রাম ‘কপার অক্সিফ্লোরাইড’ নামের ছত্রাকনাশক মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিলে এই রোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে। এ ছাড়া তিনি সভা-সেমিনার করে কৃষকদের চাষাবাদে আরও সচেতন করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ফসল রক্ষায় প্রয়োজনে কৃষকেরা তাঁদের কাছ থেকেও পরামর্শ নিতে পারেন।প্রথম আলো।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *