Site icon

কালোজিরার আবাদ পাবনার কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে

Black cumine
কৃষি সংবাদ ডেস্কঃ

উৎপাদন খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় পাবনা-সিরাজগঞ্জে দিন দিন বাড়ছে মসলা জাতীয় ফসল কালোজিরা আবাদ। বর্তমানে চলছে কাটাই-মাড়াই। মাঠ থেকে কালোজিরা সংগ্রহ করে তা ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক-কৃষানীরা। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে কালোজিরার মিষ্টি গন্ধ। অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে এই কালোজিরা চাষ। ফলে চাষিরা ধানের পরিবর্তে কালোজিরা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আগে অনেকে শখের বসে মসলা জাতীয় ফসল কালোজিরা চাষ করতেন। এখন মাঠজুড়ে পরিকল্পিতভাবে এ ফসলের আবাদ হচ্ছে। এ দৃশ্য এখন সবার কাছে অতিপরিচিত। উৎপাদন খরচ কম, ব্যাপক চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে ঔষধি ও ভেষজ গুণসম্পন্ন কালোজিরার চাষ। পাবনা-সিরাজগঞ্জের ১০ সহস্রাধিক কৃষকের পরিবারে নতুন সম্ভাবনা জেগে উঠেছে। কালোজিরা ভাগ্য ফিরিয়েছে এসব মানুষের।

জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে পাবনার সদর, ঈশ্বরদী, আটঘড়িয়া, চাটমোহর, সুজানগর, সাঁথিয়া সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, তাড়াশ, উল্লাপাড়াসহ ১০টি উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ ছয় হাজার একর জমিতে কালোজিরার চাষ করেছেন কৃষক। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় দেড় হাজার একর বেশি। কৃষি বিভাগ প্রতি হেক্টরে কালোজিরা উৎপাদন ধরেছে ৩৫ থেকে ৪০ মণ। সেই হিসেবে এবার ১১৯ মেট্রিক টন কালোজিরা উৎপাদন হবে।

চাষিরা জানান, কার্তিক মাসের শেষের দিকে কালোজিরা চাষের উপযুক্ত সময়। বপনের তিন-চার মাস পর ফসল পাওয়া যায়। পদ্মা যমুনার চরের বেলে-দোআঁশ মাটির পতিত জমি কম টাকায় লিজ নিয়ে অনেকে কালোজিরা চাষ করেছেন। কেউ কেউ উৎপাদিত ফসলে অর্ধেক জমির মালিককে দেওয়ার শর্তে আবাদ করেছেন। কালোজিরা চাষে প্রথমবার বীজ কিনলেই চলে। পরে নিজের খেতের বীজ দিয়েই আবাদ করা যায়। রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। তাই কীটনাশকের খরচ নেই।

বেড়ার আমিনপুর গ্রামের চাষি আজিবর রহমান জানান, প্রতিবিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে কালোজিরা চাষে গড়ে খরচ পড়ে চার হাজার ২০০ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকার মতো। ওই জমি থেকে সাড়ে তিন থেকে চার মণ কালোজিরা পাওয়া যায়। মানভেদে প্রতিমণ কালোজিরা বিক্রি হয় সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় কালোজিরা আবাদ করে লাভ থাকে ১৫ হাজার টাকা। ফলে কয়েক বছর ধরে বাজার চাঙ্গা থাকায় কৃষকরা ধানের পরিবর্তে কালোজিরা চাষে ঝুঁকছেন। অনেকে অন্য ফসলের খেতের আইলে কালোজিরা আবাদ করে বাড়তি উপার্জন করছেন।

বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, ঔষধি ও ভেষজ গুণসম্পন্ন কালোজিরার বহুমুখী ব্যবহার ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করায় কালোজিরার কদর এখন আগের চেয়ে বেশি। ফলে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলায় এখন কম বেশি কালোজিরা আবাদ হচ্ছে।

কৃষির আরো খবরাখবর জানতে আমাদের পেইজে লাইকদিনঃ facebook.com/krishisongbad.com

 

Exit mobile version