ড. এসবি সাহা ও সৈয়দ লুৎফর রহমান
পারশে মাছের প্রজনন ঃ বাংলাদেশে লোনাপানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মধ্যে পারশে একটি জনপ্রিয় এবং বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছ। এ মাছ সাধারণত অগভীর উপকূলীয় জলাশয়ে, খাড়ি অঞ্চলে এবং প্যারাবনের জলাশয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। অধিক লবণাক্ততা ও তাপমাত্রা সহনশীল হওয়ায় উপকূলীয় ঘেরে এ মাছ চাষের জনপ্রিয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পারশে মাছের প্রজনন স্বভাব কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী। প্রাকৃতিক পরিবেশে সাধারণত শীত মৌসুমে (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারী) এ মাছ অধিক লবণাক্ত পানিতে সমুদ্রে প্রজনন করে থাকে এবং পরবর্তীতে জীবনধারণের জন্য পোনা লোনাপানিতে অভিপ্রায়ণ করে। চাষের জন্য বর্তমানে পারশে মাছের পোনার একমাত্র উৎস প্রাকৃতিক জলাশয়। লোনাপানির গুরুত্বপূর্ণ এ মাছের সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চাষাবাদের পদ্ধতি উদ্ভাবনের লক্ষে পাইকগাছাস্থ লোনাপানি কেন্দ্রের বিজ্ঞানিরা গবেষণার মাধ্যমে পারশে মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবনে সফলতা অর্জন করেছেন।
প্রজননক্ষম পারশে মাছের পরিচর্যা
পারশে মাছের প্রজনন শীত মৌসুমে হলেও ডিসেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহ এবং ফেব্রুয়ারির শেষ দুই সপ্তাহ এদের সর্বাধিক প্রজনন হয়ে থাকে। প্রজনন মৌসুমের তিন মাস পূর্বে ৩০-৪০ গ্রাম ওজনের স্ত্রী ও ২০-২৫ গ্রাম ওজনের পুরুষ মাছ প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে সংগ্রহ করে শতাংশে ৭০-৮০ টি হারে লোনাপানির পুকুরে মজুদ করতে হবে। ব্র“ড প্রতিপালন পুকুরের আয়তন ২৫-৩০ শতাংশ ও পানির গভীরতা ১-১.৫ মিটার হওয়া উত্তম। ব্র“ড মাছের পরিপক্কতা আনয়নের জন্য ৩০-৩২% আমিষ সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন মাছের দেহ ওজনের ৫% হারে ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। এছাড়া পুকুরে যথেষ্ট পরিমাণ প্রাকৃতিক খাবার উৎপাদনের জন্য ২.৫ পিপিএম ইউরিয়া ও ৩.০ পিপিএম হারে টিএসপি পনের দিন পর পর প্রয়োগ করতে হবে। প্রজনন মৌসুমে পরিপক্ক স্ত্রী ও পুরুষ মাছ প্রাকৃতিক জলাশয় হতেও সংগ্রহ করে প্রজনন করা যেতে পারে।
প্রজনন কাজে ব্যবহারের জন্য পানি প্রস্তুতকরণ
গবেষণায় দেখা যায় যে, ২৪-২৫ড়সে. তাপমাত্রা এবং ২৮-৩০ পিপিটি লবণাক্ত পানিতে পারশে মাছ সফলভাবে প্রজনন করে থাকে। প্রজননের জন্য প্রাকৃিতক উৎস হতে ২৮-৩০ পিপিটি লবণাক্ত পানি সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে মজুদ করতে হবে। এই লবণাক্ততার পানি প্রাকৃিতক উৎস হতে সহজপ্রাপ্য না হলে কম লবণাক্ত পানির সাথে ব্রাইন মিশ্রণ করে ২৮-৩০ পিপিটি লবণাক্ত পানি তৈরী করা যেতে পারে। এই পানি পরিস্কার করার জন্য প্রথমে বালির ফিল্টারের মাধ্যমে ফিল্টার করতে হবে এবং জীবাণু মুক্তকরণের জন্য ১০ পিপিএম হারে কো¬রিন মিশিয়ে ২-৩ দিন রেখে দিতে হবে। এরপর অবশিষ্ট ক্লোরিন দূরীকরণের জন্য পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে এরেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। পানি ক্লোরিন মুক্তকরণের জন্য প্রয়োজনবোধে পরিমাণমত সোডিয়াম থায়োসালফেট মিশিয়ে পর্যাপ্ত এরেশন দিতে হবে। অধিকতর জীবাণু মুক্তকরণের জন্য ইউভি ফিল্টারের মাধ্যমে পানি ফিল্টার করা যেতে পারে।
পরিপক্ক স্ত্রী ও পুরুষ পারশে মাছ সংগ্রহ ও হ্যাচারীতে অভস্ত্যকরণ
প্রজননের জন্য সঠিকভাবে মাছের পরিপক্কতা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যথাযথভাবে পরিপক্ক না হলে হরমোন প্রয়োগ করলেও মাছ প্রজনন করবে না। সাধারণতঃ পরিপক্ক স্ত্রী মাছের পেট ফোলা ও নরম থাকে এবং জননেন্দ্রীয় গোলাকার ও হালকা লালচে রংয়ের হয়ে থাকে। পেটে হালকা চাপ দিলে জননেন্দ্রীয় দিয়ে হালকা হলুদ রংয়ের ডিম বেরিয়ে আসলে বুঝতে হবে যে স্ত্রী মাছ প্রজননের জন্য তৈরী হয়েছে। অপর দিকে পরিপক্ক পুরুষ মাছের জননন্দ্রেীয় পেটের সাথে মিশানো ও আকারে ছোট থাকে। পেটে হালকা চাপ দিলে পরিপক্ক পুরুষ মাছের জননেন্দ্রীয় দিয়ে সাদা রংয়ের বীর্য্য বের হয়ে আসে।
পুকুর হতে ব্র“ড মাছ সংগ্রহ করে হ্যাচারীতে স্ত্রী ও পুরুষ মাছ আলাদা ট্যাংকে একই পানিতে রাখতে হবে। সাধারণত ব্র“ড মাছের পুকুরের পানির লবণাক্ততা ও তাপমাত্রা কম থাকে। হঠাৎ তাপমাত্রা কিংবা লবণাক্ততার উঠানামা হলে মাছের প্রজননে যাতে ব্যাঘাত না হয় সেজন্য ধীরে ধীরে অধিক লবণাক্ত পানি (ব্রাইন) মিশিয়ে এবং থার্মোষ্ট্যাট সংযোজিত ইলেকট্রিক হিটারের সাহায্যে ব্র“ড ট্যাংকের পানির লবণাক্ততা ও তাপমাত্রা প্রজননের জন্য ব্যবহৃত পানির সমপর্যায়ভুক্ত করতে হবে।
হরমোন প্রয়োগ ও প্রজনন
গবেষণায় দেখা যায় যে, পারশে মাছের কৃত্রিম প্রজননের জন্য এহজঐধ হরমোন বিশেষভাবে কার্যকরী। এই হরমোন তরল কিংবা পাউডার আকারে বিভিন্ন নামে (ওভুপ্্িরম, ওভূলিন, ওভাটিড ইত্যাদি) বাজারে পাওয়া যায়। তবে তরল হরমোন ব্যবহার অধিকতর ফলপ্রদ। পারশে মাছের কৃত্রিম প্রজননের জন্য এই হরমোন সরু সিরিঞ্জের মাধ্যমে স্ত্রী ও পুরুষ মাছের পৃষ্টপাখনার গোড়ায় ২০ মিগ্রা./কেজি মাছের দেহ ওজন হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে। মাছের পরিপক্কতার ওপর নির্ভর করে হরমোন প্রয়োগের পরিমাণ কিছুটা কমবেশী করা যেতে পারে। হরমোন প্রয়োগের পর চারটি পুরুষ ও স্ত্রী মাছ ২ঃ১ অনুপাতে একটি ৫০০ লিটার পানির ট্যাংকে মজুদ করতে হবে। মাছের প্রজননে যাতে ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় সেজন্য হ্যাচারীর পরিবেশ কোলাহল মুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ট্যাংকের পানির তাপমাত্রা যথাযথ পর্যায়ে রাখার জন্য পূর্বের ন্যায় থার্মোষ্ট্যাট সংযোজিত ইলেকট্রিক হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে। হরমোন প্রয়োগের ৩২-৩৬ ঘণ্টা পর বহিসংগমের মাধ্যমে স্ত্রী মাছ ডিম ছাড়ে। নিষিক্ত ডিম স্বচ্ছ এবং আকারে ৭৫০-৮৫০ মাইক্রন হয় এবং ডিমে একটি তৈলের গ্লবিউল থাকে। এজন্য নিষিক্ত ডিম পানির উপরে ভাসমান অবস্থায় থাকে। অনিষিক্ত ডিম অস্বচ্ছ এবং ট্যাংকের তলায় জমা হয়ে। ডিম ইনকুবেশনের জন্য প্রজনন ট্যাংকের পানির একই তাপমাত্রা ও লবণাক্ততাসম্পন্ন আরও একটি পানির ট্যাংক তৈরী করতে হবে। প্রজনন ট্যাংকের ভাসমান ডিমগুলি একটি প্লেটের সাহায্যে ইনকুবেশন ট্যাংকে ২৫-৩০ টি/লিটার ঘনত্বে স্থানান্তর করতে হবে। প্রজনন ট্যাংক এবং ইনকুবেশন ট্যাংকে অবশ্যই এরেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিষিক্ত হওয়ার ১৯-২১ ঘণ্টা পর ডিম হতে মাছের রেণু বের হয়। সদ্য প্রস্ফুটিত রেণু আকারে ২.০-২.৫ মিমি. লম্বা হয়। রেণু বের হওয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ট্যাংকের তলায় জমা হওয়া ডিমের খোসা ও অন্যান্য বর্জ্য সাইফনিং এর মাধ্যমে সরিয়ে ফেলতে হবে।
রেণুপোনা প্রতিপালন
ডিমফুটে রেণু পোনা বের হওয়ার তিন দিন পর ডিম্বথলি নি:শ্বেষ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় রেণু প্রতিপালনের জন্য খাবার সরবরাহ করতে হবে। পারশে মাছের রেণু স্বাদুপানির মাছের রেণুর ন্যায় ডিমের কুসুম খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে না। এ অবস্থায় রেণু পোনা জীবনধারণের জন্য জীবন্ত প্রাণীকণার (রটিফার) ওপর নির্ভর করে। রেণু পোনাকে খাবারের সাথে অভ্যস্থকরণের জন্য ডিম্বথলি নি:শ্বেষ হওয়ার পূর্বেই জীবন্ত রটিফার সরবরাহ করতে হবে। এজন্য হ্যাচারীতে আলাদাভাবে রটিফার চাষ এবং রটিফার এর খাদ্য হিসাবে ব্যবহারের জন্য জীবন্ত উদ্ভিদকণা (ন্যানোক্লোরপ্সিস) চাষের ব্যবস্থা করতে হবে। এক দিন বয়সের রটিফার রেণু পোনা ফোটার ২য়, ৩য় ও ৪র্থ দিন পর্যন্ত যথাক্রমে ৫, ১০ ও ১৫ টি/মিলি., ৫ম দিন থেকে ৯ম দিন পর্যন্ত ২০ টি/মিলি. এবং ৯ম দিন থেকে ২০ তম দিন পর্যন্ত ২০ টি/মিলি. ঘনত্বে যাতে সবসময় পানিতে বিদ্যমান থাকে সেভাবে সরবরাহ করতে হবে। একই সাথে রটিফারের খাবার জন্য ২য় হতে ২০তম দিন পর্যন্ত প্রয়োজনমত ন্যানোক্লোরপসিস সরবরাহ করতে হবে। রটিফার এর সাথে ১৫ তম দিন হতে আর্টিমিয়া নপ্লি এমনভাবে সরবরাহ করতে হবে যাতে ১৫-১৯তম দিন পর্যন্ত ৫টি/লিটার এবং ২০-৩০ তম দিন পর্যন্ত ৫-১০ টি/লিটার সবসময় প্রতিপালন ট্যাংকের পানিতে বিদ্যমান থাকে। এছাড়া ১৭-৩০তম দিন পর্যন্ত ১গ্রাম/টন এবং ৩১-৪০তম দিন পর্যন্ত ৩-৫গ্রাম/টন হিসাবে ৪৫-৫০% আমিষ সমৃদ্ধ ৬০ মাইক্রন সাইজের শুকনা খাবার দৈনিক দু’বার সরবরাহ করতে হবে। ৩০ দিন বয়সের রেণু পোনা ১.৩-১.৭ সেমি. পর্যন্ত হতে পারে। এ অবস্থায় নার্সারীতে পোনা স্থানান্তর করা যায়। তবে এ অবস্থায় নার্সারীতে পোনা স্থানান্তর করলে মৃত্যু হার বেশী হতে পারে। তাই ৪০ দিন পর্যন্ত হ্যাচারীতে প্রতিপালন করার পর ২.০-২.৫ সেমি. সাইজের পোনা নার্সারীতে স্থানান্তর করলে মৃত্যু হার কম হবে। পোনা প্রতিপালন ট্যাংকে সবসময় এরেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তবে ৬-৯ দিন পর্যন্ত এরেশন কমিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় পোনা মরে যেতে পারে।
পানি পরিবর্তন- দৈনিক সাইফনিং এর মাধ্যমে পোনা প্রতিপালন ট্যাংকের তলায় জমা হওয়া বর্জ্য পরিস্কার করতে হবে এবং ট্যাংকের পানির একই তাপমাত্রা এবং লবণাক্ততার পানি দিয়ে ২-১০ম দিন পর্যন্ত ১০%, ১১-২০তম দিন পর্যন্ত ১৫%, ২১-৩০তম দিন পর্যন্ত ২৫% পানি পরিবর্তন করতে হবে। ৩০তম দিন থেকে একই তাপমাত্রার স্বাদুপানি যোগ করে প্রতিপালন ট্যাংকের পানির লবণাক্ততা ধীরে ধীরে কমিয়ে নার্সারী পুকুরের পানির সমপর্যায়ে আনতে হবে।
পারশে মাছের নার্সারী ব্যবস্থাপনা
নার্সারী পুকুর প্রস্তুতি- নার্সারী পুকুরের আয়তন ৫-১০ শতাংশ হওয়া বাঞ্ছনীয়। নার্সারী পুকুরের পানির লবণাক্ততা ০৩-১০ পিপিটির মধ্যে হলে ভালো হয়। তবে এর থেকে সামান্য কম বা বেশী লবণাক্ত পানিতেও রেণুপোনা লালন-পালন করা যেতে পারে। পুকুরের পানির গভীরতা ০.৬-০.৮ মিটার, পিএইচ ৭.৫-৮.৫ এবং দ্রবীভূত অক্সিজেন ৪-৬ পিপিএম থাকলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। পুরাতন পুকুরের ক্ষেত্রে পানি সম্পূর্ণ সেচে ফেলে রৌদ্রে ভালোভাবে শুকিয়ে অতিরিক্ত কাদামাটি তুলে ফেলতে হবে। নার্সারী পুকুরে যাতে পোনার জন্য ক্ষতিকর কোন প্রাণী (সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদি) না থাকতে পারে বা প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য পুকুরের চারদিকে নাইলন নেটের বেড়া দেয়া প্রয়োজন। পুকুর প্রস্তুতির সময় মাটিতে প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগের পর সূক্ষ ছিদ্রযুক্ত নাইলনের জাল দিয়ে ছেঁকে নার্সারীতে পানি প্রবেশ করাতে হবে। নার্সারী পুকুরে পোনার প্রাকৃতিক প্রাথমিক খাদ্য তৈরীর জন্য প্রতি শতাংশে ৭৫০ গ্রাম খৈল, ৪০গ্রাম ইউরিযা এবং ৬০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের পর পানিতে জন্মানো হাঁস পোকা এবং বড় আকারের প্রাণিপ্ল্যাংটন ধ্বংস করতে হবে। এজন্য পানিতে ১-১.৫ পিপিএম হারে ট্রাইক্লোরফন (ডিপটারেক্স) প্রয়োগ করা যেতে পারে। সার প্রয়োগের ৪-৫ দিন পর নার্সারী পুকুর পোনা মজুদের জন্য উপযুক্ত হবে।
পুকুরে পোনা মজুদকরণ- নার্সারী পুকুরে ২.০-২.৫ সেমি. আকারের রেণু পোনা প্রতি শতাংশে ৮,০০০-১০,০০০ টি হারে মজুদ করা যেতে পারে। পোনা সকালে কিংবা সন্ধ্যায় মজুদ করতে হবে। মজুদের সময় নার্সারী পুকুরের পরিবেশের সাথে পোনাগুলোকে ধীরে ধীরে অভ্যস্থকরণ করে নিতে হবে।
পোনা মজুদ পরবর্তী নার্সারী ব্যবস্থাপনা- পোনার বৃদ্ধি ও পানির প্রাথমিক উৎপাদনশীলতার ওপর ভিত্তি করে পুর্বে উল্লিখিত পরিমাণের অর্ধেক পরিমাণ সার এক সপ্তাহ পরপর প্রয়োগ করতে হবে এবং নিয়মিত পানির বিভিন্ন গুণাগুণ পরীক্ষা করতে হবে। পোনা মজুদের দ্বিতীয় দিন থেকে ১ম সপ্তাহে প্রতি দশ হাজার পোনার ৬ কেজি হারে ৮০-১০০ মাইক্রন সাইজের ৪০% আমিষসমৃদ্ধ খাবার দিনে দুইবার প্রয়োগ করতে হবে। পরবর্তীতে দৈনিক ২ কেজি হারে খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এভাবে ২১-২৭ দিন পর্যন্ত নার্সারীতে পোনা লালন-পালন করার পর পোনা ৩-৪ সেমি. লম্বা হবে এবং এ অবস্থায় পোনা চাষের জন্য মজুদ পুকরে স্থানান্তর করা যাবে।
পরামর্শ
১ পারশে মাছের প্রজননের জন্য হ্যাচারীতে সব ধরণের পানির সমান তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা বজায় রাখতে হবে।
২ পোনা উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত সকল আসবাবপত্র এবং উপকরণসমূহ জীবানুমুক্ত রাখতে হবে।
৩ ব্র“ড মাছ কিংবা পোনা যাতে কোনভাবেই পীড়িত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রজনন মৌসুমে ব্র“ড মাছের পরিচর্যার ক্ষেত্রে বিশেষ যতœবান হতে হবে।