কৃষি সংবাদ ডেস্ক : কৃষকরা দেশের প্রাণ। কঠোর পরিশ্রম করে উৎপাদন করেও ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থার অভাবে। এছাড়া কৃষিখাতে সফল গবেষণার জন্য আজ দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ খাতে আরো বেশি গবেষণা প্রয়োজন।
গত কাল মঙ্গলবার ১৫/৩/১৬ তারিখ আগারগাঁও সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার(এনজিও)প্রতিনিধিরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এতে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব তরিকুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের রীনা রায়, বেসরকারি সংস্থা আশার জ্যেষ্ঠ ডেপুটি প্রেসিডেন্ট আবদুল আজিজ, গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অনুষ্ঠানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তাখাত নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করে উন্নয়ন-কর্মীরা বিভিন্ন প্রস্তাবনাও তুলে ধরেন।আশার প্রতিনিধি আব্দুল আজিজ বলেন, আগামী বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বেশি জোর দিতে হবে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ওষুধের কাঁচামাল আমদানির ট্যাক্স ২৫শতাংশ কমানোয় দেশে ওষুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি স্বাস্থ্য খাতে বাজেট কমিয়ে ভালো করেছেন। আমাদের যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অকারণে এখানে টাকা ঢেলে লাভ নাই। তবে স্বাস্থ্য খাতে যে বাজেট দেওয়া হচ্ছে তা পর্যাপ্ত না হলেও অপব্যবহার করা হচ্ছে। আপনি ডাক্তারদের চাকরি দিচ্ছেন, বেতন বাড়াচ্ছেন। কিন্তু তারা কেউ গ্রামে থাকছে না। তাদের গ্রামে অবস্থানের বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে ট্যাক্স কমানোয় আপনাকে (অর্থমন্ত্রী) ধন্যবাদ। এটি অবশ্যই একটি পজেটিভ অগ্রগতি আনবে। তবে ওষুধের দাম আরো কমানোর প্রয়োজন।’এ সময় তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, এখন বাজারে একটা ক্যানসারের ওষুধের দাম ১ হাজার ৮০০টাকা। এই ওষুধের উৎপাদন খরচ ৫০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। এ জন্য সরকারকে ১৯৮২ সালের ওষুধনীতি অনুসরণ করে ওষুধের দাম কমানোর দিকে নজর দিতে হবে।সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বিষয়ে মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রমে সমন্বয় থাকা জরুরি বলে মনে করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম।তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ফলে কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দরকার। এ জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার, যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাসহ যাবতীয় সুযোগ রাখা উচিত।
অক্সফামের প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম বলেন, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩১ শতাংশ যুবসমাজ। প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে এই যুব সমাজকে কাজে লাগাতে হবে। উৎপাদকরা বিশেষ করে কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। এক কেজি ধান উৎপাদন করতে ২৩ টাকা খরচ হচ্ছে অথচ বিক্রি করতে হচ্ছে ১৪ টাকায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। তাই জলবায়ু মোকাবেলায় বাজেট আলাদা বরাদ্দ রাখা উচিত।নগর গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিনিধি ড. নজরুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার এত উন্নয়ন তার পিছনে রয়েছে গবেষণা। কোনো পদক্ষেপকে কার্যকর করার আগে গবেষণা প্রয়োজন। আমরা কৃষি খাতে সফল গবেষণার জন্য আজ দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে গবেষণা খাতে সরকারের আরো বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন আছে।