বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগডে পালন : দেখা হবে বন্ধু কারণে বা অকারণে

আবুল বাশার মিরাজ,বাকৃবি থেকেBAU Rag Day Pic-1
নিজেদের মেধার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটিয়ে কৃষিশিক্ষা ও গবেষণায় অবদান রাখার লক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ভর্তি হয়েছিলাম চার বছর আগে। এক এক করে ৪ টি বছর পার করে দিলাম এবং শেষ করে ফেলল কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি (ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং) অনুষদে স্নাতক পাঠ। এই ৪ বছরে ক্যাম্পাসের আনাচে কানাছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কত মজার স্মৃতি আনন্দ বেদনার বিভিন্ন ঘটনা। আনন্দ বিনোদনের সুযোগ খুব একটা বেশি হয়ে উঠেনি, কারণ পড়ালেখার অতিরিক্তি চাপে সেদিকে লক্ষ করার সময় হয়ে উঠেনি কারোরও আবার অন্যদিকে স্বপ্ন ভাল খাদ্য প্রকৌশলী তথা ফুড ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তাই হাজার ইচ্ছা থাকলেও ক্লাসের সবাই মিলে কখনই মজা করা হইনি। আবার স্নাতক পাশ করার পর ক্লাসের বিভিন্ন জন বিভিন্ন বিভাগে কিংবা অন্য কোথাও স্নাতককোত্তর ডিগ্রী নিবে। ফলে আর কোন দিন একসাথে ক্লাস, মজা করা হয়ে উঠবে না। তাই স্নাতক পাশ করার পর ক্লাসের সবাই মিলে মেতে উঠে পাঠ সমাপনী উৎসব তথা র‌্যাগ ডে নামক মহানন্দে। এভাবেই চার বছরের বিভিন্নস্মৃতির কথা বলছিল বাকৃবির স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এরই ধরাবাহিকতায় মনন’১২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা র‌্যাগ ডের আনন্দে মেতে উঠেছে ফুড উঞ্জিনিয়ারিং ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। সাধারণত ক্লাস শেষের দিনে হয়ে থাকে র‌্যাগ ডে। র‌্যাগ ডে সাধারণত এক বা একাধিক দিনের জন্য হয়ে থাকে। র‌্যাগ ডে পালনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার আর্থিক সাহায্য দেন না। তাই সবার চাঁদা দিয়েই পালন করা হয় এ মহা উৎসবের। র‌্যাগ ডে’র উৎসবে থাকে দিনভর আনন্দ, রং ছুঁড়া-ছুঁড়ি, বাদ্যযন্ত্রের তাল, নাচ, আড্ডা, গান, ট্রাকে চড়ে আনন্দ র‌্যালী, সাইকেল ভ্রমণসহ বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সবাই একসাথে মিলে খাওয়া দাওয়া করা, কী থাকে না র‌্যাগ ডের আয়োজনে। র‌্যাগ ডেতে অনুষদের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা মাতিয়ে তোলে পুরো ক্যাম্পাসকে। সকল শিক্ষার্থীদের গায়ে থাকে র‌্যাগ ডের এর স্লোগান সম্বলিত সাদা টি-শার্ট, প্রত্যেকটি র্টি-শার্টে ক্লাসের সকলের স্বাক্ষর করা থাকে এবং কপালে বাঁধা থাকে সবুজ ফিতা। বের করা হয় বিশাল আকারের আনন্দ র‌্যালী। এতে থাকে নানা রঙের ব্যানার, ফেষ্টুন, স্থানীয় ঐতিহ্যের চিত্র বহনকারী বিভিন্ন সামগ্রী। আনন্দ র‌্যালীতে শিক্ষার্থীরা নানান রঙে, নানান ঢং-এ বাদ্যের তালে তালে নেচে গেয়ে মুখরিত করে তুলে পুরো ক্যাম্পাসকে। রুবায়েত, আবীর ,বিজয়, জনি. ফাহাদ, বৃষ্টি, মৌসুমী, অন্তরা, শ্রেয়সী র‌্যাগ ডে নিয়ে তাদের অনুভূতির কথা ব্যাক্ত করে বলেন, ভীষণ আনন্দ লাগছে ঠিকই কিন্তু তার মাঝেও খানিকটা বেদনা লুকিয়ে আছে, আর সেটা হচ্ছে ভালবাসার বাকৃবি ক্যাম্পাসকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানের পুরো আয়োজন ভালভাবে সম্পন্ন করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এবং সেইসাথে চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া। এছাড়াও আয়োজন করা হয় ফুটবল খেলা, বিভিন্ন মজার ইনডোর গেমস, ফ্যাশন শো ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সবশেষে ‘দেখা হবে বন্ধু কারণে বা অকারণে…’ এরকম কিছু মধুর গানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আনন্দঘন র‌্যাগ ডে উদযাপন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *