বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিতঃ “জল আছে যেখানে, মাছচাষ সেখানে”

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ

 

Fish Rally Pic-3
মো. ইউসুফ আলীঃ
বর্তমানে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনের দিকে দিয়ে এখন চতুর্থ অবস্থানে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে মাছের উৎপাদন দাঁডিয়েছে ৩৬.৮৪ লক্ষ মেট্রিক টন। পুকুর বা জলাশয়ে চাষের মাধ্যেমে মোট উৎপাদিত মাছের মাছের ৫৫ দশকি ১৫ শতাংশ। নদী বা খাল-বিলের মতো উন্মুক্ত জলাধার থেকে আসে ২৮ শতাংশ মাছ। তবে দেশের বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূল থাকলেও উৎপাদস হয়েছে হয়েছে মাত্র ১৭ ভাগ। মৎস্য চাষের সাথে বর্তমানে প্রায় ২কোটি লোক জড়িত। মৎস্য সেক্টরের সাথে সরাসরি দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ১১ ভাগেরও বেশী মানুষ জড়িত। প্রতি বছর প্রায় ৬ লক্ষ লোকের নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবছর গড়ে ১৯ কেজি করে মাছ খাচ্ছে। এদেশের মানুষের প্রাণীজ আমিষের চাহিদার শতকরা ৬০ ভাগ পূরণ হচ্ছে মাছে থেকে। ১০ বছর আগেও এটি ছিল ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ।

সম্প্রতি ১৯-২৫ জুলাই পালিত হল জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৬। দেশ ব্যাপী নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ ব্যাপী পালিত হল জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ। তারই ধারারবাহিকতায় গত ২৫ জুলাই সোমবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে সোমবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৬ উদযাপিত হয়েছে।“জল আছে যেখানে, মাছচাষ সেখানে” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মৎস্য র‌্যালি, মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মত বিনিময় সভার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেছে দেশে মৎস্য শিক্ষা ও গবেষণার আঁতুরঘর মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার সকাল ১১ টায় মৎস্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মপুত্র নদের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে মৎস্য খামারের উদ্যোগে ব্রাহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি.সি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর র‌্যালির শুভ উদে¦াধন ও মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। পোনা অবমুক্ত শেষে ১২ টায় মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে মত বিনিময় সভায় আয়োজন করা হয়। অনুষদীয় ডিন অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ড.ইয়াহিয়া মাহমুদ, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সচ্চিদানন্দ দাস চৌধুরী। ওই সময় অনুষদীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, হ্যাচারী মালিক ও মৎস্য চাষীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ভি.সি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা মাছে ভাতে বাঙালী। মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের লক্ষে ১৯৬৭ সালে বাকৃবিতে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ চালু হয়। মৎস্যবিদদের নিরলস চেষ্টায় আজ আমরা মাছ উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ। বিএফআরআই মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, বর্তমানে প্রতি বছরে আমাদের মাছের উৎপাদন প্রায় এক লক্ষ থেকে সোয়া লক্ষ টন। আগামী ১৯ সালে মৎস্য সম্পদে আমরা স্বয়ংসম্পর্ণ হব। মৎষ্য সম্পদ উন্নয়নে বাকৃবির আবদান অনস্বীকার্য। মৎস্য চাষের সাথে বর্তমানে প্রায় ২কোটি লোক জড়িত। প্রতি বছর প্রায় ৬ লক্ষ লোকের নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে মৎস্য উৎপাদনে আমাদের অবস্থান চতুর্থ থেকে ১ম স্থানে আসবে। সভাপতির বক্তব্যে অনুষদীয় ডিন অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ মৎস্য বিজ্ঞানী তৈরির মাধ্যমে মাছের উৎপাদনে বিপ্লব সাধিত করেছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও মাছের চাহিদা বৃদ্ধির হিসাবে ২০২১ সালের মধ্যে সরকার যে ৪৫ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদননের লক্ষমাত্র স্থির করেছে তা অর্জন করা সহজ হবে।

কৃষির আরো খবরাখবর জানতে আমাদের পেইজে লাইকদিনঃ facebook.com/krishisongbad.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *