কারেন্ট পোকার আক্রমনে
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির:বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে-শরণখোলায় চলতি আমন মৌসুমে আমন ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে ফসলহানীর আশংকা দেখা দিয়েছে। সচেতনাতায় কৃষি দপ্তরের মাইকিং লিফলেট বিতরণ। ধান কাটার পূর্ব মুহুর্তে স্বপ্ন ছাই হবে ৬৫ হাজার কৃষকের।
সরেজমিনে মোরেলগঞ্জে-শরণখোলায় উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন নিশানবাড়িয়া, জিউধরা, বারইখালী ও বহরবুনিয়া,ধানসাগর ,খোন্তাকাটা ,রায়েন্দা ও সাউথখালী ইউনিয়নের চলতি আমন মৌসুমে এবারে ৭ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে কৃষক আমন ধানে চাষাবাদ করেছেন। সমস্ত মাঠ জুড়ে মাঠের পর মাঠ সোনালী ফসলের সমারহ। কৃষকের মুখে হাসি দেখা দিলেও আজ তাদের সেই কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কিনা আশংকায় রয়েছেন তারা।
আর মাত্র ২/৩ সপ্তাহের পরে এ এলাকার প্রতিটি কৃষক তাদের কাঙ্খিত আমন ধান কেটে ঘরে তোলার কথা। হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে এ ইউনিয়নগুলোর অধিকাংশ ফসলি জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমন।
কথা হয় কৃষক অরুন হালদার, বিপ্লব মাঝি, মোজাম্মেল শেখ, আবুল কালাম, এনায়েত করিম ফকির সহ একাধিক কৃষকের সাথে তারা বলেন, একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারনে অন্য কোন ফসল উৎপাদন করতে পারেনা তারা। বছরের এ আমন মৌসুমের ওপর নির্ভরশীল পরিবার পরিজনের খোরাখ মিটিয়ে বাকি ধান বিক্রি করে চলতে হয় কৃষকদের। গত বছরের এ কারেন্ট পোকার ফসলহানি ক্ষতি পুশিয়ে উঠত না উঠতেই এ বছরেও দেখা দিয়েছে এ পোকা। এ যেন মরার ওপর খরার ঘা।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়গুলোর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাচ্চু, শফিকুর রহমান লাল, জাহাঙ্গীর আলম বাদশা, রিপন তালুকদার জানান, এ কারেন্ট পোকার আক্রমনের বিষয়টি কৃষকরা তদের জানিয়েছেন। সরকারিভাবে কৃষকদের বিনামূল্যে প্রতিশোধক কীটনাশক সরবরাহ করে ফসল রক্ষা জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানান তারা।
এ দিকে কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে ২২৫০ হেক্টর জমিতে ৩৩৫০ কৃষক, জিউধরায় ১৪৫০ হেক্টর জমিতে ৩৩৫০, বহরবুনিয়ায় ১৭শ’ হেক্টর জমিতে ২৮৫০ ও বারইখালীতে ১৭১০ হেক্টর জমিতে ৩৩শ’ কৃষক আমন ধান উৎপাদন করেছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ফসলের বাদামি গাছ ফড়িং ও কারেন্ট পোকার প্রার্দুভাব দেখা গিয়েছে।
সে ক্ষেত্রে কৃষি অধিদপ্তর পূর্ব মুর্হুতে প্রস্তুতি স্বরুপ এ কারেন্ট পোকার প্রতিরোধে প্রতিশোধকের ক্ষেত্রে কীট ভাইপার, প্লেনামসহ ওষুধ ব্যবহারের জন্য কৃষকদের উদ্ভুদ্যকরন করনীয় বিষয় সর্তক বার্তা মাইকিং, কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার রেহানা পারভীন।আপর দির্কে শরণখোলাউপজেলার আমড়াগাছিয়া, উত্তরতাফালবাড়ী, দক্ষিণ রাজাপুর, কদমতলা, নলবুনিয়াসহ অন্যান্য এলাকায় পোকা দমনে করণীয় সম্পর্কে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।
শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়াসীম উদ্দিন জানান, উপজেলার অল্পবিস্তর এলাকায় কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিলেও তা এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। পোকার খবর পেয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তরা অনেক আগে থেকেই গ্রামে গিয়ে কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় ওষুধ প্লেনাম, পাইরাজিন স্প্রেসহ আলোরফাঁদের পরামর্শ দিয়েছে তাতে সুফল পাওয়া গেছে। পোকা দমন হয়েছে বলে ওই কৃষি কর্মকর্তা জানান।