কৃষিসংবাদ ডেস্কঃ কবুতর পালনে স্বাবলম্বী
যশোরের শার্শায় বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন পাঁচ শতাধিক যুবক। এখন তাদের দেখে এ কাজে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন আরো হাজারো যুবক। সেই সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যাও।ওই এলাকার বিভিন্ন দোকান, শোরুম ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও চলছে এসব কবুতর কেনাবেচা। প্রতি জোড়া কবুতর বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকায়।
উপজেলার যাদবপুর গ্রামের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান মন্টু দুবছর আগে সখের বসে ১০ হাজার টাকার কবুতর কিনে পালন শুরু করেন। আজ তার খামারটি উপজেলার সবচাইতে বড় কবুতরের খামার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ৮০টি বড় খাঁচায় পালন করা হচ্ছে বিদেশি জাতের তিন’শ কবুতর।
মন্টু জানান, বর্তমানে তার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ টাকায়। বিদেশি জাতের প্রতিটি কবুতর ২১ দিনের মাথায় দু’টি করে ডিম দেয়। এই ডিম থেকে দেশি কবুতরের মাধ্যমে বাচ্চা ফোটানো হয়। বিক্রি করার কলাকৌশল সম্পর্কে তিনি জানান, স্মার্টফোনের মাধ্যমে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে বিক্রি করেন বেশিরভাগ কবুতর। এতে ক্রেতা ও লাভ দুটিই ভালো পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ জানান, অল্প পুঁজি ও স্বল্প জায়গা নিয়ে কবুতর পালন করা যায়। কবুতর পালন এখন লাভজনক হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৫৭০ যুবক বাণিজ্যিকভাবে ২০ জাতের কবুতর পালন করছেন। এখানে দেশিয় কবুতরের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশি জাতের ৮ হাজার ডিমপাড়া কবুতর রয়েছে।
শান্তির প্রতীক এই কবুতরের নামগুলোও বেশ সুন্দর। পালিশ আউল, মুক্কি, বিউটি ডোমার, নান, শটফেজ, নাল এসব বিদেশি জাতের কবুতরের দাম প্রতি জোড়া ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। দেশিয় উন্নত প্রজাতির লক্ষা, গ্রিবাজ, লোটন, সিরাজী, ময়ূরী, জিলানী, পরশ, শোয়া, চন্দন, ক্যাপটান, র্যান, রান, বাজরিকা, মনিরা, কালদম, কিং ও সিলভার সিরাজী জাতের প্রতি জোড়া কবুতরের দাম দুই হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা।
![](http://www.ittefaq.com.bd/assets/images/news_images//2016/02/10/for_details/1455101007_0.jpg)
শার্শার পান্তাপাড়া গ্রামের সাহেব আলি জানান, তার খামারে লক্ষা, গ্রীবাজ, লোটন, সিরাজী, ময়ূরী ও সিলভার সিরাজী জাতের ৫০টি কবুতর রয়েছে। দেশিয় সাধারণ জাতের চাইতে এই সব কবুুুুতরের দাম ও চাহিদা দুটোই বেশি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে পাখি প্রেমীরা আসেন বিদেশি জাতের এইসব কবুতর সংগ্রহ করতে। সখের বশে দু’শো টাকা পুঁজি নিয়ে কবুতর পালন শুরু করলেও আজ বাণিজ্যিকভাবে পথ চলতে শুরু করেছি। আমার খামারে প্রায় দুই লাখ টাকার কবুতর রয়েছে। প্রতিটি মেয়ে কবুতর বছরে অন্তত ২০টি বাচ্চা দেয়। রোগ বালাই কম হওয়ায় এদের পেছনে খরচও কম। তাই এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।
এক জোড়া দেশিয় প্রজাতির কবুতর কিনে তিন বছর আগে এই পেশায় আসেন শার্শার শ্যামলাগাছি গ্রামের সোহাগ হোসেন। সোহাগ বলেন, তার খামারে এখন বিভিন্ন প্রজাতির দেড়’শ কবুতর রয়েছে। বেনাপোলের কবুতর ব্যবসায়ী সুজন আলী ও নাভারনের আরসাদ আলী বলেন, কবুতরের বেচাবিক্রি ভালো। এটি একটি লাভবান ব্যবসা। ইত্তেফাক।।
কৃষির আরো খবরাখবর জানতে আমাদের পেইজে লাইকদিনঃ facebook.com/krishisongbad.com
বর্তমানে কবুতর পালন পোষা পাখি কিংবা শখ থেকে বের হয়ে তা এখন স্বাবলম্বী কিংবা বানিজ্যিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর সেক্টর বিস্তৃতি রয়েছে। কবুতর সম্পর্কে এই বিষয়টি অনেক ভাল হয়েছে।