Site icon

জেনে নিন অ্যাকুরিয়ামে বাহারি মাছের পরিচর্যা ও রোগ ব্যধিতে করনীয় নানা বিষয় (২য় পর্ব)

অ্যাকুরিয়ামে বাহারি মাছের পরিচর্যা

নাহিদ বিন রফিক

(২য় পর্ব)

অ্যাকুরিয়ামে বাহারি মাছের পরিচর্যা
বাহারি মাছের অধিকাংশই বিদেশী। এ ধরনের মাছের মধ্যে গোল্ড ফিশ অনন্য। ওরা শান্ত প্রকৃতির হয়। দেহের গঠন অনুযায়ী গোল্ড ফিশ দু’ধরনের। লম্বা ও ডিম্বাকৃতি। এগুলো হলো: রুইকিন, ওয়াকিন, জাইকিন, কমেট, ওরান্ডা, ফান্টাইল, রানচু, ব্লাক মোর, ভেইল টেইলসহ আরো শতাধিক। অন্য মাছের মধ্যে এ্যানজেল, টেট্রা জেব্রা, এলিফ্যান্ট নোজ, ক্যাট ফিশ, সাকিং ক্যাট, সিলভার শার্ক, রেইনবো শার্ক, টাইগারশার্ক, এলবিনো শার্ক, টেলিচো, অস্কার, অ্যারোনা, ফ্লাওয়ার হর্ণ, হাইফিল নোজ, ব্লাক গোস্ট, ব্লু আকারা, ব্লু গোড়ামি, কিসিং গোড়ামি, রোজি বার্ব, টাইগার বার্ব, ফাইটিং ফিশ, সোর্ড টেইল, ব্ল্যাক মলি, ব্ল্যাক অরেন্ডা, গ্লাসফিশ, টাইগার বাথ, রেইনবো অন্যতম। আর দেশী প্রজাতির মধ্যে রয়েছে খলিশা, পুঁটি, চান্দা, মলা, পটকা, টেংরা, বেলে, কৈ, চিংড়িসহ ছোটজাতীয় মাছ। এক সময় থাইল্যান্ড, চীন, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশ থেকে মাছের পোনা আমদানি হতো। এখন অধিকাংশ পোনা এদেশেই উৎপাদন হয়।

মাছের খাদ্য
মাছের ওজনের প্রায় ৫% হারে সকাল বিকাল দু’বার খাবার দিতে হয়। এজন্য শুকনো টিনজাত, প্যাকেটজাত এবং প্রাকৃতিক খাবার রয়েছে। শুকনো খাদ্যের মধ্যে আছে আটা, ময়দাসহ অন্যান্য খাদ্যশস্যের মিহি গুঁড়া। টিনজাত খাবারের মধ্যে সিদ্ধ নরম সবজি, চিংড়ি, লবস্টার, বিভিন্ন প্রাণীর হৃৎপিন্ড, যকৃত, কিডনি এবং ডিমের কুসুম। আর প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন- এককোষী প্রাণী, কেঁচো, প্লাংকটন, লার্ভা ও টিউবিফেক্স। এছাড়া বাজারে কৃত্রিম খাবারও পাওয়া যায়।

অন্যান্য
অ্যাকুরিয়ামে বায়ু সঞ্চালন অত্যাবশ্যক। তাই কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে। অ্যাকুরিয়ামের সৌন্দর্য বাড়াতে এর তলদেশের মাটি দিয়ে পাহাড়, পর্বত, নালা এসব তৈরি করা যায়। এছাড়া শামুক কিংবা ঝিনুকের খোল অথবা চীনা মাটির টুকরো দিয়েও সাজাতে পারেন।

পরিচর্যা
মাছের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধি বজায় রাখতে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। এর অবহেলায় মাছের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। পানির রঙ ঘোলাটে, লাল বা সবুজ বর্ণ কিংবা গন্ধ বের হলে সাথে সাথে পরিবর্তন করা উচিত। এ কাজ সপ্তাহে একদিন করলে ভালো হয়। প্রথমে মাছগুলো একটি পানির পাত্রে রাখতে হবে। এরপর একটি লম্বা রাবারের পাইপ অ্যাকুরিয়ামের তলদেশে রেখে মুখ দিয়ে একটু বাতাস টেনে ছেড়ে দিয়ে নিচে রাখা খালি বালতি বা পাত্রে পানি রাখতে হবে। এরপর পুনরায় পরিষ্কার পানি দিতে হবে। পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে পুকুর কিংবা নলকূপের পানি ব্যবহার করা যাবে। তবে আয়রণের পরিমাণ বেশি হলে পানি অবশ্যই ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিয়া উচিত। পানিতে অ্যাকুরিয়ামসল্ট মিশানো উত্তম। শীতে অ্যাকুরিয়ামের পানি সাধারণত ঠান্ডা থাকে। তাই এ সময় ডুবন্ত হিটার ব্যবহার করতে হবে। অ্যাকুরিয়ামে পাথর কুঁচির নিচে ওয়েটডাস্ট ফিল্টার স্থাপন করতে হয়। এর সাথে এয়ার এক্সিকিউটর রাখতে হবে। এর মাধ্যমে যখন বাতাস বের হবে তখন ঊর্ধ্বচাপের সৃষ্টি হবে। ফলে ময়লাগুলো ধীরে ধীরে ফিল্টারের নিচে জমা হবে। এজন্য যন্ত্রটি সবসময় চালু রাখা দরকার।

Exit mobile version