মোঃ মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর) :
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে আলু চাষীরা চিন্তিত
দুই দিনের টানা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে শেরপুরের নকলা উপজেলার আলু আবাদে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করেছেন কৃষকরা। জমিতে বৃষ্টির পানি জমে রোপণ করা আলু বিনষ্ট হওয়ার আশংকায় চিন্তিত হয়ে পড়ছেন তারা।
চরমধুয়া ব্লকের কৃষক মোঃ মজনু মিয়া ও সফিক; বানেশ্বরদীর জুয়েল, ভূরদী গ্রামের ছাইদুল, কামাল ও মকুলসহ অনেকেই জানান, তাদের কিছু ক্ষেত আলু রোপনের জন্য তৈরি করা হলেও অসময়ের গুড়ি গুড়ি টানা বৃষ্টিতে জমির জোঁ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। আরো দুই এক দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে রোপনকৃত জমির সব আলুই পচে যাবে। তাতে অপুরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আলুর সাথী ফসল ভূট্টা এবং যে আলু গাছ সামান্য বড় হয়েছে সেগুলোর উপকার হবে বলে জানান তারা।
এবিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা জানান, দুই দিনের টানা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি না জমাতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ছত্রাক জনিত নাবীধসা (লেট ব্লাইট অব পটেটো) রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। তাই কৃষকদের আগাম পরামর্শ দেওয়া শুরু করেছেন তারা। কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর জানান, কৃষকের আলু ক্ষেতকে ছত্রাক নাশক রোগ থেকে বাঁচাতে তারা ডাইথেন এম ৪৫, রিডোমিল গোল্ড, জ্যাজ প্রয়োগ করাসহ দ্রুত পানি নিষ্কাশনের আগাম পরামর্শ দিচ্ছেন। তাছাড়া বর্দো মিকচার (কপার সালফেট ঃ চুন ঃ পানি=১ ঃ ১ ঃ ১০) ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। বর্দো মিকচার কৃষকরা নিজেরাই ঘরোয়াভাবে প্রস্তুত করতে পারেন, তাই এটাতে কৃষকদের তেমন খরচ হয়না; কিন্তু ভালো সুফল পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বিএডিসি’র আওতায় ৩০০ একর জমিতে এবং কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের আওতায় এক হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। তাতে এক হাজার ৮০০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তাগন।
বিএডিসি নকলা হিমাগারের উপ-পরিচালক (টিসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ২৫ টি ব্লকে গড়ে দুইজন করে মোট ৫০ জন আলু চাষী নির্বাচন করে ৩০০ একর জমিতে ২০৪ মেট্রিকটন বিএডিসি’র আলু লাগানো চলছে। উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে ২৪০ একর জমিতে বিএডিসি আলুবীজ লাগানো শেষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর জানান, চলতি মৌসুমে এক হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে কৃষকরা আজ পর্যন্ত এক হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আলু লাগিয়েছেন। বাকি জমি আলু লাগানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল, বৃষ্টির কারনে জোঁ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় লাগাতে সামান্য দেরি হতে পারে।