মধুমতিতে অবৈধ জাল দিয়ে নিধন হচ্ছে জাটকা সহ দেশি প্রজাতির মাছ

মধুমতিতে অবৈধ জাল

মাছের ঘেরকৃষি সংবাদ ডেস্কঃ
খবরে জানা যায়, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার রামকান্তপুর ও ধানাইড় ঘাট এলাকায় মধুমতি নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে তিন মাস ধরে মাছ শিকার করা হচ্ছে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর উপজেলা মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় এ ব্যাপারে আলোচনা হলেও প্রশাসন বাঁশের বেড়া অপসারণে এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রামকান্তপুর ঘাট এলাকায় মধুমতি নদীতে প্রায় ১ হাজার ৮০০ ফুট বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে একে পাতন বলা হয়ে থাকে। বেড়ার সঙ্গে আটকানো ছোট ফাঁস ওয়ালা জাল পানির ওপর থেকে শুরু করে মাটি পর্যন্ত মেশানো। নৌযান চলাচলের জন্য বেড়ার মাঝখানে প্রায় ৪০ ফুট পরিমাণ জায়গা খোলা রাখা হয়েছে। সেখানেও অস্থায়ী সুতি জাল দিয়ে মাছ শিকারের জন্য ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছে। সেখানে পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা উপজেলার পবনবেগ গ্রামের উত্তম বিশ্বাস, ভবসিন্দু, দীনবন্ধু ও রামকান্তপুর গ্রামের রেজাউল করিম মাছ ধরছিলেন। তারা জানান, এ ফাঁদে শুধু ইলিশ ধরা পড়ছে। ছোট মাছ ধরা হয় না। রেজাউল করিম এ বেড়ার মালিক। তিনি জানান, এভাবে মাছ ধরেই তাদের জীবন-জীবিকা চলে। তাই উপজেলা প্রশাসন নিষেধ করার পরও তারা মাছ ধরে চলেছেন।

এর প্রায় তিনশ ফুট উত্তরে শালনগর ইউনিয়নের জহুর বিশ্বাস একইভাবে আরেকটি বেড়া দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ করে এই বেড়া দেয়া হয়েছে। এখন তুলে নিলে এ টাকা কিভাবে উঠাবেন নদী পাড়ের বাসিন্দা হাফিজার শিকদার জানান, গত তিন মাস ধরে এ বেড়া দিয়ে মাছ ধরছে। জালে ছোট-বড় সব মাছ ধরা পড়ছে। জাটকা, বেলে মাছের গুঁড়া ও ডিমওয়ালা মাছ সাবাড় করা হচ্ছে। একই দিন জয়পুর ইউনিয়নের ধানাইড় ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, একই ভাবে পুরো নদী জুড়ে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন জানান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধেশ্বর রায় এ বেড়ার মালিক। এখানেও তিন মাস ধরে মাছ ধরা হচ্ছে। প্রতিবছরই সিদ্ধেশ্বর রায় এখানে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করে থাকেন। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুষার কুমার পালের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ বেড়ার কিছু অংশ ভেঙে দেন। কয়েক দিনের মধ্যে পুনরায় সেখানে বেড়া তৈরি করা হয়। সিদ্ধেশ্বর রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সেখানে মাছ ধরায় নিয়োজিত গোবিন্দ বিশ্বাস, সুশান্ত বিশ্বাস ও বিধান রায় জানান, এটা তাদের পেশা, এ করেই তাদের পেট চলে। তারা বর্ষার আগে পর্যন্ত সেখানে মাছ ধরবেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অলোকেশ কুমার ঘোষ জানান, মা ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার সময় মিঠা পানিতে যায়। এরপর সমুদ্রে গিয়ে বড় হয়। এভাবে মাছ ধরা পড়লে ইলিশসহ দেশি প্রজাতির মাছ ধ্বংস হবে। উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, বেশ আগেই বেড়া তুলে নিতে জড়িতদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। এত বড় বেড়া অপসারণে অনেক খরচ তাই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় দেরি হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, তিনটি বেড়া অপসারণের জন্য মৎস্য সমপ্রসারণ অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।যায়যায়দিন।।

কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *