মসুর ডাল চাষ
@ বকুল হাসান খান @
মসুর ডাল ঃ মসুর ডালের জুড়ি মেলা ভার। মাছে ভাতে বাঙালী এখন ডালে ভাতে বাঙালী । আর মসুর ডাল হচ্ছে সকলের প্রিয় ডাল। মসুর ডালে প্রচুর পরিমানে খাদ্যশক্তি ও প্রোটিন রয়েছে।
উপযুক্ত মাটিঃ- সুনিষ্কাশিত বেলে দো-আঁশ মাটি মসুর চাষের জন্য বেশি উপযুক্ত।
জমি তৈরিঃ- জমি ৩-৪টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে ভালভাবে সমান করে তৈরি করতে হবে।
বীজ বপন পদ্ধতিঃ- আমাদের দেশে বেশির ভাগ স্থানে ছিটিয়ে বীজ বপন করে থাকে। তবে সারি করে বীজ বপন করলে ভাল হয়। সারিতে বপন করলে আগাছা দমন, পানি সেচ ও নিষ্কাশণ ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন পরিচর্যা করতে সহজ হয়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দুরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার রাখলে ভাল হয়। প্রতি হেক্টরে ৩০-৩৫ কেজি বীজের দরকার। ছিটিয়ে বীজ বপন করলে বীজের পরিমাণ সামান্য বেশি দিতে হয়।
বীজ বপনের সময়ঃ- কার্তিক মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহ (অক্টোবর মাসের শেষ থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ) পর্যন্ত মসুর বীজ বপন করার উত্তম সময়।
সার ব্যবস্থাপনাঃ- জমিতে হেক্টর প্রতি সারের পরিমাণ ।
সারের নাম হেক্টর প্রতি
১. ইউরিয়া ৪০-৫০ কেজি
২. টিএসপি ৮০-৯০ কেজি
৩. এমপি/পটাশ ৩০-৪০ কেজি
৪. অনুজীব সুপারিশমত।
সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ- সম্পূর্ন সার জমি শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। যে জমিতে পূর্বে মসুর চাষ করা হয় নাই প্রতি কেজি বীজের জন্য ৯০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অনুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
পরিচর্যা: বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানী দ্বারা আগাছা দমন করা যেতে পারে। অতিবৃষ্টি হলে জমিতে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানি বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
পোকা-মাকড় ও রোগ বালাইঃ- মসুরের গোড়া পচাঁ রোগ হলে ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া ভিটাভেক্স-২০০ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম (০.২৫%) মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
মসুরের মরিচা রোগ হলে অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগ প্রতিরোধী বারি মসুর-৩, বারি মসুর-৪ জাতের চাষ করতে হবে। এছাড়া টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৪%) ১২-১৫ দিন পরপর ২-৩ বার ¯েপ্র করতে হবে।
মসুরের স্টেমফাইলাম ব্লাইটরোগ হলে অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া রোভরাল ডব্লিউপি নামক ছত্রাক নাশক (০.২%) ১০দিন পরপর ২-৩ বার ¯েপ্র করতে হবে।
ফসল সংগ্রহঃ- মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য চৈত্র (মার্চ) মাসে ফসল সংগ্রহ করা যায়।
বীজ সংরক্ষণঃ- বীজ ভালভাবে রোদে শুকিয়ে আর্দ্রতার পরিমাণ আনুমানিক ১০%এর নিচে রাখতে হবে। তারপর টিনের পাত্র ও পলিথিনের ব্যাগ বা চটের ব্যাগ অথবা আলকাতরার প্রলেফ দেওয়া মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করতে হবে।