কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু,বাকৃবি থেকেঃ
তথ্য সহায়তায় অ্যাপস ‘চিংড়ি’ ঃ মাছ চাষীদের অর্থনৈতিক সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধা রোগ । মাছে সৃষ্ট কার্পের ছত্রাক ঘটিত পচন রোগ এবং চিংড়ির ভাইরাস ঘটিত সাদা দাগ রোগ মাছ চাষে ব্যাপক বিস্তারের ফলে এর প্যাথোজেন দ্বারা মাছ চাষ মারাত্মক হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে ফলে মাছের বৃদ্ধি ও উৎপাদন মারাত্মক ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। তা ছাড়া, মাছের পুকুরে মুরগির বিষ্ঠা সার হিসেবে ব্যবহারের ফলে মুরগির খাদ্যে ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক মাছের খাদ্য চক্রে অনুপ্রবেশ ঘটে যা পরিশেষে মাছের শরীরে জমা হয়। এই সমস্ত এন্টিবায়োটিক সহজে ধ্বংস হয়না, এগুলি মাছের শরীরে পুঞ্জিভুত হয়ে পরে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং মানুষের স্বাস্থহানি ঘটাতে পারে। এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আর্থ-সামাজিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের দুটি প্রধান রোগ(কার্পের ছত্রাক ঘটিত পচন রোগ এবং চিংড়ির ভাইরাস ঘটিত সাদা দাগ রোগ) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এশিয়ান অঞ্চলের দারিদ্র বিমোচন বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালায় উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ০৭ এপ্রিল ২০১৯ রবিবার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন ভবনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, আমাদের দৈনন্দিন আমিষের ৬০ ভাগ আসে মাছ থেকে। অভ্যন্তরীন মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। আজ আমরা মাছ চাষে স্বয়ংসম্পর্ণ। মাছের বিভিন্ন রোগের কারণে খামারিদের চাষের প্রায় ১৫ভাগ লোকসানের সম্মুখিন হতে হয়। আমাদের দেশের ৯৫ ভাগ মৎস্য চাষী মাছ চাষের জ্ঞান আহরণ না করেই দেখাদেখি মাছ চাষ করছে। মাছ চাষে সুফল পেতে হলে বৈজ্ঞানিকভাবে মাছ চাষ করতে হবে।
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দিন আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ জসিম উদ্দিন খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে বাকৃবির সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ারুর ইসলাম, ভারতের আইসিএআর সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ব্রাকিশওয়াটার অ্যাকুয়াকালচার, চেন্নাই- এর পরিচালক ড. কে.কে বিজয়ান, বাংলাদেশ মাৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পরিচালক নূরুলউল্লাহ এবং বাউরেস এর সহযোগী পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর হোসেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর প্রফেসর ড. এম.এ. সালাম এবং ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের সাউথাস্পটন বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ক্রিস্টোফার হাউটন।
অনুষ্ঠানে কৃষকদের তথ্য সহায়তার জন্য ‘চিংড়ি’ নামক একটি অ্যাপসের উদ্বোধন করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতে মাছ এবং চিংড়ি চাষকে পরিবেশবান্ধব ও ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে গবেষণা করা হয়েছে ।
কর্মশালায় ময়মনসিংহ এবং রাজশাহী অঞ্চলের খামারি এবং মাৎস্যচাষিরা অংশগ্রহণ করেন।