কৃষক গ্রুপের মাঠদিবস
মো. মোশারফ হোসাইন, শেরপুর প্রতিনিধি:
কৃষক গ্রুপের মাঠদিবস ঃ শেরপুরের নকলায় চলতি অর্থ বছরের প্রদর্শনী ও কৃষক মাঠ স্কুলের গ্রুপ কৃষকদের নিয়ে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ধান, গম ও পাটের উন্নত মানের বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলার পাইস্কা এলাকায় এই মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে শেরপুর খামার বাড়ির উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহিত কুমার দে উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নত মানের বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ রিজুয়ানুল বারী, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রোকসানা নাসরিন, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ফকির মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, পাইস্কা ব্লকে কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্তত ৫০ জন কৃষক-কৃষাণী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এ মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন থেকে যে পরিমাণ বীজ পাওয়া যায়, তা কৃষকদের মোট চাহিদার ১৫ থেকে ২০ ভাগ পূরণ করা সম্ভব। তাই কৃষকরা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট জাত বীজ উচ্চ মূল্যে ক্রয় করেন। এতে কৃষকরা একদিকে যেমন আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, অন্যদিকে মনকাড়া বিজ্ঞাপনের দিকে ঝুঁকে বিভিন্ন কোম্পানির নিম্নমানের বীজ বপন করায় মাঝেমধ্যে তাদেরকে লোকসানে গুণতে হয়। তাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহায়তায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নত মানের বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন কৃষক গ্রুপসহ শিক্ষিত আদর্শ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে, তাদের মাধ্যমে উন্নত মানের বীজ উৎপাদন করা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা নিজের উৎপাদিত উন্নত মানের বীজ নিশ্চিন্তে বপন করতে পারছেন। তাতে কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবানের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ক্ষতির আশঙ্কা থেকে চিন্তামুক্ত থাকছেন।
তিনি আরও জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৪ টি কৃষক গ্রুপ রয়েছে। এরমধ্যে বোরো ও আমন মৌসুমের জন্য ১০টি করে মোট ২০টি এবং আউশ মৌসুমের জন্য ৪টি কৃষক গ্রুপ আছে। প্রতিটি গ্রুপে ১৫ জন করে কৃষক-কৃষাণী সদস্য রয়েছে বলে তিনি জানান। শেরপুর খামার বাড়ির উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহিত কুমার দে উপস্থিতিদের জানান, বীজ উৎপাদনকারী কৃষক গ্রুপ বা আদর্শ কৃষক যাচাই বাছাই করে তাদেরকে প্রয়োজনে জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিস থেকে বীজ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এতেকরে কৃষক গ্রুপের সদস্য কৃষক বা আদর্শ কৃষকরা তাদের উৎপাদিত উন্নত মানের বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বাজার জাত করণের সুযোগ পাওয়ার মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে উন্নত মানের বীজ উৎপাদনকারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা গড়ে ওঠাসহ বীজ উৎপাদনকারী ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছে।