মো. মোশারফ হোসেন, শেরপুর প্রতিনিধি:
আগাম বোরো ধান লাগানোঃ শেরপুরের নকলায় আমন আবাদ ঘরে তুলার সাথে সাথে কৃষকরা শুরু করেছিলেন বোরো আবাদের জন্য বীজতলা তৈরীর কাজ। এখন ওইসব বীজ তলার ধানের চারা বোরো ক্ষেতে লাগানোর উপযুক্ত সময় হওয়ায় শীতকে উপেক্ষা করে কৃষকরা শুরু করেছে আগাম বোরো ধান লাগানোর কাজ।
কনকনে শীতের কারনে শ্রমিক সংকট দেখাদিতে পারে মনে করা হলেও, অপেক্ষাকৃত কম জমিতে আগাম বোরো ধান লাগানো শুরু হওয়ায়, এখন পর্যন্ত ধান রোপন শ্রমিকের তেমন সংকট দেখা দেয়নি। বরং ভরা মৌসুমের চেয়ে এখন শ্রমিকের মজুরি অপেক্ষাকৃত কম।
জালালপুরের কৃষক মির্জা জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল ও ভূরদী গ্রামের কৃষক ছাইদুল হক জানান, এখন প্রতি শ্রমিকের মজুরি ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা। আর ভরা মৌসুমে এই শ্রমিকের দৈনিক মজুরি হয় ৫৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা পর্যন্ত।
বোরো ধান রোপনের শ্রমিক আলমাছ আলী, রোকন মিয়া, আলকাছ মিয়া, মিনহাজ আলীসহ অনেকেই জানান, এখন অন্য কোন কাজ না থাকায় তাদের অন্য কোন আয়ের উৎস নেই। সংসার চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই দৈনিক মজুরি কিছু হলেও তারা কাজে আগ্রহী হয়ে শীতকে উপক্ষো করে বোরো ধান লাগানোর কাজ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, চলতি বোরো মৌসুমে নকলা উপজেলায় ১৩ হাজার ২৪৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এতে হাইব্রিড জাতের ৭ হাজার ১১ হেক্টর, উফসী জাত ৬ হাজার ২০৬ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের জন্য ৩০ হেক্টর।
অন্য এক কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ ফজলুল হক মণি জানান, ১৩ হাজার ২৪৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের জন্য কম-বেশি ৮১০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা বীজতলা তৈরী করেছেন। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধানের বীজতলা ৪৩০ হেক্টর জমিতে, উফসী জাতের ধানের বীজতলা ৩৭০ হেক্টর জমিতে এবং স্থানীয় জাতের ধানের বীজতলা তৈরী করা হয়েছে ১০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, চলতি বোরো মৌসুমের জন্য লক্ষমাত্রার ১৩ হাজার ২৪৭ হেক্টর জমি থেকে উৎপাদিত ধান হতে চাল পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৭ হাজার ৬৮৭ মেট্রিকটন। এতে হাইব্রিড প্রতি হেক্টরে ৪.৭৫ মেট্রিকটন করে ৩৩ হাজার ৩০২ মেট্রিকটন, উফসী প্রতি হেক্টরে ৩.৯২ মেট্রিকটন করে ২৪ হাজার ৩২৭ মেট্রিকটন এবং স্থানীয় জাতের ধান হতে চাল পাওয়ার আশা করা হচ্ছে প্রতি হেক্টরে ১.৯৪ মেট্রিকটন করে ৫৮ মেট্রিকটন। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলায় না পড়লে নকলা উপজেলায় উৎপাদিক বোরো ধান দিয়ে উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে বরাবরের ন্যায় অন্যান্য জেলা উপজেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে।