কৃষিবিদ নূরুল হুদা আল মামুনঃ
গাছের বৃদ্ধির ও উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। এর কোন একটির অভাব হলে গাছের বৃদ্ধি ভাল ভাবে হয় না। এমন কি গাছ মারা যেতে পারে। প্রিয় পাঠক, আসুন এ বিষয়ে কিছু তথ্য জানা যাক।
* গাছ ৯০ টিরও বেশী পুষ্টি উপাদান ধারণ করে।
# এর মধ্যে ১৭ টি (পূর্বে ১৬টি+Co ) অত্যাবশ্যক পুষ্টি উপাদান
# উপাদানগুলো হচ্ছে – C, H,O, N, P, K, S, Ca, Mg, Fe, Mn, Zn, Cu, B, Mo, Cl, Co,
# এছাড়াও Si, Na, & Vanadium– কিছু উদ্ভিদের জন্য beneficiary
# C, H, O গাছ-বাতাস ও পানি থেকে পায়
# অন্য উপাদানগুলো মাটি থেকে পায়। এ গুলোকে খনিজ পুষ্টি বলা হয়।
# প্রয়োজনীয় পরিমানের উপর ভিত্তি করে গাছের পুষ্টি উপাদান দুই প্রকারঃ
১) মুখ্য বা macro nutrient- N,P,K,Ca, Mg এবং S
২) গৌন বা micro পুষ্টি উপাদানঃFe, Mn, Zn, Cu, B, Mo, Cl, Co
* C, H,O গাছের গঠনের (শক্ত বস্তু বা dry matter ) ওজনের-৯০-৯৫%
* N, P, K প্রাথমিক পুষ্টি উপাদান (Primary nutrient)
S, Ca, Mg, Secondary পুষ্টি উপাদান ।
গাছ নিজের শরীর গঠন করতে-মাটি থেকে পানি ও পুষ্টি উপাদান, বাতাস থেকে CO2 এবং সূর্যের আলো থেকে শক্তি গ্রহণ করে।উদ্ভিদ পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে-মাটি থেকে, রাসায়নিক বা খনিজ সার, জৈব উৎস, বায়ুমন্ডলের যা biological fixation হয়। atmospheric deposition, সেচ, বন্যা এবং Sedimentation থেকে।
আবহাওয়ার উপাদান ব্যতীত উদ্ভিদ সাধারণত তিন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়
– পোকার মাধ্যমেঃ এতে পোকা আক্রান্তের বৈশিষ্ট
– রোগঃ ছত্রাক ব্যাক্টিরিয়া ও ভাইরাস
– মাটির পুষ্টি জনিত সমস্যা
পুষ্টি উপাদানের অভাব জনিত Common বৈশিষ্ট- গাছ খাট ও ক্ষীনকার হয় । ফুল ফল না হওয়া/দেরীতে হওয়া/বিকৃত হওয়া/ঝড়ে পড়া, স্বাদ ও মানে নিম্ন হওয়া।
N- কাজঃ প্রোটিন, নিউক্লিয়িক এসিড ও ক্লোরোফিল গঠন করে।
লক্ষন-নীচের বয়স্ক পাতা থেকে ক্রমান্বয়ে উপরের পাতা হলুদ বর্ণ ধারন করে। নাইট্রজেনের অভাবে পুরো ফসল সমানভাবে হলুদ হয়।
– পূর্ণ বয়সের আগেই ফুল ধরে।
– ধান গম ও অন্যান্য দানা শস্যে কুশি কম হয়।
P- কাজঃ নিউক্লিয়িক এসিড ও ফসফোলিপিড গঠন করে। energy transfer করে
লক্ষন-গাছ খাট, কুশি কম, পাতা গাঢ় সবুজ বর্ণ ধারণ করে। পাতা ও কান্ডে লালচে বেগুনী রং।
– ফল পাকতে দেরী হয়। শিকড়ের বৃদ্ধি কমে যায়। Nodded কম হয়।
– ফুল ও ফল কম ধরে। বীজ উৎপাদন হ্রাস পায়।
K- কাজঃ enzyme actuate করে। এসমটিক ও আয়নিক নিয়ন্ত্রন
লক্ষন- বয়স্ক পাতার আগা কিনারা ঝলসে বা পুড়ে যাওয়ার মত হয়।
– কান্ড দুর্বল, হেলে পড়ে, রোগ, খরা ও শৈ্ত্য সংবেদনশীল।
– বীজ ও ফল আকারে ছোট হয় ও কুচকে যায়। পাতা, ফুল ফল ঝরে পড়ে।
– সীম জাতীয় গাছের পাতায় সাদা ছোপ ছোপ দাগ।
S- কাজঃ এমাইনো এসিড, বায়োটিন, Vit-B কো-এনজাইম-A গঠন।
লক্ষন- অম্লীয় ও কম জৈব পদার্থ মাটিতে অভাব দেখা দেয়
– কচি পাতা হলদে-সাদা হয়। ধীরে ধীরে পুরাতন পাতায় ।
– ফসল পাকতে দেরী হয়।
Ca- কাজঃ কোষের পর্দা গঠন ও কোষ বিভাজন এ ভূমিকা রাখে।
লক্ষন- নতুন পাতা সাদা হয়ে যায়।
– বাড়ন্ত অংশ (ডগা, বোটা) মরে যায়, কুকড়ে যায়।
Mg- কাজঃ ক্লোরোফিল গঠন। এনজাইমের বিক্রিয়ার ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করে।
লক্ষন- বয়স্ক পাতা হালকা সবুজ বা হলদে রং হয় তবে শিরা গুলো সবুজ থাকে।
– খরার প্রভাবের এর মত পাতা মোড়ানো
– কম PH ও হালকা বুনটের মাটিতে Mg এর অভাব হয়।
Zn- কাজঃ Auxin তৈরী করে dehydrogenage ensyme activate করে Rhibosom এর কাজ নিয়ন্ত্রন।
লক্ষন- কচি পাতার মধ্যশিরা গোড়ার দিকে সাদা হয়ে যায়।
– পুরাতন পাতায় মরিচার মত ছোট ছোট দাগ হয়। পরে পাতা বাদামী বর্ণ ধারণ করে।
– ফসলের অসমান বৃদ্ধি হয়, ফসল দেরীতে পরিপক্ক হয়।
– অধিক অম্ল, চুন যুক্ত মাটি, সারা বছর ভেজা মাটিতে অভাব হয়।
B- কাজঃ কার্বহাইড্রেট মেটাবলিজম, সোটিন সিনথেসিম ও বীজ গঠন ।
লক্ষন- বাড়ন্ত ডগা মারা যায়। পাতার ডগা ফেকাশে সবুজ, ব্রোঞ্চ আভাযুক্ত।
– ফলের আকার বিকৃত হয়, দানা হয় না (চিনাবাদাম)
কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম