-এম এনামুল হক
ডিজি (অবঃ), ডিএই
বর্ষাকালে নিচু জমিতে যেখানে ১ ফুট – ২.৫ ফুট পর্যন্ত পানি জমে থাকে এমন জমি এ পদ্ধতির জন্য উপযোগী।
বৃহত্তর বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও পাবনা জেলায় এ ধরনের উপযোগী জমি অহরহ দেখা যায়।
জোয়ার প্রবন এলাকায় ভরা জোয়ারে কয়েক ঘন্টা নারিকেল বেড ডুবে গেলেও তাতে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা থাকেনা।
এ পদ্ধতিতে নারিকেল ও সাথী ফসল চাষের জন্য বেডের উপরিভাগ ১র্০ ফুট চওড়া এবং নি¤েœর তলার অংশ ১র্২ ফুট চওড়া হবে।
দু’টা বেডের মধ্যভাগে প্রায় র্৩ ফুট গভীর নালা তৈরী করে নিতে হবে। এ নালার উপরের অংশ ১র্০ ফুট এবং তলার অংশ র্৮ ফুট চওড়া হবে।
নালার দু’ধারে বেডের উপরিভাগ পর্যন্ত র্১ ফুট পরিমান ঢালু (Slope) হবে। নারিকেল বেডের উপরিভাগে ১র্০ ফুট চওড়া বিশিষ্ট উভয় পার্শ্বে প্রায় র্৬র্ -র্৮র্ ঢালু (Slope) হবে ।
বেডের উপরিভাগে ২র্০ ফুট দূরত্বে ২.র্৫ ২.র্৫ ২.র্৫ মাপের গর্ত তৈরী করে নিয়ে তাতে ৩০-৪০ কেজি বিভিন্ন জৈব সার ও প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার, ছত্রাক ও কীটনাশক মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে দু’সপ্তাহ পর তৈরী মাদায় নারিকেল চারা রোপন করার উপযোগী হবে।
প্রতি বেডে ২র্০ ফুট দূরত্বে রোপিত নারিকেল চারার মধ্য ভাগে (১র্০ ফুট ব্যবধানে) স্বল্প/মধ্য মেয়াদি বিভিন্ন ফল গাছ রোপন করে অন্তরবর্তীকালীন ফসল উৎপাদন নিয়ে এ পদ্ধতিতে নারিকেল চাষকে লাভজনক স্তরে নেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রতি বেডে নারিকেল চারার মধ্যভাগে যে সব স্বল্প/মধ্য মেয়াদি ফল চাষ করা যাবে তা হলো: বিভিন্ন সাইট্রাস জাতীয় ফল (মাল্টা, কমলা, কাগজী লেবু), ডালিম, পেয়ারা, কুল, পেঁপে, বিলিম্বি, অরবরই, করমচা, বারোমাসী আমড়া, বারোমাসী সজিনা ইত্যাদি।
নালায় যে সব উপযোগী মাছ চাষ করা যাবে তা হলো ঃ তেলাপিয়া, থাই সরপুটি, শিং, মাগুর, কই ইত্যাদি।
নালায় বিভিন্ন ধরনের সব্জী তথা কচু, কলমী, গীমা কলমীসহ, ভাসমান পদ্ধতি অবলম্বনে বিভিন্ন প্রকার সবজী চাষ করা যাবে।
নালার উপরিভাগে মাচা অথবা কাঠি দিয়ে বিভিন্ন লাতানো সব্জী (করলা, সীম, বরবটি, পটল, মেটে আলু, শশা, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, পুঁইশাক ইত্যাদি) আবাদ করা যাবে।
বরিশাল জেলাস্থ রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারে এ মডেলে ০৩-০৮-২০১৬ তারিখে ১৬৮ টা খাটো জাতের (ভিয়েতনামী) নারিকেল চারা রোপন করা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে আরও প্রায় ১৪২ টা চারা রোপন করে প্রায় ৩ একর বিশিষ্ট জমিতে মোট ৩০০ টা নারিকেল চারা রোপন কাজ শেষ করা হবে। আগামী ৩ বছর শেষে এ সব রোপিত নারিকেল গাছ থেকে ভিয়েতনামী খাটো জাতের নারিকেল চারা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
মডেল আকারে নারিকেল বেডের ফাঁকে ও নালায় ফল, সব্জী ও মাছ চাষের স্থাপিত প্রদর্শনী, দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে এটা চাষী ও কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য দেখে শেখা ও সম্প্রসারণের একটা নজির হবে।
কৃষির আরো খবরাখবর জানতে আমাদের পেইজে লাইকদিনঃ facebook.com/krishisongbad.com