সিভাসুতে পথ কুকুরের “ নিউটারিং এন্ড ভ্যাকসিনেশন ” প্রকল্পের কাজ শুরু

নিউটারিং এন্ড ভ্যাকসিনেশন

কৃষি সংবাদ ডেস্কঃ

নিউটারিং এন্ড ভ্যাকসিনেশন ঃ আমাদের দেশে অসংখ্য পথ কুকুর (স্ট্রে ডগ) রয়েছে। এই কুকুর হতে জীবন নাশকারী বিভিন্ন রোগ ছড়ায় যার মধ্যে র‌্যাবিস বা জলাতংক মানব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। বাংলাদেশে র‌্যাবিসের প্রধান বাহক হলো স্ট্রে বা পথ কুকুর। তাই, আমাদের মাঝে কুকুরভীতি কাজ করে। ফলে এক দিকে কুকুরগুলো আমাদের নিষ্ঠুরতার স্বীকার হচ্ছে, অন্যদিকে আমরা থাকছি ভীত। এই ভীতি কাটিয়ে উঠার জন্য প্রয়োজন পথ কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও তাদের কল্যাণ বিশেষত র‌্যাবিস ভাইরাস হতে মুক্তকরণ।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) পথ কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ও জলাতংক দূরীকরণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মুলনীতি হচ্ছে “সিএনভিআর” অর্থাৎ ‘ক্যাপচার’, ‘নিউটার’, ‘ভ্যাকসিন’ এবং ‘রিলিজ’। এর মাধ্যমে পুরুষ ও স্ত্রী কুকুরকে স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ এবং সাথে সাথে জলাতংক রোগের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

উপরোক্ত প্রকল্পটি পরিচালনায় আছেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি ও প্রাণীকল্যাণের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলম। অন্য দিকে সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ তুলি দে-সহ রয়েছেন একদল দক্ষ শল্য চিকিৎসক। এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ রাশেদুল আলম জানান যে, পুরো বিশ্বেই মূলত এশিয়া ও আফ্রিকাতে জলাতংক একটি মরণব্যাধি যা কুকুর হতে মানুষে এবং গবাদি পশুতে ছড়ায়। যার দরুন দেশে ব্যাপক অর্থনীতির ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ইতিমধ্যে প্রকল্পের আওতায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বসবাস করা কুকুরগুলোকে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যাকরণের কাজ শুরু হয়েছে এবং আগামী ফেব্রুয়ারী ২০২০ সাল নাগাদ ক্যাম্পাসের সবগুলো কুকুরের নিউটারিং-এর কাজ সম্পন্ন করা হবে। প্রতি সপ্তাহান্তে কুকুরগুলোকে দক্ষ লোক দ্বারা ধরার পর তাদের শল্য পদ্ধতিতে বন্ধ্যাকরণ ও টিকাদান সম্পন্ন করা হচ্ছে। এর সাথে সাথে শল্য পরবর্তী যতœ ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক ড. আলম তার এই প্রকল্পের যৌক্তিকতা ও ফলাফল সম্বন্ধে বলতে গিয়ে মন্তব্য করেন যে, বর্তমানে চট্টগ্রাম একটি মেগাসিটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পথ কুকুরের অনিয়ন্ত্রিত বংশ বৃদ্ধির কারণে র‌্যাবিসসহ অন্যান্য রোগ ছড়াচ্ছে। এতে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। যা একটি নগরের সাফল্যের অন্তরায়। অপরদিকে, পথ কুকুরের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল নগরের সড়ক ও যান চলাচল ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে যা নগরের সৌন্দর্যকে ম্লান করে দেয়। এছাড়া, আবাসিক এলাকা গুলোতে কুকুরের অযাচিত চলাফেরা ও নিজেদের মধ্যে ঘেঁউ-ঘেঁউ করার ফলে সৃষ্ট শব্দ দূষণের প্রভাবে আবাসিক এলাকায় জীবনমান ব্যাহত হয়।

অতএব, চট্টগ্রামকে একটি সুন্দর ও হেলদি সিটিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে নগরীর পথ কুকুরদের কে এই ‘নিউটারিং এন্ড ভ্যাক্সিনেশন’ কার্যক্রমের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন ড. আলম। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সিটি করপোরেশন ও সিভাসু এ বিষয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে চট্টগ্রামকে আদর্শ নগরী হিসেবে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা সম্ভব। এই নিউটারিং ও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সিভাসুর মত বাংলাদেশের অন্যান্য ভেটেরিনারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রহণ করলে সারা দেশে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পাশাপাশি তাদের কল্যাণ নিশ্চিত হবে এবং জলাতংক নির্মূলে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। #

Advisory Editor

Advisory Editor of http://www.krishisongbad.com/

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *