Site icon

সুুন্দরবনে দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে,অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মৎস্যজীবীদের জীবন

মাছ ধরা বন্ধ

মাছ ধরা বন্ধ

শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ১ লা জুলাই থেকে ৩০ অগষ্ট পর্যন্ত ৬০ দিন ঐতিহ্য সুন্দরবনের সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও প্রজননের জন্য বনবিভাগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে বিকল্প কর্মসংস্থান না করে মাছ ধরা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে জেলেদের জীবন জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বন বিভাগ ও জেলেদের সূত্রে জানা যায়,পূর্ব সুন্দরবনে দুই লক্ষ ৩৪ হাজার একশত ৪৭ বর্গ কিলোমিটার বনভূমির মধ্যে দুইশতাধিক নদী ও খাল রয়েছে। এর মধ্যে অভয়ারান্য এলাকাসহ ১৮টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। মৎস্য প্রজননের জন্য জুলাই ও আগস্ট দুই মাস সকল খালে মৎস্য আহরন বন্ধ থাকে।


এদিকে করোনা পরিস্থিতির কারনে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে তার উপর দুই মাস মাছধরা বন্ধ থাকলে জেলেদের জীবন-জীবিকা আরো কঠিন হয়ে পড়বে বলে জেলেরা জানিয়েছেন। প্রতি মাসের অমাবশ্যা ও পূর্নিমার সময় মাছ ধরার মৌসুমে প্রায় দুই হাজার জেলে মৎস্য আহরন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ মৎস্য আহরনের উপর প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত।
শরনখোলা মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুব হোসেন সেলু ও জালাল মোল্লা জানান,করোনার কারনে সুন্দরবনের জেলেদের মাছ ধরা ছাড়া এ বছর আর কোন কাজ নাই। এ বছর দুই মাস মাছধরা বন্ধ থাকলে অধিকাংশ পরিবারের না খেয়ে থাকতে হবে। এ বছর যাতে মাছধরা বন্ধ না থাকার দাবি জানান। শরনখোলার জাহিদুল,শাহিন,আরাফাত,হাবিব হাওলাদার ও জামাল হাওলাদার জানান, আমরা প্রায় ত্রিশ বছর ধরে সুন্দরবনে মাছ আহরন করে জীবিকা নির্বাহ করি। এ বছর করোনার কারনে মাছ ধরা ছাড়া আমাদের আয়ের আর কোন রাস্তা নাই। তার পরে যদি আরো দুই মাস মাছধরা বন্ধ থাকে তাহলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। তারা বলেন সরকার আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয় তাহলে আমরা এই দুই মাস মাছধরা বন্ধ রাখবো।


এ ব্যাপারে সুন্দরবনের শরনখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, প্রতি বছরের জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের মৌসুম। এ সময় সাধারন সকল মাছে ডিম থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ১ লা জুলাই থেকে ৩০ অগষ্ট পর্যন্ত ৬০ দিন সুন্দরবনের সকল প্রকার মাছধরা বন্ধ থাকবে। সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেন, মৎস্য সম্পদ রক্ষায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও একই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। তবে করোনাকালীন সময়ে জেলেদের বিষযটি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।

Exit mobile version