মোস্তাফিজুর রহমান, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৭
যথাযোগ্য মর্যাদা ও দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্যদিয়ে রবিবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৭ উদযাপিত হয়েছে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল ৮.১৫ টায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীেেদর নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের র্যালী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। সকাল সাড়ে ৮.৩০ টায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। ক্রমান্বয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শিক্ষক সমিতি, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম, সাদা দল, প্রগতিশীল কর্মকর্তা পরিষদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, হলসমূহ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (হাবিপ্রবি শাখা), হাবিপ্রবি হলসমূহের ছাত্রলীগ শাখা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (হাবিপ্রবি শাখা), প্রগতিশীল কর্মচারী পরিষদ, হাবিপ্রবি স্কুলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের ২৬ মার্চের বাণী পাঠ ও বিতরণ করা হয়। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৭ উপলক্ষে ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয় সকাল ৯.১০ টায় দেয়ালিকা উন্মোচন করেন।
এর পর দিবসের তাৎপর্যের উপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালক প্রফেসর ডা. এস.এম হারুন-উর রশীদ-এর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।
উক্ত আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ডীন প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশীদ, কর্মকর্তাদের পক্ষে কৃষিবিদ মো. ফেরদৌস আলম, আ.ন.ম ইমতিয়াজ হোসেন, হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা তারেক চৌধুরী, নাজমুল হুসাইন প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. সাইফুদ্দিন দরুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম বলেন, বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা অর্জনে ১৯৭১ সনের মার্চ এক মহাজাগরণের মাস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বায়ত্বশাসন ও স্বাধীকার আন্দোলন এ মাসে স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং আমরা দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
তিনি বলেন, অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা আর দীর্ঘ সংগ্রামের পর দেশ এখন গণতান্ত্রিক ধারায় চলছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত আলোকিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে জাতি আজ একতাবদ্ধ। তাঁর নেতৃত্বে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিু মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত একটি সমৃদ্ধ জাতি গড়ার পথে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকলকে নিজ নিজ অর্পিত দায়িত্ব আন্তরিক ও নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে তিনি সকলের কাছে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
পরে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এরপরই শিক্ষক বনাম শিক্ষক, কর্মকর্তা বনাম কর্মচারী, ছাত্র বনাম ছাত্রের মধ্যে প্রীতি ভলিবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষিকা বনাম শিক্ষিকা, ছাত্রী বনাম ছাত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় মিউজিক্যাল চেয়ার। শিশুদের জন্য বিস্কুট দৌড় এবং সকলের জন্য যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। খেলাধুলা শেষে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। বাদ যোহর শহীদদের বিদেহী আতœার মাগফেরাত কমনা করে কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।