হাবিপ্রবিতে দেশের প্রথম বিশেষায়িত ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু

ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক

ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক

আব্দুল মান্নান,হাবিপ্রবি।।

ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক ঃ দেশের প্রথম বিশেষায়িত ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এই ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত ভেটেরিনারি ক্লিনিকের শুভ উদ্বোধন করেন । এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক (বীর মুক্তিযোদ্ধা), কৃষি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজার রহমান, জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদার, ভেটেরিনারি অনুষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডীন অধ্যাপক ড. তাহেরা ইয়াসমিন, হিসাব শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শাহাদাৎ হোসেন খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো.খালেদ হোসেন, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ, পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মফিজ উল ইসলাম, দিনাজপুর জেলার প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহিনুর আলম,ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ, ভেটেরিনারি অনুষদীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয় খামারীরা।

উদ্বোধনের পর ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিকের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার রামডুবির বীরগা গ্রামের ফুলবন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খামারী আনিছুর রহমান গরুর ঝংকা (আপওয়ার্ড প্যাটেলার ফিক্সেশন) রোগের অপারেশন করাসহ মোট ৩টি গুরুর বিভিন্ন রোগের অপারেশন করা হয়। অপারেশনে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়েররেজিস্ট্রার ও মেডিসিন,সার্জারি এন্ড অবস্টেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক । এ সময় তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন অধ্যাপক ডা.মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা.মো.তহিদার রহমান ও প্রভাষক ডা.মো.ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।

অপারেশন শেষে অনুভুতি প্রকাশ করে গরুর খামারী আনিছুর রহমান বলেন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্যাররা যে ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিক নিয়ে আমাদের এখানে এসেছে এই জন্য আমরা ধন্য। এত বড় গরুকে সহজে আমরা ক্লিনিকে নিয়ে যেতে পেতাম না । উপায় না পেয়ে হয়তো রোগাক্রান্ত এই গরুকে অত্যন্ত কম মূল্যে কসাইদের কাছে বিক্রি করে দিতে হতো। এমন মহৎ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি মাননীয় ভিসি স্যার এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বাড়ি এসে  বিনা মূল্যে এ ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে আমরা এটা স্বপ্নেও ভাবিনি ।  কিন্তু  আজ হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে তা বাস্তবে চোখে দেখলাম । অপারেশনের পর আমার গরুটি সুস্থ রয়েছে এবং আগের চেয়ে খুব ভালোভাবে হাঁটাচলা করতে পারছে । আমি মনে করি, এই ভেটেরিনারি ক্লিনিকের মাধ্যমে আমাদের দিনাজপুরের খামারীরা অনেক বেশি উপকৃত হবে।

ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিকের এর বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমি বেশ কিছু উদ্যোগ হাতে নিয়েছিলাম তার মধ্যে ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিক অন্যতম ছিল। বিশেষায়িত ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিক আমাদের দেশে একটি নতুন ধারণা। সর্ব প্রথম আমরাই এটি করেছি। মানুষ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু পশু পাখির জন্য এ ধরনের কোন ব্যবস্থা নেই। সেই চিন্তা থেকেই এ ভ্রাম্যমান ক্লিনিকের ব্যবস্থা করা। এই ক্লিনিকে সার্জারির ব্যবস্থাসহ উন্নত সেবা প্রদানের সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এটি কৃষকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সেবা প্রদান করবে। এই জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা সব সময় সাথে থাকবেন । সেবা প্রদানের জন্য কোন বিনিময় নেয়া হবে না । তবে ওষুধ পত্রসহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় খামারীদের গ্রহণ করতে হবে।

উপাচার্য আরও বলেন, উদ্বোধনের পর পরই আপনারা আজকে এর কার্যক্রম স্বচক্ষে দেখতে পেলেন। ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিকের দ্বারা শুধু দিনাজপুরবাসীই নয় অত্র উত্তরাঞ্চলের কৃষক ও খারারীরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন বলে আমি আশা করছি। ভ্রাম্যমান ক্লিনিক ছাড়াও কৃষকদের সেবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষক সেবা কেন্দ্র, মৎস্য হ্যাচারী, ডেইরি ও পোল্ট্রি ফার্ম করা হয়েছে মুজিব বর্ষের শুরুতেই। কৃষক সেবা কেন্দ্র এ অঞ্চলের কৃষকদের জন্য প্রশিক্ষণসহ তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে কৃষকেরা সেবা নিতে আমাদের এখানে আসছে। আমি নিজেও কয়েকজন কৃষকের ক্ষতিগ্রস্থ ফসলি জমি পরিদর্শন করেছি এবং তাদের বিভিন্ন সমাধান দেয়ায় চেষ্টা করেছি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা,গবেষণা,কমিউনিকেশন(স্থানীয় মানুষদের সাথে) এবং ডেপলোভমেন্ট এই চারটি ভিত্তিতে কাজ করে যাওয়া দরকার বলে আমি মনে করি।  

Advisory Editor

Advisory Editor of http://www.krishisongbad.com/

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *